মনোরম স্থানে সপরিবারে ভ্রমণ ও আনন্দ উপভোগ। সম্পত্তি সংরক্ষণে সচেষ্ট না হলে পরে ঝামেলায় পড়তে ... বিশদ
শীতের সময়ে সুবর্ণরেখা নদী তীরবর্তী এলাকায় প্রচুর সব্জি চাষ হয়। জঙ্গলে পাতা ঝরে যাওয়ায় খাদ্যের অভাবে হাতির দল সেই সুস্বাদু সব্জির টানে নদী পেরিয়ে চলে আসে দাঁতন, কেশিয়াড়ি ইত্যাদি এলাকায়। প্রতিবছর ঝাড়খণ্ডের দলমা এলাকা থেকে শতাধিক হাতি চলে আসে খড়্গপুর ডিভিশনের সুবর্ণরেখা নদী তীরবর্তী নয়াগ্রামের জঙ্গলে। তারপর বেশ কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিচরণ করে। এক একটি দলে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ৪০টির বেশি হাতি থাকে। বেশিরভাগ হাতি অবশ্য প্রতিবছর ওড়িশা চলে যায়। বর্ষার সময় এই হাতিগুলি একত্রিত হয়ে ফের ঝাড়খণ্ডের দলমাতে ফিরে যায়। তবে দলের কিছু হাতি এইসব এলাকাতে থেকে গিয়ে রেসিডেনশিয়াল হাতিতে পরিণত হয়।
গতমাসে এই রেসিডেনশিয়াল হাতির দলটি কেশিয়াড়ির কুলবনি, হাতিগেড়িয়া, নছিপুরে অবস্থান করছিল। হাতি দেখতে অতি উৎসাহী মানুষের ভিড় বাড়ে। হাতিগেড়িয়ার জঙ্গলে হাতির হামলায় প্রাণ হারায় ১৪ বছরের এক কিশোর। বনদপ্তরের পক্ষ থেকে সেই হাতিগুলিকে তখন ফেরত পাঠানো হয় কলাইকুন্ডার জঙ্গলে। হাতির দলটি ফের নদী পেরিয়ে দাঁতনের বড়া, মহেশপুর,পলশিয়া, মালপাড়া এলাকায় ঢুকে পড়ে। গত শনিবার গভীর রাতে ওই হাতির দলটি দাঁতনের মালপাড়া মোয়ারুই এলাকায় ঢুকে সব্জি খেতে হামলা চালায়। বনদপ্তর ঘটনাস্থলে আসার আগেই অতি উৎসাহী মানুষের ভিড়ে পথ হারিয়ে গ্রামের মাঝে ঢুকে পড়ে হাতির দলটি। সচেতনতার অভাবে হাতির কাছে চলে গিয়ে হাতির হামলায় প্রাণ হারান ৭৩ বছরের এক বৃদ্ধ। আহত হন ওই এলাকার এক পঞ্চায়েত সদস্য। বনদপ্তরের পক্ষ থেকে বারবার গ্রামবাসীদের এবিষয়ে সতর্ক করা হলেও তাতে কর্ণপাত করছেন না গ্রামবাসীরা। আর তার ফলে ঘটছে এই দুর্ঘটনা বলে দাবি বনদপ্তরের। খড়্গপুর ডিভিশনের ডিএফও মনীশ যাদব বলেন, শীতের সময়ে নদী তীরবর্তী এলাকাগুলিতে সহজে সুস্বাদু সব্জি পাওয়া যায় বলে হাতির দল ওইসব এলাকায় ভিড় জমায়। আর সেই সময়ে অতি উৎসাহী মানুষজন সচেতনতার অভাবে হাতির কাছে চলে গিয়ে তাদেরকে উত্যক্ত করতে থাকেন। আর তার ফলে ঘটছে দুর্ঘটনা। বনদপ্তরের পক্ষ থেকে বারবার মাইকিং করে লিফলেট ছড়িয়ে সচেতন করা হচ্ছে। আমরা মাইকিং ও লিফলেট ছড়ানোর পাশাপাশি সম্প্রতি এই উপদ্রুত এলাকাগুলিতে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে বেশি করে সচেতনতার কাজ শুরু করছি। কেশিয়াড়ি দাঁতন সহ বিভিন্ন এলাকায় বনদপ্তরের পক্ষ থেকে সেমিনারেরও আয়োজন করা হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে এই বিষয়ে প্রচারের আয়োজন করা হচ্ছে।-নিজস্ব চিত্র