মনোরম স্থানে সপরিবারে ভ্রমণ ও আনন্দ উপভোগ। সম্পত্তি সংরক্ষণে সচেষ্ট না হলে পরে ঝামেলায় পড়তে ... বিশদ
কয়েকদিন আগেই ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম এক টাকায় নেমে গিয়েছিল। অনেকেই কপি গোরুকে খাইয়ে দিচ্ছিলেন। সরকারিভাবে ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। এখন পাইকারি বাজারে কপি ৪-৬টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু কয়েকদিন ধরে বেগুনের দাম আচমকা কমে গিয়েছে। বেগুন কয়েকদিন আগে পাইকারি বাজারগুলিতে ১৬-২০টাকা কেজি ছিল। খুচরো বাজারে ৪০-৫০টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। সেই বেগুনের দাম এখন নেমে গিয়েছে ৪-৫টাকা প্রতি কেজিতে। তাও কেনার লোক নেই। এমনকী, গাজর ১২-১৫টাকা, মটরশুঁটি ২৫-২৬টাকা। পূর্বস্থলীর কালেখাঁতলার আড়তগুলিতে বেগুনের দর নেমে যাওয়ায় চাষিদের মাথায় হাত।
চাষিরা জানান, সার ও কীটনাশকের দাম বেড়েছে। সেই তুলনায় সব্জির দাম না পেলে আগামী দিনে সংসার কীভাবে চলবে? মাজিদা এলাকার বাসিন্দা তপন দাস, নিমাই সাধু বলেন, জোগান বেড়ে যাওয়ায় সব্জির দাম কমেছে। কেনার লোক নেই। আড়ত থেকে সব্জি না বিক্রি হওয়ায় ফিরে আসতে হচ্ছে আমাদের। প্রশাসন আমাদের দিকে নজর দিক। পূর্বস্থলীতে হিমঘর না থাকায় খুব সমস্যা হচ্ছে। অন্তত সেখানে সব্জি মজুত করতে পারতাম। কালেখাঁতলা এলাকার আড়তদার অপূর্ব দাস বলেন, বেগুনের দাম চার-পাঁচ টাকায় নেমে এসেছে। বিভিন্ন জেলার পাইকারি ব্যবসায়ীরা এখানে সব্জি কিনতে আসছেন না। তাই আমরাও চাষিদের কাছ থেকে কিনে মজুত করে কী করব? চাষিরা আসছেন। চোখের জল ফেলছেন। এটা আমাদেরও দেখতে হচ্ছে। পারুলিয়ার আড়তদার মদন সাহা বলেন, বাজারে এভাবে ধস নামবে ভাবতে পারিনি। শীতের মরশুমের শুরুতে একটু দাম ছিল। এখন দাম কমে গিয়েছে।
পূর্বস্থলী-২ ব্লককে পূর্ব বর্ধমান জেলার সব্জি ভাণ্ডার বলা হয়। বিঘার পর বিঘা জমিতে সারা বছরই সব্জি চাষ করেন চাষিরা। এলাকায় পাঁচটি বড় পাইকারি সব্জি আড়ত আছে। কালেখাঁতলায় সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার রয়েছে। এছাড়া পারুলিয়া, ফলেয়া, জামালপুর মোড়, বিশ্বরম্ভাতেও পাইকারি সব্জি বাজার রয়েছে। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার সব্জি বিক্রি হয় এখানকার বাজারগুলি থেকে। দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন এলাকার সব্জি ব্যবসায়ীরা পূর্বস্থলীর আড়ত থেকে সব্জি সংগ্রহ করে থাকেন।
প্রতিদিন ভোর হতেই বিভিন্ন এলাকার চাষিরা ভ্যান, সাইকেলে করে পূর্বস্থলীর বাজারগুলিতে আনাজ নিয়ে আসেন। চাষিদের থেকে তা কিনে নেন আড়তদাররা। ভিনরাজ্য সহ বিভিন্ন এলাকার সব্জি ব্যবসায়ীরা এখানে আসেন। এবার মরশুমের শুরুতে দফায় দফায় বৃষ্টিতে পূর্বস্থলীর বিশ্বরম্ভা সহ বিভিন্ন এলাকার ফুলকপির জমি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তবে তারপর আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলন ভালো হচ্ছে। কিন্তু দাম নেমে যাওয়ায় চাষের খরচ কীভাবে উঠবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা।