বিমা প্রভূতক্ষেত্র থেকে অর্থাগম যোগ। গৃহ সংস্কার বা ক্রয়ের প্রয়োজনীয় অর্থ পেয়ে যেতে পারেন। শরীরের ... বিশদ
পুরুলিয়া-২ ব্লকের বেলমা পঞ্চায়েতের মালথোড় হাইস্কুল থেকে কাশিট্যাড় গ্রাম হয়ে বড়াসিনি পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এই রাস্তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ ছিল গ্রামবাসীদের। এনিয়ে তাঁরা ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’তে অভিযোগ জানান। তারপর রাস্তা নির্মাণের অনুমোদন মেলে। রাস্তা নির্মাণের জন্য বরাদ্দ হয় প্রায় দু’কোটি টাকা। রাস্তা নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয় পুরুলিয়া জেলা পরিষদকে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে শুরু হয় রাস্তা নির্মাণের কাজ। লোকসভা নির্বাচনের আগেই নির্মাণ কাজ শেষ হয়। কিন্তু, নবনির্মিত রাস্তার এখন এমনই অবস্থা যে রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। গাঁয়ের মানুষ মাঠেঘাটে যান খালিপায়েই। চলতে গেলে পায়ে লাগে বড় বড় পাথর। বাসিন্দারা ক্ষোভ উগরে দেন নেতাদের উপর!
মাঠ থেকে গোরু চড়িয়ে খালি পায়েই বাড়ি ফিরছিলেন মালথরের বাসিন্দা কৃষ্ণপদ মাহাত। রাগে গজগজ করতে করতে বলছিলেন, ভেবেছিলাম নতুন রাস্তা হয়ে আমাদের সুরাহা হল। কিন্তু, এখন মনে হচ্ছে এর থেকে বরং মাটির রাস্তাই ভালো ছিল। এমন রাস্তা করেছে যে চলাচলই করা যায় না।
মালথোড় স্কুলের কাছে রাস্তার ধারে ধান শুকাচ্ছিলেন গ্রামের গৃহবধূ রম্ভাবতী দেবী। তিনি বলছিলেন, গত বছর মাঘ মাসে রাস্তার কাজ শুরু হয়েছিল। বর্ষার সময় রাস্তার সব সিমেন্ট ধুয়ে যায়। তারপর থেকেই রাস্তা থেকে পাথর উঠতে শুরু করে। আগামী বর্ষায় রাস্তাটা থাকলে হয়!
সাইকেলে করে চেরাই কাঠ নিয়ে যেতে যেতে মালথোরের বাসিন্দা শতদল মাহাতর ক্ষোভ, রাস্তা তৈরির টাকার একাংশ যদি নেতাদের পকেটে ঢুকে যায়, তাহলে তো এরকমই রাস্তাই হবে!
ওই এলাকার বাসিন্দা তথা বিজেপির ব্লক কনভেনর দিবাকর মাহাত বলেন, অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তার কাজ হয়েছে। সেই কারণেই রাস্তার এমন অবস্থা। রাস্তা থেকে সব পাথর উঠে যাচ্ছে। বিরোধীদের অভিযোগ, কয়েকজন জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় কয়েকজন নেতা মিলে রাস্তা থেকে কাটমানি খেয়েছে। তাই রাস্তার এই অবস্থা।
বেলমা পঞ্চায়েতের প্রধান লছমি রজক এর দায় অস্বীকার করে বলেন, রাস্তার কাজ জেলা পরিষদ করেছে। পঞ্চায়েত কিছু করেনি। আমরা কাজ তদারকির সুযোগ পাইনি। যে যেমন পেরেছে কাজ করেছে। সিমেন্ট ঠিক মতো দেয়নি। তাই রাস্তার এই অবস্থা।
জেলা পরিষদের সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাত বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিম্নমানের কাজ কখনই বরদাস্ত করা হবে না।
রাস্তার কাজের সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার পিয়ার আলি আনসারি বলেন, যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা মিথ্যা। কোনও নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরি হয়নি। রাস্তার কাজে যে ইঞ্জিনিয়াররা সন্তুষ্ট হয়েছিলেন, তার সার্টিফিকেটও আছে। আসলে জল জীবন মিশনের কাজ শুরু হয়। ভারী গাড়ি যাতায়াতের ফলে রাস্তা খারাপ হয়েছে। বিষয়টি আমি জেলা পরিষদে লিখিত জানিয়েছি।