পারিবারিক সম্পত্তি ভাগ-বাটোয়ারার প্রচেষ্টায় সাফল্য পাবেন। ব্যবসায় লগ্নি বৃদ্ধির সম্ভাবনা । শরীর একপ্রকার থাকবে। ... বিশদ
গো-বেচারা ছেলে। মাঠে কাজ করে। গ্রামের সবার সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক। সাদামাটা জীবন-যাপন। সেই সাজিবুল ইসলাম না কি জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত! ভাবলেই শিউরে উঠছেন নওদার দুর্লভপুরের বাসিন্দারা। এখানেই শেষ নয়, সোমবারও দুর্লভপুরের পড়শি গ্রাম মাঝপাড়ার বাসিন্দা মুস্তাকিন শেখ ওরফে ঝণ্টু নামে এক যুবককেও আটক করা হয়েছে। রাত পর্যন্ত অবশ্য গ্রেপ্তারের খবর নেই। একের পর এক জঙ্গি ও জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তারের তালিকা দীর্ঘ হওয়ায় আতঙ্কে কাঁপছে গোটা নওদা।
রবিবার গভীর রাতে বেঙ্গল এসটিএফ অভিযান চালিয়ে নওদা থেকে গ্রেপ্তার করে সাজিবুলকে। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের জঙ্গি শাদ রবি ওরফে সাব শেখের পিসতুতো ভাই সে। শাদের সঙ্গে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় তার যাতায়াত ছিল বলেই জেনেছেন গোয়েন্দারা। তাঁদের সন্দেহ, এবিটি জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগ রয়েছে এই সাজিবুলের। বেঙ্গল এসটিএফ তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে।
মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, বেঙ্গল এসটিএফের তরফে রবিবার রাতে দুর্লভপুরে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে ২৪ বছর বয়সি এক যুবককে তারা পাকড়াও করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। জঙ্গি-যোগে সাজিবুল ধরা পড়তেই তাজ্জব দুর্লভপুরের সাধারণ মানুষ। এদিন দুপুরে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলছিলেন, ‘সাজিবুল এলাকায় সাধারণ বাড়ির ভালো ছেলে বলেই পরিচিত। মাঠে চাষবাস করে। ওর মধ্যে খারাপ কোনও আচরণ আমাদের নজরে আসেনি। কিন্তু ও যে জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত, তা যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না। এলাকার ছেলেদের এভাবে জঙ্গিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনায় আমরা খুবই আতঙ্কিত। কার সঙ্গে যে কাদের যোগ, বুঝে উঠতে পারছি না। হাতেগোনা কয়েকজনের জন্য গোটা গ্রামের বদনাম হচ্ছে।’
সাজিবুলের মাও বলছিলেন, ‘আমার ছেলে অত্যন্ত সাধাসিধে। ও খেতমজুরের কাজ করত। ওর উপার্জনে আমাদের সংসার চলে। শাদ রবি মাঝেমধ্যে এসে আমাকে দেখে যেত। আমার ছেলের সঙ্গে ওর তো খুব একটা যোগাযোগ ছিল না। গত রাতে ১৫-২০টি গাড়িতে পুলিস এসে বাড়ির দরজা ভাঙা শুরু করে দেয়। তারপর ওকে ধরে নিয়ে চলে যায়। কী কারণে গ্রেপ্তার করেছে, সে ব্যাপারে আমাদেরকে কিছুই জানানো হয়নি। আমি আমার ছেলের মুক্তি চাই।’
কেরল থেকে ধৃত এবিটি জঙ্গি শাদ রবি এবিটি প্রধান জসিমুদ্দিন রহমানির অত্যন্ত বিশ্বস্ত ছিল। এখানে এসেই সে স্লিপার সেল তৈরির কাজে মন দিয়েছিল বলে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন। শাদ মুর্শিদাবাদে ঢুকে নওদার দুর্লভপুরের দক্ষিণপাড়াতে এক প্রাক্তন তৃণমূল পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যার আত্মীয়ের বাড়িতে থাকত। সে সময় সাজিবুলের সঙ্গে তার সখ্য হয়। সাজিবুলকে নিয়ে বিভিন্ন স্লিপার সেল তৈরির কাজে লেগে পড়ে শাদ। মনে করা হচ্ছে, সাজিবুলের সহযোগিতায় ভোটার তালিকায় নাম তুলেছিল শাদ। দুর্লভপুর এলাকায় সাজিবুল ও শাদের ভোটার তালিকায় ঠিকানা একই। ভোটার লিস্টে সেখানে শাদের নাম মহম্মদ সাব শেখ। তারপর হরিহরপাড়ায় ভোটার কার্ডটি স্থানান্তরিত করে সে। হরিহরপাড়ায় আব্বাস আলি যে খারিজি মাদ্রাসা খুলেছিল, সেখানেও যাতায়াত ছিল শাদের। সাজিবুল ওই মাদ্রাসায় গিয়ে জেহাদি প্রশিক্ষণ নিত কিনা, তা খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দা আধিকারিকরা।