পত্নীর স্বাস্থ্যহানিতে চিন্তা বৃদ্ধি। পারিবারিক ক্ষেত্রে আত্মীয়দের সঙ্গে সম্পর্কে শীতলতা। কাজকর্মে উন্নতি ও আয় বৃদ্ধি। ... বিশদ
পুলিস জানিয়েছে, মৃতার নাম অষ্টমী বাউরি (৩০)। খুনের অভিযোগে তাঁর স্বামী মানস বাউরিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্ত্রীকে হত্যা করে মানস বাড়িতেই ছিল। খবর পেয়ে রঘুনাথপুর মহকুমার পুলিস আধিকারিক রোহেদ শেখ সহ আদ্রা থানার পুলিস গ্রামে যায়। মানসকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মানসের পড়শি গ্রাম সাবিরডাঙার মেয়ে অষ্টমী। বরো বছর আগে তাঁকে ভালোবেসে বিয়ে করে মানস। সংসারে অভাব থাকলেও শান্তিতেই বসবাস করছিলেন দম্পতি। মানস দিন মজুর।। অষ্টমী সম্পূর্ণ গৃহবধূ। বর্তমানে দু’জনের তিনটি নাবালক পুত্রসন্তান। মানসের বউদি সুনিতা বাউরি বলছিলেন, ‘এদিন সকালে মানস কাজ সেরে বাড়িতে আসে। অষ্টমীকে বাড়িতে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করে। তারপর সে দেখতে পায় বাড়ির পাশে একটি জায়গায় কারও সঙ্গে ফোনে কথা বলছে স্ত্রী। তা দেখেই খুন চেপে যায় মাথায়। কারণ, স্ত্রীকে ফোন কিনে দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না মানসের। অষ্টমীর কাছে সে জানতে চায়, কোথায় ফোন পেয়েছে এবং কার সঙ্গে কথা বলছে। স্বামীর কথার কোনও জবাব না দিয়ে অষ্টমী ফোনটি দূরে ছুঁড়ে দেয়। মানস ফোনটি কুড়িয়ে আনলে পরে সেটিকে আছাড় দিয়ে ভেঙে দেয়। তা নিয়ে ওদের দু’জনের মধ্যে তীব্র বচসা শুরু হয়। ঝামেলা হচ্ছে দেখে আমরা বাইরে আসি। দু’জনকে শান্ত করি। সেই সঙ্গে আমরা ওদের প্রস্তাব দিই, একসঙ্গে থাকতে না চাইলে গ্রামের লোক, পঞ্চায়েত ডেকে ডিভোর্স করিয়ে দেওয়া হবে। সেই মতো পঞ্চায়েতকেও বিষয়টি জানানো হয়। তিনি এদিন রাতে বাড়িতে আসবে বলে জানান। তারপর আমরা যে যাঁর মতো মাঠে ধানের কাজ করতে চলে যাই। মানসের ছোট ছেলেটি বাড়িতে ছিল। বাকি দুটি ছেলেও স্কুলে চলে গিয়েছিল। দুপুরে বাড়িতে এসে দেখি অষ্টমী রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়িতে পড়ে রয়েছে। আর মানস একটি রক্তাক্ত কুড়ুল নিয়ে ঘোরাঘুরি করছে। চিৎকার করলে গ্রামের লোক ছুটে আসেন। তাঁরাই পুলিসে খবর দেন।’
মানসের মা বলেন, ‘আমার ছেলে বউমাকে কোন ফোন দেয়নি। তারপরও বউমা কোথা থেকে ফোন পেয়েছিল এবং কার সঙ্গে কথা বলত, সেই নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। তাই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। কিন্তু এত বড় ঘটনা ঘটে যাবে বুঝতে পারিনি।’ মৃতার বোন যমুনা বাউরির কথায়, ‘জামাইবাবু প্রায় প্রতিদিনই নেশাগ্রস্ত হয়ে বাড়িতে আসত। দিদিকে মারধর করত। জামাইবাবুর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে দিদি অনেকবার আমাদের বাড়ি চলে এসেছিল। কিন্তু দিদিকে যে এভাবে খুন করবে, ভাবতে পারছি না। আমরা ওর ফাঁসি চাই।’
পুলিসের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক জেরাতে মানস খুনের ঘটনাটি স্বীকার করেছে। রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে বাড়িতে থাকা কুড়ুল দিয়ে প্রথমে মাথায় তারপর গলায় কোপ বসায় বলে জানিয়েছে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে দেহের বিভিন্ন অংশেও কোপ মারে। তদন্তকারী এক অফিসার জানিয়েছেন, ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খুনে ব্যবহৃত কুড়ুলটি উদ্ধার করা হয়েছে। মোবাইলটিও ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া গিয়েছে।’