ব্যবসা ও পেশায় ধনাগম ভাগ্য আজ অতি উত্তম। বেকারদের কর্ম লাভ হতে পারে। শরীর স্বাস্থ্য ... বিশদ
মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অমিতকুমার দাঁ বলেন, জেলার বহু ব্লক থেকেই যে সমস্ত প্রসূতি ভর্তি হচ্ছে তাদের মধ্যে অনেকের বয়স ১৮ বছরের নীচে। অধিকাংশ সময় অপুষ্ট শিশুর জন্ম দিচ্ছে নাবালিকা মায়েরা। অল্প বয়সে মা হলে, এতে মায়ের এবং শিশুর জীবনহানির আশঙ্কা থাকে। জেলাজুড়ে আরও সচেতনতা দরকার। মানুষকে বুঝতে হবে, অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে দিলে হবে না। মেডিক্যালে এমন এমন প্রসূতি আসে যে, ২৫ বছরের মধ্যেই পাঁচটি সন্তানের মা হয়ে গিয়েছেন। আমরাই তাঁদের স্বাস্থ্যের অবস্থা দেখলে অবাক হয়ে যাই।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদ জেলার ১১টি ব্লকের মোট প্রসূতির ৩০ শতাংশের বেশি নাবালিকা। চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে স্বাস্থ্যদপ্তরের রিপোর্টে। সামগ্রিকভাবে গত বছরের তুলনায় এইসব ব্লকে নাবালিকা প্রসূতির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সন্দীপ সান্যাল বলেন, প্রায় প্রতিটি ব্লকেই প্রসূতির মধ্যে নাবালিকাদের এই হার রয়েছে।
জেলার গ্রামীণ এলাকার স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের মতে, বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে না পারলে নাবালিকা প্রসূতির সংখ্যা কোনওভাবেই কমানো যাবে না। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি প্রশাসনিক কোনও গাফিলতি হচ্ছে? কারণ, নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করতে জেলার পুলিস-প্রশাসনের একাধিক কর্মসূচি রয়েছে। পুলিসের হাতে রয়েছে কঠোর আইনও। রয়েছে কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর মতো মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প। প্রতি স্কুলে রয়েছে কন্যাশ্রী ক্লাব। জেলা থেকে পঞ্চায়েতস্তর পর্যন্ত জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে আধিকারিকদের নিয়ে কমিটি রয়েছে। তারপরেও কেন বাল্যবিবাহ বন্ধে রাশ টানা যাচ্ছে না?
প্রশাসনের এক আধিকারিকের দাবি, বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বাল্যবিবাহের কুফল প্রচার করা হচ্ছে। মূলত গ্রামের দিকে একাধিক সন্তান থাকায় মেয়েদের অল্প বয়স থেকে বিয়ে দিয়ে চাপ মুক্ত হতে চান অভিভাবকরা। তাই সন্তানদের দায়ভার ঝেড়ে ফেলতে ১২-১৩ বছর বয়সে নাবালিকাদের বিয়ে দিয়ে শ্বশুড়বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে অনেকেই অল্প বয়সে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে। তারপর পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে ফেলছে। এভাবেই দ্রুত সন্তান সম্ভবা হয়ে পড়ছে অনেক স্কুল পড়ুয়া।
জেলাজুড়ে নাবালিকাদের নিয়ে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার জয়ন্ত চৌধুরী বলেন, বেশকিছু ব্লকে সত্যি নাবালিকা প্রসূতির অবস্থা বেশ উদ্বেগজনক। সূতি ২ ব্লকে আমরা সম্প্রতি ফিল্ডে কাজ করেছি। এই ব্লকের অধিকাংশ মেয়েদের ১৮-র আগে বিয়ে হয়ে যায়। তাই সচেতনতা সব দিক থেকে দরকার।