প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ
জঙ্গলমহল এলাকায় মশা খেদানো উৎসব দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। ভূত চতুর্দশীর পরদিন এই উৎসব হয়। লৌকিক এই উৎসবে বাসিন্দাদের নানা বিশ্বাস জড়িয়ে আছে। শহর এলাকায় এই উৎসব এখন সেভাবে হয় না। কিন্তু গ্ৰামীণ এলাকার মানুষ মশা খেদানো উৎসবে আজও মাতেন। সাঁকরাইল ব্লকের ভগবানচক, তেঁতুলিয়া দিগারবাঁধ, কুঁকড়াখুপি, কোপ্তিডাঙা, বেলিয়াবেড়া এলাকার জুনশোলা, ভোল, বামনদঁড়ি, হাতিপাদা, আশকোলা, মালঞ্চ, টিকায়েতপুর, গোপীবল্লভপুর-১ ও নয়াগ্রাম ব্লকের একাধিক গ্রামে এই উৎসব পালিত হয়। গ্ৰামবাসীদের প্রচলিত বিশ্বাস, ঢাকঢোল, করতাল ক্যানেস্তারার শব্দে অশুভ শক্তির বিনাশ হয়। আবার মশার বিপদ সম্পর্কে পরম্পরাগত সচেতনতাও জড়িয়ে আছে।
লোকসংস্কৃতি গবেষক লক্ষ্মীন্দর পালৌই বলেন, ঝাড়গ্ৰামে দীর্ঘসময় ধরে এই লোক উৎসব পালিত হয়ে আসছে। সুবর্ণরেখার অববাহিকা অঞ্চলের বেলিয়াবেড়া, গোপীবল্লভপুর, নয়াগ্রাম ও সাঁকরাইল এলাকার বাসিন্দাদের একটি লৌকিক সংস্কার হল মশা খেদানো। কালীপুজোর রাত থেকে পরদিন ভোর পর্যন্ত মশা তাড়ানো হয়। নানা লৌকিক বিশ্বাস ও মশার বিপদ সম্পর্কে সচেতনতাও এই উৎসবের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। সাঁকরাইল ব্লকের ভুবনচক গ্ৰামের বাসিন্দা সহদেব রাউল বলেন, কালীপুজোর রাতে ঢাকঢোল, ক্যানেস্তারা পিটিয়ে মশা খেদানো উৎসব হবে। বাড়ি বাড়ি ঘোরা হয়। বড়দের সাথেই অল্পবয়সি ছেলেমেয়েরা মশা খেদানো উৎসবে শামিল হয়। সূর্য ওঠার আগে ঘরে ফিরতে হয়। অনেকে হলুদ মেখে স্নান করেন। এই উৎসবের সঙ্গে অশুভ শক্তির বিনাশ ও মশার বিপদ সংক্রান্ত সচেতনতা মিলেমিশে আছে। বেলিয়াবেড়া এলাকার বাসিন্দা বছর কুড়ির অক্ষয় মাহাত বলেন, বর্তমান সময়ে মশা নির্মূল করা নিয়ে প্রশাসনের তরফে নানা সচেতনতামূলক প্রচার করা হয়। কিন্তু বহু আগে থেকেই মশা খেদানোর লৌকিক উৎসবের মধ্যে এলাকার মানুষের সেই সচেতনতা ধরা আছে। ঝাড়গ্ৰাম জেলা পরিষদের সভাধিপতি চিন্ময়ী মারান্ডী বলেন, জেলার গ্ৰামীণ এলাকায় কালীপুজোর রাতে মশা খেদানো উৎসব হয়। জেলার এই উৎসবের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।