প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ
এইসব পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম হবিবপুরের সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একসময়ে হবিবপুর ছিল জঙ্গলাবৃত। জনবসতিও ছিল অল্প। কালীমন্দির সূত্রে জানা যায়, এই এলাকায় আগে শ্মশান ছিল। আজ থেকে প্রায় পাঁচশো বছর আগে রঘুনন্দন দীর্ঘাঙ্গি নামে এক বৈষ্ণব সাধু স্বপ্নাদেশ পেয়ে পুকুর থেকে অষ্টধাতুর বামকালীর বিগ্রহ তুলে নিয়ে আসেন। মায়ের প্রতিষ্ঠা হয়। রঘুনন্দন বৈষ্ণব ছিলেন। তাই তিনি মায়ের পুজোর জন্য কালিকারঞ্জন মহারাজ নামে একজনকে পুরোহিত নিযুক্ত করেছিলেন। সেই থেকে পুজো হয়ে আসছে আজও। প্রতি ১২ বছর অন্তর মায়ের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করে পুজো করা হয়। এবছর মায়ের নতুন বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। প্রাচীন কালীপুজোগুলির মধ্যে অন্যতম মেদিনীপুর শহরের হবিবপুরের লছি পোদ্দার বাড়ির পুজো। প্রায় চারশ বছর ধরে প্রাচীন এই পুজো হয়ে আসছে। পুজো শুরু লক্ষ্মীনারায়ণ দে’র হাত ধরে। জনশ্রুতি, একদিন মধ্যরাতে স্বপ্নাদেশ পান লক্ষ্মীনারায়ণ। তাঁর কানে ভেসে আসে নূপুরের শব্দ। স্বপ্নাদেশে বলা হয়েছিল, নূপুরের শব্দ যেখানে গিয়ে বন্ধ হবে, সেখানেই প্রতিষ্ঠা করতে হবে মায়ের মন্দির। সেই আদেশ অনুয়ায়ীই সূচনা হয় এই বাড়ির কালীপুজো। পুজোয় এখনও মেনে চলা হয় বহু প্রাচীন রীতিনীতি। এই বাড়ির পুজোয় মায়ের নিরঞ্জন দেখতে শহরের মানুষ অপেক্ষা করে থাকে। পুরনো প্রথা অনুযায়ী আজও গোরুর গাড়িতে প্রতিমা নিরঞ্জন হয়। বটতলাচক দক্ষিণাকালী মন্দিরও (অলিগঞ্জ) বহু প্রাচীন। জনশ্রুতি, এক তান্ত্রিক সাধু পুরী ধামে যাচ্ছিলেন। পথে ঘন জঙ্গল ঘেরা বটতলা চকে বিশ্রামের জন্য থামেন তিনি। তিনিই টিনের চালা দেওয়া ঘরে মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পরবর্তীকালে বর্তমান মন্দির তৈরি হয়।
মেদিনীপুরে প্রাচীন পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম কাঁথ কালীর পুজো। জনশ্রুতি, অবিভক্ত মেদিনীপুরের ডায়মন্ড হারবারের নুনগোলা এলাকার বাসিন্দা নন্দগোপাল মুখোপাধ্যায় দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন। তাঁর স্বপ্নে দক্ষিণাকালী দেখা দেন। স্বপ্নাদেশে নন্দগোপাল জানতে পারেন, অবিভক্ত মেদিনীপুরের মীরবাজারে দক্ষিণাকালী রয়েছেন। তিনি আর সময় নষ্ট করেননি। সটান পৌঁছে যান মীরবাজারে। তিনি লক্ষ্য করেন বটগাছের নীচে কয়েকজন তান্ত্রিক সাধনা করছেন। আর সেখানেই রয়েছে এক ভগ্নপ্রায় দেওয়াল। দেবীর দর্শনের আশায় সেই দেওয়াল খোঁড়া শুরু করেন তিনি। দেওয়াল খুঁড়তে খুঁড়তে দেবীর স্বস্তিক চিহ্ন, দেবীর খাড়া দেখা যায়। এছাড়া দেখা যায় শিবের পায়ের চিহ্নও। এরপর আর সময় নষ্ট করেননি নন্দগোপালবাবু। সেখানেই মন্দির তৈরির উদ্যোগ নেন তিনি।