সংবাদদাতা, বর্ধমান: সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি দেখে প্রায় ১০বছর পর শনিবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মাকে নিতে এলেন ছেলে। মাকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন ছেলে অভিষেককুমার সিং। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর ৫৫-র মায়ের নাম সুনীতা দেবী। তিনি মানসিক রোগী ছিলেন। রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। ২০১৪ সালে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ওই প্রৌঢ়াকে হাসপাতালের মানসিক বিভাগে ভর্তি করে। ওই প্রৌঢ়ার সেসময় কিছু বলার মতো ক্ষমতা ছিল না। তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। বর্তমানে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই তাঁর ভরনপোষণ করেছে। চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা দেখভাল করেছেন। সুস্থ হওয়ার পর পাশের বেডে থাকা রোগীর পরিবারকে তিনি তাঁর নাম এবং ঠিকানা বলেন। সেই রোগীর পরিবার তাঁর ছবি ও ঠিকানা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়। বৃহস্পতিবার তাঁর ছেলে সোশ্যাল মিডিয়ায় মায়ের ছবি দেখতে পেয়ে শুক্রবার রাতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আসেন। অভিষেকবাবু বলেন, ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে আমাদের বাড়ি। বাবা ধানবাদে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করত। মা সেখানেই থাকত। মা হঠাৎ মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়। ২০১৪ সালের ২০এপ্রিল মা হঠাৎ থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করি। স্থানীয় থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করি। তারপরও মায়ের হদিশ মেলেনি। বৃহস্পতিবার রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় মায়ের ছবি দেখতে পাই। ছবি দেখেই আমরা দেরি না করে সোজা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতলে চলে আসি। এত বছর পর মাকে দেখতে পেয়ে ভীষণ খুশি হয়েছি। মায়ের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলেছি। মা এখন সুস্থ। এখানকার চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ধন্যবাদ জানাই। ওই পরিবারের কাছেও আমি কৃতজ্ঞ। আমরা মাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাই। কিন্তু সরকারি কিছু নিয়মকানুনের জন্য আটকে আছে। সেটা মিটে গেলেই মাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাব।
হাসপাতালের সুপার তাপস ঘোষ বলেন, ওই প্রৌঢ়া প্রায় ১০ বছর আগে হাসপাতালের মানসিক বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি বর্তমানে পুরোপুরি সুস্থ। যখন এসেছিলেন তখন তাঁর নাম, ঠিকানা কিছুই জানা যায়নি। সুস্থ হওয়ার পর তাঁর পরিচয় জানা গিয়েছে। আমরা তাঁকে একটি হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলাম। এরইমধ্যে ওই প্রৌঢ়ার ছেলে তাঁর মাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখতে পেয়ে নিতে আসেন। সদর মহকুমা শাসককে(উত্তর) বিষয়টি জানানো হয়েছে।