যে কোনও উত্তেজনাকর পরিস্থিতি এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করুন। বিবাদ বিতর্কে জড়িয়ে পড়তে পারেন। কাজকর্মে উন্নতির ... বিশদ
তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিসের চোখে ধুলো দিতে মহিলাকে খুনের পর নিজের মোবাইল বদল করে অভিযুক্ত। মৃতদেহের পাশে থেকে উদ্ধার হওয়া রক্তমাখা রেলের টিকিট দেখে সামসী ও রায়গঞ্জ স্টেশনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিস। এরপর রায়গঞ্জ জেলা পুলিসের সহযোগিতায় অভিযুক্তের পরিচয় জানতে পারেন তদন্তকারীরা। জানা যায়, তার বাড়ি উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে। রাতেই তার বাড়িতে যান তদন্তকারীরা। কিন্তু অভিযুক্ত ততক্ষণে গা ঢাকা দেয়। এরপর পুলিস তার বাড়ি থেকেই বর্তমান ছবি সংগ্রহ করে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজের সঙ্গে ছবি মেলানোর পর তদন্তকারীরা নিশ্চিত হন তাহের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। শুরু হয় তল্লাশি। এদিকে শুক্রবার রাতে ডাউন রাধিকাপুর এক্সপ্রেসের জেনারেল কোচে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হয় তাহের। এই খবর জানা মাত্রই জিআরপি সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন থানায় অভিযুক্তের ছবি পাঠিয়ে দেন তদন্তকারীরা।
পুলিস জানিয়েছে, ভোররাতে কাটোয়া থানার পুলিস ডাউন রাধিকাপুর এক্সপ্রেসে উঠে তিনটি জেনারেল কোচে তল্লাশি চালিয়ে নবদ্বীপ স্টেশনে গিয়ে তাহেরকে আটক করে। এরপর মালদহ পুলিসের একটি বিশেষ দল তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রবিবার তাকে চাঁচল মহকুমা আদালতে পেশ করা হতে পারে।
অন্যদিকে, শনিবার সকালে জলপাইগুড়ি থেকে দীপক রাইয়ের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ফরেন্সিক দল যায় চাঁচলের ঘটনাস্থলে। তাঁরা আমবাগান থেকে পোড়া রক্তের নমুনা সহ বেশকিছু জিনিস সংগ্রহ করেন।
কিন্তু কেন খুন করা হল মহিলাকে? প্রাথমিকভাবে উঠে আসছে সম্পর্কের টানাপোড়েনের তত্ত্বই। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৫ বছর আগে উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে ওই মহিলার বিয়ে হয়েছিল। তাঁর স্বামী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। কিন্তু সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরে গত এক বছর মহিলা স্বামীর বাড়িতে থাকতেন না। পরে অভিযুক্তের সঙ্গে মহিলার সম্পর্ক তৈরি হয়ে থাকতে পারে। সেই সম্পর্কে জটিলতার কারণে খুন করা হয়েছে বলে পুলিসের অনুমান।
এদিন মৃতের বাবা দেহ শনাক্ত করার পর ময়নাতদন্ত হয়। চাঁচল থানার মালতিপুরের যে নির্জন আমবাগান থেকে ওই মহিলা অর্ধদগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল, সেখান থেকে দুই কিলোমিটারের মধ্যেই তাঁর বাপের বাড়ি। পূর্ব বর্ধমানের পুলিস সুপার সায়ক দাস বলেন, চাঁচল থানার তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। একজনকে ট্রেন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যদিও গোটা বিষয়টি এখনই কোনও মন্তব্য করতে নারাজ মালদহের পুলিস সুপার প্রদীপকুমার যাদব।
ঘটনাস্থলের তদন্তে ফরেন্সিক দলের সদস্য। - নিজস্ব চিত্র