নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ি পুরসভার দখলমুক্ত অভিযানে বাধা দিয়ে বিতর্কে জড়ালেন স্বয়ং মেয়র পরিষদ সদস্য দিলীপ বর্মন। এমআইসি’র এমন আচরণে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ খোদ মেয়র গৌতম দেব। মঙ্গলবার ছিল শিলিগুড়ি পুরসভার বোর্ড মিটিং। ক্ষিপ্ত মেয়র বোর্ড মিটিংয়েই পরিষ্কার জানিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে কেউ নেই। এসব বরদাস্ত করা যাবে না। 
শিলিগুড়ি পুরসভার ৪৫  নম্বর ওয়ার্ডের চম্পাসারি মোড়ের নিবেদিতা রোডের ফুটপাতের ধারে আছে ১৩৯টি দোকান। এই দোকানগুলিতে কাঁচা সব্জি থেকে শুরু করে ফল ও মাছ-মাংসের দোকানও রয়েছে। শিলিগুড়ি পুরসভার তরফে সোমবার দুপুরে সংশ্লিষ্ট দোকানগুলি ছেড়ে দিয়ে জায়গা খালি করার নোটিস সাঁটিয়ে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার সকালে যথারীতি পুরসভার কর্মীরা বুলডোজার নিয়ে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে আসেন। বুলডোজার চালাতেই পুরকর্মীদের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বচসা শুরু হয়। পুরসভার দখলমুক্ত অভিযানে ব্যবসায়ীদের পক্ষ নিয়ে পুরকর্মীদের বাধা দেন ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার তথা ট্রেড লাইসেন্স বিভাগের মেয়র পরিষদ সদস্য দিলীপ বর্মন। এমআইসি’র বাধায় উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ রেখে বাধ্য হয়ে চলে যান পুরকর্মীরা। সোমবার পুরসভার নোটিসের পর মঙ্গলবার সকালে দখলমুক্ত অভিযান শুরু হতেই স্থানীয় ব্যবসায়ীদের পরিবারের মহিলারা তৃণমূলের ঝান্ডা হাতে এমআইসি’র সঙ্গেই পুরকর্মীদের বাধা দিয়ে এলাকাছাড়া করেন। ঘটনার পর এলাকায় সাময়িক উত্তেজনা ছড়ায়। ঘটনার খবর যায় মেয়র গৌতম দেবের কানেও। পুরকর্মীদের বাধা দেওয়ার খবরে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। 
পুরসভার ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার তথা এমআইসি দিলীপ বর্মন বলেন, ‘উন্নয়নের জন্য রাস্তা দখলমুক্ত অভিযানে আমি পুরসভার একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে পুর কর্তৃপক্ষের পাশেই রয়েছি। তবে গরিব মানুষের ক্ষতি করে উন্নয়ন হোক, এটার সমর্থন করি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের কাছে প্রচুর খালি জমি আছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে ১১ বিঘা জমি উদ্ধার করা হয়েছে। যদিও এখনও পুরসভা সেই জমি নিজেদের কব্জায় নেয়নি। উদ্ধার হওয়া সেই জমিতে দোকানদারদের পুনর্বাসন দেওয়া হলে এতগুলি মানুষ বেঁচে যায়। এই ১৩৯ জন দোকানদারের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হলে, তারপরেও এঁরা না সরলে আমি নিজের হাতে ফুটপাত দখলমুক্ত করব।’ 
নিবেদিতা রোড খুচরা ফুটপাত ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রাম শা বলেন, ‘আমরা উন্নয়নের পক্ষে। সরকারের পক্ষে। আমরা এখানে ২৫ বছর ধরে ব্যবসা করছি। এই দোকান চালিয়েই সংসার চলছে। আমাদের পুনর্বাসন না দিলে কোথায় যাব। দোকান ভেঙে দিলে না খেয়ে পরিবার নিয়ে মরতে হবে। আমরা চাই, প্রশাসন আমাদের দিকটি দেখুক।’ ( নিজস্ব চিত্র।)