মাতৃসূত্রে বিপুল অঙ্কে বিত্তলাভ হতে পারে। কর্ম ও ব্যবসায় ক্রমোন্নতি। ঈশ্বর চিন্তায় মনে শান্তিলাভ। ... বিশদ
ডুয়ার্সের বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে থাকা নদীগুলিতে আগে যে পরিমাণ জল থাকত এখন আর তেমন জলের দেখা মিলছে না। ভুটান থেকে ভেসে আসা ডলোমাইটের স্তর পড়ছে নদীবক্ষে। সেসঙ্গে হচ্ছে অরণ্য ধ্বংস। সব মিলিয়ে নদীর জল ধারণ ক্ষমতা নষ্ট হচ্ছে। ক্রমশ কমছে লতা, গুল্ম, উদ্ভিদের সংখ্যা। চরিত্র হারাচ্ছে জীববৈচিত্র্য। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ভয়াবহ বলেই মনে করা হচ্ছে। কিন্তু এসব নিয়ে তেমন কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে না বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোল বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান সুবীর সরকার বলেন, এই অঞ্চল একটি ব্যাপক বিবর্তনের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে। আগামী দিনে পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হবে। যে নদীগুলিতে জল দেখা যাচ্ছে না তার মূল কারণ হল বন ধ্বংস হয়েছে। গাছ না থাকার কারণে মাটিতে জল সঞ্চিত হচ্ছে না। বৃষ্টির সময় বিপুল পরিমাণ জলরাশি পাহাড় থেকে নেমে আসছে। পাহাড়ে ধস ও সমতলে বন্যার সৃষ্টি করছে। ডলোমাইট মিশ্রিত মাটির প্রলেপ বসিয়ে দিচ্ছে। খুবই বিপজ্জনক অবস্থায় পুরো পরিস্থিতিটি রয়েছে। এখনই যদি কোনও সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ না করা যায় তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রায় বছর দশেক আগে থেকেই বক্সাদুয়ারের সান্তালাবাড়ি, জয়ন্তী হয়ে আরও পূর্ব দিকে চামুর্চি সহ ডুয়ার্সের বহু এলাকার নদীতে জল না থাকার সমস্যা দেখা যাচ্ছে। ভুটান পাহাড় থেকে ভেসে আসা ডলোমাইটের কারণে মাটির উপরে প্রভাব পড়েছে। আলিপুরদুয়ার জেলার বক্সা অরণ্য অঞ্চলের মাটিতে বেশ কয়েক বছর ধরেই একটা শুষ্কতা এসেছে। মাটির এই শুষ্কতাকে ‘এডাপিক ড্রউটনেস’ বলা হয়। যা সাধারণ খরা নয়। অথচ মাটিতে খরা চলছে।
এ কারণে অরণ্যের জীববৈচিত্রের উপরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। তাঁরা মনে করছেন, যুগ যুগ ধরে অরণ্যের বড় বড় গাছের পাশাপাশি ভূমিসংলগ্ন এলাকায় লতা, গুল্ম, ঘাস প্রভৃতি থাকত। কিন্তু সেখানে শুষ্কতা দেখা দেওয়ায় ছোট উদ্ভিদের পরিমাণ অনেকটাই কমে গিয়েছে। এরফলে জীব বৈচিত্র কমে গিয়েছে। আগে এখানকার বহু নদী সংলগ্ন এলাকায় প্রচুর পরিমাণ প্রজাপতি থাকত। তার সংখ্যাও ব্যাপকভাবে কমেছে। একইভাবে উদ্ভিদ বৈচিত্র্যও কমেছে। শাল গাছের উপরেও এর প্রভাব পড়ছে। মাটির চরিত্র পরিবর্তন হওয়ার কারণেই এসব সমস্যা হচ্ছে। এদিকে, বন ধ্বংস হওয়ার কারণে মাটির জল ধারণ ক্ষমতাও ব্যাপক হারে কমেছে। এসবের কারণে বৃষ্টি থামলেই নদীর জল আর নদীতে থাকছে না। নদী শুষ্ক আকার ধারণ করছে।