মাতৃসূত্রে বিপুল অঙ্কে বিত্তলাভ হতে পারে। কর্ম ও ব্যবসায় ক্রমোন্নতি। ঈশ্বর চিন্তায় মনে শান্তিলাভ। ... বিশদ
পুলিস জানিয়েছে, মৃতদের নাম বিজয় কুজুর (২৬) ও অসিত টোপ্পো (২৪)। প্রথমজন বাগানের রাই লাইনের বাসিন্দা। দ্বিতীয়জন বোমরা লাইনের। তাঁদের সঙ্গী ভানু ওরাওঁ গুরুতর অসুস্থ। তিনি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষাক্ত গ্যাসে দম বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে দুই শ্রমিকের।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন বাগানের বোমরা লাইনে ২০ ফুট গভীর একটি পরিত্যক্ত কুয়ো পরিষ্কার করতে প্রথমে নামেন বিজয় ও অসিত। দীর্ঘক্ষণ নীচে থাকলেও তাঁদের সাড়াশব্দ না পেয়ে ভানু কুয়োয় নামেন। কিছুক্ষণ কেটে যাওয়ার পর তিনজনের কেউ না উঠে আসায় উপরে থাকা অন্য শ্রমিকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। খবর দেওয়া হয় ঘোষপুকুর ফাঁড়ির পুলিস ও মাটিগাড়া দমকল বিভাগকে। দমকল কর্মীরা একে একে তিনজনকে উদ্ধার করে ফাঁসিদেওয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক অসিত ও বিজয়কে মৃত বলে জানান। ভানুকে মেডিক্যালে রেফার করা হয়।
স্থানীয় চা শ্রমিক ধীরেন কুজুর বলেন, প্রতিবছরই বাগানের কুয়ো পরিষ্কার করা হয়। বাগান কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই কুয়ো সাফাই করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। প্রথম দু’জন কুয়োয় নামার পর তাঁরা কোনও সাড়াশব্দ দিচ্ছিলেন না। তৃতীয়জন নেমে তিনিও আটকে পড়েন। দমকল কর্মীরা এসে তিনজনকে উদ্ধার করেন। দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ফাঁসিদেওয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রিনা এক্কা। দুই শ্রমিকের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে তিনি বলেন, গ্রামের রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য বহুবার স্থানীয়দের কাছে আবেদন জানিয়েছি। কিন্তু তাঁদের সম্মতি না মেলায় রাস্তার কাজ করা যায়নি। সংকীর্ণ রাস্তার জন্য দমকলের গাড়ি সময়ে পৌঁছতে পারেনি। না হলে হয়তো দু’জনকে বাঁচানো যেত।
মাটিগাড়া দমকল বিভাগের আধিকারিক অমর দাসের কথায়, দীর্ঘদিন কুয়ো ব্যবহার না হওয়ায় ভিতরে বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয়েছিল। সেক্ষেত্রে কোনওরকম সাবধানতা ছাড়াই গভীর কুয়োয় নামায় এই বিপত্তি। যদিও দায় এড়িয়েছে চা বাগান কর্তৃপক্ষ। কুয়োর নেমে পরিষ্কারের অনুমতি কাউকে দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন বাগানের ম্যানেজার অ্যাপেলো সরকার। তিনি বলেন, প্রতিবছর বাগানের কুয়ো পরিষ্কার করা হয়। শ্রমিকদের বলা হয়েছিল, কুয়োয় ব্লিচিং পাউডার ছড়াতে। কিন্তু তাঁরা কুয়োয় নামায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল। পরিবারগুলির পাশে কীভাবে দাঁড়ানো যায়, দেখা হবে। বাগান মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলব। নিজস্ব চিত্র