ব্যবসায়িক কাজকর্মের প্রসার, কেনাবেচা বৃদ্ধি ও অর্থকড়ি উপার্জন বৃদ্ধি। আঘাত ও রক্তপাতের সম্ভাবনা আছে। ... বিশদ
‘২৯ অক্টোবর ধনতেরাস। সেই উপলক্ষ্যে আমাদের অনলাইন অর্ডারে বিশেষ ছাড় দেওয়া হচ্ছে। সোনার গয়নায় মজুরির উপর ৫০ শতাংশ ছাড়। হীরের গয়নার মজুরির উপরে আকর্ষণীয় ৩৫ শতাংশ ছাড় মিলবে। দ্রুত অর্ডার করতে নীচে দেওয়া কোম্পানির লিঙ্কে ক্লিক করুন।’
কেনার উদ্দেশ্যে হোক বা শুধুমাত্র ‘উইন্ডো শপিং’, অফারের মেসেজ পেয়ে অনেকেই খুলছেন লিঙ্ক। ব্যস! তাতেই গ্রাহকের ফোনের কন্ট্রোল চলে যাচ্ছে প্রতারকদের হাতে। ফোন নম্বরের যাবতীয় নোটিফিকেশন ‘ডাইভার্ট’ করে ব্যাঙ্কের যাবতীয় টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এমনই অভিনব অভিযোগ পেয়েছে লালবাজার। কালীপুজো ও ধনতেরাসের আগে শহরজুড়ে পরপর একই ধরনের অভিযোগে ঘুম উড়েছে লালবাজারের। কলকাতা পুলিসের তথ্য বলছে, গত তিনদিনে (শনিবার রাত পর্যন্ত) মোট ২২টি এমন অভিযোগ জমা পড়েছে। সেগুলির তদন্ত চলছে। এর জেরে চিন্তায় খোদ পুলিস কমিশনার মনোজ ভার্মা। শহরবাসীকে উদ্দেশ্য করে সচেতনতামূলক বার্তা দিয়েছেন সিপি। একইসঙ্গে, কলকাতা পুলিসের সাইবার বিভাগ ও ১০টি ডিভিশনের সাইবার সেলকে বিশেষভাবে সতর্ক করেছেন তিনি।
কলকাতা পুলিস সূত্রে খবর, দুর্গাপুজোর আগে জামকাপড় বিকিকিনির বিভিন্ন অনলাইন
সাইটের নামে ভুয়ো প্রোফাইল তৈরি হয়। তার জেরে একাধিক ব্যক্তি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তবে কালীপুজোয় মূলত আলো, বাজি এবং অলঙ্কার কেনা বেড়ে যায়। সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আলো ও বাজি খোলা বাজারে অনেক কম দামে বিক্রি হয়। তাই অলঙ্কার ব্যবসায়ীর ‘ছদ্মবেশে’ সাইবার প্রতারণা অনেক বেশি সহজ। একাধিক গয়না বিপণির নামে ভুয়ো অনলাইন পেজ তৈরি হয়েছে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম জুড়ে। সেখান থেকেও অগ্রিম টাকার ভিত্তিতে অর্ডার দেওয়ার ফাঁদ পাতা হচ্ছে। কিন্তু, টাকা চলে গেলেও অর্ডার আসছে না গ্রাহকের বাড়িতে। সংশ্লিষ্ট কোম্পানির সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে গিয়ে গ্রাহক জানতে পারছেন, এমন কোনও অর্ডারই আসেনি তাঁদের কাছে। শুধু তাই নয়, সোশ্যাল মিডিয়াতে এই ধরনের কোনও পেজই নেই সংশ্লিষ্ট সংস্থার। সাইবার বিভাগ সূত্রের খবর, ভুয়ো ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বা ভিপিএন ব্যবহার করে হচ্ছে প্রতারণা।
বিষয়টি উল্লেখ করে সোশ্যাল মিডিয়াতে বার্তা দিয়েছেন পুলিস কমিশনার। নগরপাল বলেন, কালীপুজো ও দীপাবলি উপলক্ষ্যে আমজনতার কেনাকাটার আগ্রহকে ‘টার্গেট’ করেছে সাইবার প্রতারকরা। সাধারণ মানুষের কাছে আমি অনুরোধ করছি, কোথাও কোনও অনলাইন পেমেন্ট করতে গেলে ভালো করে তা যাচাই করে দেখুন। শুধুমাত্র অফারের বশবর্তী হয়ে কোথাও টাকা দেবেন না। প্রতারিত হলে দ্রুত পুলিসে যোগাযোগ করুন। তাহলে খোয়া যাওয়া টাকা বাঁচানো সম্ভব হবে।