যে কোনও কাজকর্মে সকালের দিকে বিশেষ উন্নতির যোগ। বিকেলের দিকে অবশ্য কিছু বাধা আসতে পারে। ... বিশদ
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তীর কথায়, ১৮৭৪ সালে ডুয়ার্সের বুকে প্রথম চা বাগান পত্তন করেছিলেন বুরহাম সাহেব। গজলডোবায় তৈরি হওয়া সেই বাগানের প্রথম ম্যানেজার ছিলেন রিচার্ড হাউটন। ওই বাগান আজ আর নেই। কিন্তু পরবর্তীতে বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসুর বাবার উদ্যোগে একাধিক চা বাগান পত্তন হয়। সেই ইতিহাস আমরা মলাটবন্দি করেছি।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান আনন্দগোপাল ঘোষ বলেন, জগদীশচন্দ্র বসুর বাবা ভগবানচন্দ্র বসু ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট থাকাকালীন স্থানীয় উদ্যোগপতিদের চা বাগান তৈরিতে বিশেষ উৎসাহ দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, স্কটল্যান্ডের সাহেবদের সঙ্গে তাঁরা যাতে পাল্লা দিয়ে চায়ের ব্যবসা করতে পারেন, সেজন্য জমি লিজ দেওয়া থেকে সরকারি সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি। ডুয়ার্স চায়ের দেড়শো বছরের ইতিহাসে তাঁর সেই অবদান ভোলার নয়।
১৮৭৪ সালে গজলডোবায় প্রথম চা বাগান তৈরির পরই একের পর এক বাগান পত্তন হতে থাকে। ১৮৭৬ সালে ফুলবাড়ি, গজলডোবা, বাগরাকোট, ডালিমকোট ও রাঙ্গাতি ছ’টি বাগানে অনুদান দেওয়া হয়। ১৮৭৭ সালে জমির গ্রান্ট পান মুন্সি রহিম বক্স। পরের আরও একজন ভারতীয় নাম লেখান চা ব্যবসায়। তিনি বিহারীলাল গঙ্গোপাধ্যায়। ১৮৭৮ সালে গ্রান্ট পায় কলাবাড়ি চা বাগান। পরে ওই বাগান চলে যায় বিখ্যাত চিকিৎসক নীলরতন সরকারের হাতে। অনেক পরে তা আসে তারিণীপ্রসাদ রায়ের কাছে। ১৮৭৮ সালে শুরু হয় গুডহোপ, রানিচেরা, মানাবাড়ি, বালাবাড়ি, আলতাডাঙা, মানিহোপ, চায়েল ও বাতাবাড়ি চা বাগানের পথ চলা। ১৮৭৯ সালে জগদীশচন্দ্র বসুর বাবার অনুপ্রেরণায় তৈরি হয় রূপনী, সুনগাছি, বামনডাঙা, ওয়াশাবাড়ি, নাগরাকাটা, এলেনবাড়ির মতো চা বাগান। ততদিনে তিস্তার পাড় ছেড়ে চা বাগিচা পৌঁছে গিয়েছে ভুটানের কোলে নাগরাকাটায়। ১৮৮২ সালে ক্রান্তির চ্যাংমারি এলাকায় তৈরি হয় ক্যারন চা বাগান। ওই বছরেই ভারতীয় উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা হয় নর্দান বেঙ্গল টি কর্পোরেশন, বাগানের নাম নিদাম। জে এফ গ্রুনিং সাহেবের দেওয়া পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ১৮৭৬ সালে জলপাইগুড়িতে যেখানে ১৩টি চা বাগান ছিল, ১৯০৭ সালে তা এসে দাঁড়ায় ১৮০টি। পরে যদিও নানা কারণে কমতে থাকে বাগানের সংখ্যা।