যে কোনও কাজকর্মে সকালের দিকে বিশেষ উন্নতির যোগ। বিকেলের দিকে অবশ্য কিছু বাধা আসতে পারে। ... বিশদ
প্রসঙ্গত, এতদিন জিরো পয়েন্ট থেকে অনেকটা ভিতরে ডিউটি পয়েন্ট থেকেই সীমান্তে নজরদারি চালাতেন জওয়ানরা। ওই পয়েন্টে প্রতিদিন, পরিচয়পত্র জমা দিয়ে হাজারো তল্লাশির শেষে জমিতে চাষ করতে যেতেন কৃষকরা। কয়েকঘণ্টার মধ্যেই তাঁদের আবার ফিরে আসতে হতো। চাষিদের অভিযোগ ছিল, ফেন্সিংহীন সীমান্তে বিএসএফ না থাকার সুযোগে জমিতে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা দাপিয়ে বেড়ালেও বিএসএফ নিষ্ক্রিয় থাকত। তাঁদের টহলদারি নিয়ে উদাসীনতার জন্যই বাংলাদেশিরা ফসল নষ্ট করে দিলেও কিছুই করা যেত না এতদিন। তাই এতদিন চাষিদের দাবি ছিল, বিএসএফ জিরো পয়েন্টে সরে যাক। সে ক্ষেত্রে এই সমস্যা হবে না। এতে যেমন একদিকে নিজের জমিতে অবাধে কৃষিকাজ করতে পারবেন তাঁরা, তেমনই তাঁদের জমিতে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের অত্যাচার বন্ধ হবে। দেরিতে হলেও তাঁদের দাবি মিটতে শুরু করেছে। দিন কয়েক আগে জলঙ্গি সীমান্তেও গ্রামের প্রবেশদ্বার ছেড়ে জিরো পয়েন্টে সরে গিয়েছে বিএসএফ। মঙ্গলবার সকালেও ঠিক একই ভাবে ভেতরের ডিউটি পয়েন্টগুলি ছেড়ে সীমান্তের জিরো পয়েন্টে সরে যায় বিএসএফ। বিএসএফ সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তের মানুষের অভিযোগ ও সমস্যার কথা বিভিন্ন মাধ্যমে বিএসএফের ওপরমহলের কানে যেতে, সেখান থেকেই ওই সমস্যা সমাধান ও সীমান্তে সুরক্ষা আরও কড়া করার জন্য জওয়ানদের জিরো পয়েন্টে সরে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশিকা মোতাবেক ইতিমধ্যেই জলঙ্গি ও রানিনগরের বিএসএফ জওয়ানরা জিরো পয়েন্টে সরে গিয়েছে। বাকি এলাকার জওয়ানরারাও খুব অল্পদিনেই জিরো পয়েন্টে সরে যাবে বলে বিএসএফ সূত্রের খবর।
এতে ভীষণ খুশি সীমান্তের কৃষকরা। রানিনগরের কাহারপাড়ার কৃষক সাইফুদ্দিন মণ্ডল বলেন, এতদিন সীমান্তের জমিতে যাওয়ার জন্য বিএসএফের ওপি পয়েন্টে পরিচয়পত্র নিয়ে লাইনে দাঁড়াতে হতো। সেখানে অনুমতি দেওয়ার জন্য মাঝেমধ্যেই আমাদের দিয়ে কাজ করিয়ে নিত জওয়ানরা। কাজ না করে দিলে আমাদের অনুমতি দেওয়া হতো না। আবার অনুমতি দিতে দিতে বেলা হয়ে যেত। তিনটে বাজার আগেই আমাদের ফিরে আসতে হতো। এভাবে চাষ করা অত্যন্ত সমস্যার ব্যাপার। মঙ্গলবার সকাল থেকে বিএসএফ জিরো পয়েন্টে সরে যাওয়ায় আমাদের আর ওই সমস্যা পোহাতে হচ্ছে না। এতে আমাদের ভীষণ সুবিধে হয়েছে।
রানিনগরের কাতলামারি ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান বাসুদেব সাহা বলেন, আমরা বোর্ডে থাকাকালীন একাধিকবার ওই সমস্যা বিএসএফের ওপরমহলে তুলে ধরেছি। আবার নতুন পঞ্চায়েত প্রধান মাফরোজা খাতুনও বোর্ডে বসার পর এই সমস্যাগুলিকে বিএসফের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনার প্রচুর চেষ্টা করেছেন। শেষপর্যন্ত ওই সমস্যার সমাধান হতে দেখে ভালো লাগছে। এবার থেকে কোনও সমস্যা ছাড়াই নির্বিঘ্নে কৃষকরা সীমান্তের জমিতে চাষ করতে যেতে পারবেন। • নিজস্ব চিত্র