কাজকর্মের ক্ষেত্রে যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে। ক্রীড়াবিদদের সাফল্য লাভের সম্ভাবনা। পারিবারিক ক্ষেত্রটি মোটামুটি থাকবে। ... বিশদ
মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগেও তিনি জুড়ে ছিলেন লালমাটির সঙ্গে। শুক্রবার কলকাতায় জঙ্গলমহল উৎসবে গিয়েছিলেন। রাতে অসুস্থ হয়ে ফেরেন। গভীর রাতে শান্ত হয়ে পাড়ি দেন ‘না ফেরার দেশে’। যিনি নিজের নাম লিখতেন ‘ওরুণ’। কবির পুত্রবধূ সুদেষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, করোনার সময় ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তারপরও জীবনের রস সন্ধানে ছিলেন অক্লান্ত। শুক্রবার রাতে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হন। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসককে নিয়ে এসেও বাঁচাতে পারিনি। শনিবার দুপুরে কবির মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল চুঁচুড়া রবীন্দ্রভবনে। হাজির হয়েছিলেন অসংখ্য গুণমুগ্ধ, নবীন-প্রবীণ কবি, সাহিত্যিক। দীর্ঘদিন কবির সাহচর্য পেয়েছেন হুগলির আঞ্চলিক ইতিহাস গবেষক শ্যামল সিংহ। তিনি বলেন, কবির মৃত্যু হয় না। অরুণ চক্রবর্তী বেঁচে থাকবেন। যতদিন লাল পাহাড়ির দেশ সুর থাকবে কবি বেঁচে উঠবেন প্রতিদিন। কবি এবং হুগলি জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, মাটির মানুষ এবং মাটিলগ্ন কবি-এমন বিরল যুগলবন্দির জীবন্ত প্রতিমা ছিলেন অরুণদা। লোকসংস্কৃতি, লোকজীবনকে অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করে কথায় ধরেছিলেন।
শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের খ্যাতনামা ছাত্র ছিলেন অরুণবাবু। হুগলির বেসরকারি সংস্থায় উচ্চপদে চাকরি করেছেন। কিন্তু যৌবন থেকেই জীবন ছিল মাটি মাখা। কবিতা ছিল বাল্যের সঙ্গী। ১৯৭২ সালের এপ্রিলে শ্রীরামপুর স্টেশনে একটি মহুয়া গাছ দেখেছিলেন। তাঁর মনে হয়েছিল, এ তো ভারি মজা, শ্রীরামপুর তো ওর দেশ নয়! তারপর মহুয়ার মাতাল করা সুরে জন্ম নিয়েছিল ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা…’। পরবর্তী পঞ্চাশ বছর ধরে বাঙালি ঘরের শিশু থেকে যুবতী, প্রবীণ থেকে যুবককে নিরন্তর যা নাচিয়েছে। যে সুর আজও যৌবনতরঙ্গে উচ্ছ্বল। যা এনেছে জাতীয়স্তরের সম্মানও। কালের খেয়ালে হারিয়েছে সেই মহুয়া গাছ। অস্ত গেলেন অরুণও। কিন্তু রেখে গেলেন প্রথম সূর্যালোকের মতো উজ্জ্বল কিন্তু মেঠো, মোহময় এক কথামালা, আর অক্ষয় সুর।