উত্তম বিদ্যালাভের যোগ আছে। কাজকর্মে উন্নতি ও কাজে আনন্দলাভ। অর্থাগমের উত্তম যোগ। ... বিশদ
কিছুদিন আগে সিআইডি কর্তাদের নজরে আসে ফেসবুকে ‘বেবি অ্যাডাপ্টেশন’ নামে একটি পেজ। নাম পাল্টে এমন আরও পেজ চলছে। ফলোয়ারও নেহাৎ কম নয়! বেশ কয়েকজনকে নিয়ে গ্রুপও তৈরি হয়েছে। সিআইডি আধিকারিকদের সন্দেহ হয়, এর মাধ্যমে নিশ্চয়ই অবৈধভাবে শিশু কেনাবেচা চলছে। গ্রুপে থাকা কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, তাঁরা নিঃসন্তান। সন্তান লাভের আশায় তাঁরা এই গ্রুপে যোগযোগ করেছেন। তাঁদের সন্তান দত্তকের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এরপরই সিআইডি যোগাযোগ করে এক এনজিওর সঙ্গে। তাদের সাহায্যে দুই গোয়েন্দা সন্তানহীন দম্পতি সেজে ঢুকে পড়েন গ্রুপে। যোগাযোগ হয় চক্রের মাথাদের সঙ্গে। চার লক্ষ টাকায় কন্যাসন্তান ‘রফা’ হয়। চক্রের পান্ডারাও অবশ্য ক্রস চেক করতে ছাড়েনি। আধার কার্ড চেয়ে বসে তারা। এমনকী ভিডিও কলে বোঝার চেষ্টা করে দম্পতিকে। তারপর জানায়, বৃহস্পতি-শুক্রবারের মধ্যে বাচ্চা পেয়ে যাবেন। কিন্তু শুক্রবার ফোন করে এক মহিলা জানায়, শিশু পাওয়া যায়নি। রবিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তাতেও রাজি হন সিআইডির গোয়েন্দারা। ঠিক হয়, শালিমারে শিশু হাতবদল হবে। বিহার থেকে ট্রেনে এসে এই স্টেশনে নামবে তারা। সেইমতো তদন্তকারীদের টিম রবিবার সকালে পৌঁছে যায় শালিমার। ফাঁদে পা দেয় অভিযুক্ত দম্পতি মানিক হালদার ও মুকুল সরকার। হাতেনাতে ধরাও পড়ে। উদ্ধার হয় দু’দিনের এক সদ্যোজাতও।
শিশুটিকে পাটনা থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল বলে উঠে এসেছে তদন্তে। সেখানকার এক মহিলাকে মোটা টাকার টোপ দিয়ে কাজ হাসিল করেছে তারা। হরিদেবপুর এলাকার বাসিন্দা এই দম্পতির শিশু বিক্রির কারবারে হাতেখড়ি বছর খানেক আগে। ধৃতরা জানিয়েছে, নিঃসন্তান দম্পতিরা যোগযোগ করলে প্রথমে তাঁদের ‘কাউন্সেলিং’ করা হতো। বিশ্বাসযোগ্য মনে হলে নেওয়া হতো আধার। তারও ভেরিফিকেশন হতো। নিঃসন্তান দম্পতির বাড়ি ঘুরে আসার পর ঠিক হতো দরদাম। তবে পার্টি বুঝে টাকার অঙ্ক ওঠানামা করত। ধৃত দম্পতি জানিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ার সূত্র ধরেই ভিন রাজ্যে এই কাজে যুক্ত এজেন্টদের সঙ্গে পরিচয় হয়। নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে পড়ে কার্যত গোটা দেশে। সরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে শিশু চুরি তো চলতই, পাশাপাশি আর্থিক দিক থেকে দুর্বল মহিলারা ছিল তাদের টার্গেট। এমনকী ভিন রাজ্যের বেসরকারি হোম থেকেও তারা শিশু নিয়ে এসেছে। তবে শিশু আনা ও ‘ডেলিভারি’ করার কাজ করত এই দম্পতিই। ধৃতেরা কোনও আইভিএফ সেন্টারে শিশু বিক্রি করেছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।