বিদ্যার্থীরা শুভ ফল লাভ করবে। মাঝে মাঝে হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় ক্ষতি হতে পারে। নতুন ... বিশদ
রাজনৈতিক আধিপত্য প্রশ্নাতীত। রাজ্যে ক্ষমতায় বসার পর থেকে উপর্যুপুরি নির্বাচনে সাফল্য শুধু নয়, প্রতিপক্ষকে ছাপিয়ে গিয়েছে জনসমর্থন। যে কোনও স্তরের ভোটে বিজয় সম্পর্কে নিশ্চিন্ত ছিল তৃণমূল। পাশাপাশি বিরোধী বাম ও কংগ্রেস কার্যত অপ্রাসঙ্গিক হয়ে সাংগঠনিক ভাঙনে টালমাটাল। এই পরিস্থিতিতে ধর্মীয় বিভাজনের রাজনৈতিক মেরুকরণে ভর দিয়ে বিরোধী পরিসরের দখল নিয়েছে বিজেপি। গত লোকসভা ভোটে বাংলায় মেরুকরণের সুবাদে তৃণমূলকে বড়সড় ধাক্কাও দিয়েছে গেরুয়া শিবির। দলের ফলাফল পর্যলোচনা করতে গিয়ে নানা কারণের মধ্যে জনসংযোগের অভাবকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে ফলাফল পর্যলোচনায় তিনি সোজাসাপ্টা সেই ত্রুটির দিকে আঙুল তুলেছেন। তৃণমূলের একাধিক বিধায়ক মেনে নিয়েছেন, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচি থাকা সত্ত্বেও দলের একাংশের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের ফলে, মানুষের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। তাই মানুষের কাছে পৌঁছনোর নিদান দিয়েছেন নেত্রী। ঘটনাচক্রে, পেশাদারি রাজনৈতিক পরামর্শদাতা সংস্থা প্রশান্ত কিশোরের আইপ্যাকও জনসংযাগের উপরেই জোর দিয়েছে। সেই অনুসারে তৈরি হয় ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি। গত দুই সপ্তাহ ধরে তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা দিদিকে বলো জনপ্রিয় করতে নিজেদের এলাকায় সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে যেতে শুরু করেছেন। নিজেদের অভাব অভিযোগ সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য হেল্পলাইন নম্বর ঘরে ঘরে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজে ব্যস্ত নেতা থেকে মন্ত্রী পর্যন্ত সকলেই। ইতিমধ্যেই আইপ্যাকের পাঠানো তালিকা মেনে বিধায়ক-মন্ত্রীরা জনসংযোগে নিজেদের এলাকায় বাসিন্দাদের বাড়িতে রাত কাটাচ্ছেন। স্থানীয়দের সঙ্গে পাত পেড়ে খাওয়াদাওয়া সারছেন। তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার মতে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রশ্নে সংগঠনের মধ্যে একটা শৈথিল্য এসে গিয়েছিল। দলের এক সাংসদের মতে, রাজনৈতিক কর্মসূচি বলতে দলের কর্মীরা বোঝেন কেবল, রক্তদান, বস্ত্রদান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি। কিন্তু বিজেপিকে পিছন থেকে পরিচালিত করছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)। তারা সুকৌশলে ধর্মের নামে সামাজিক বিভাজন তৈরি করছে। এর মোকাবিলায় মানুষের ঘরে পৌঁছে যেতে হবে। প্রশান্তের সৌজন্যে দলের উপর থেকে নিচুতলায় এই জনসংযোগ প্রকল্পের কাজ নিয়ে ব্যস্ততা চলছে। উত্তরবঙ্গের এক বিধায়কের মতে, গত কয়েক বছরে ভোটের মরশুম ছাড়া এত বেশি সাংগঠনিক তৎপরতা দেখা যায়নি। সোশ্যাল মিডিয়ায় কোচবিহারের দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহর দাবি যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী, ‘দিদির মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া দাদা-ভাইদের খুঁজে পাচ্ছি।’