মনোরম স্থানে সপরিবারে ভ্রমণ ও আনন্দ উপভোগ। সম্পত্তি সংরক্ষণে সচেষ্ট না হলে পরে ঝামেলায় পড়তে ... বিশদ
কলকাতার পাথুরিঘাটার বাসিন্দা দর্পনারায়ণ ঠাকুর। ব্রিটিশ ক্যাসলের আদলে তাঁর বাড়ি ইংরেজদেরও নজর কাড়ে। তাঁর চতুর্থ পুত্র হরিমোহন ঠাকুরের স্ত্রী বৃন্দাবন যাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন। হরিমোহনের পুত্র নন্দলাল ছিলেন এক্সপোর্ট ওয়্যারহাউস এজেন্ট। বিপুল সম্পত্তির মালিক। তিনিই সতেরশো খ্রীষ্টাব্দের শেষ নাগাদ মায়ের জন্য দমদমে বানালেন গুপ্ত বৃন্দাবন। মূল বৃন্দাবনের মতো তীর্থক্ষেত্রের পরিবেশে তৈরি করে মাকে এনে রাখলেন। তখন দেশ-বিদেশ থেকে অতিথিরা আসত। মাঝেমধ্যেই বসত সঙ্গীতের আসর। সেরা সঙ্গীতজ্ঞকে দেওয়া হতো ধাতব ফুলদানি। ধুমধাম করে পালন হতো বসন্ত পঞ্চমী। আমপাতা ও হলুদ ফুলে বাগান সেজে উঠত তখন। কলকাতার বিশপ রেজিনাল্ড হোবার বাগান দেখে এসে লিখলেন, ‘ইতালির যে কোনও ভিলার থেকেও সুন্দর।’ একসময় এ সম্পত্তি কিনলেন বড়বাজারের রূপলাল মল্লিক। তাঁরা এখানকার মার্বেল প্যালেস সংস্কার করলেন। উনবিংশ শতকে সেভেন ট্যাঙ্কসের এই বাগানবাড়ি জনপ্রিয় ও দ্রষ্টব্য হয়ে উঠল। পরে মল্লিকদের কাছ থেকে বাগানবাড়ি কিনলেন রায়বাহাদুর ডাঃ মতিলাল মুখোপাধ্যায়। তারপর ১৮৩০ সালে এখানে তৈরি হল কাশীপুর ক্লাব। গড়ে উঠল গান অ্যান্ড সেল কারখানার বিদেশি আধিকারিকদের বাসস্থান ও বিনোদন কেন্দ্র।
কলকাতা পুরসভার হেরিটেজ বিল্ডিংয়ের তালিকায় কাশীপুর ক্লাবের নাম রয়েছে। দমদমের ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত গবেষক মৌমিতা সাহা বলেন, ‘দমদমের পুরনো দলিলে মৌজার নামে এখনও গুপ্ত বৃন্দাবন নাম খুঁজে পাওয়া যায়। সেটির আজকের নাম সেভেন ট্যাঙ্কস, কাশীপুর ক্লাব। প্রতিরক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের কাছে প্রস্তাব দিয়েছিলাম, নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রাসাদোপম হেরিটেজ বাড়িটি ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হোক। ক্লাবের মধ্যে মিউজিয়াম তৈরি হোক। গবেষণামূলক তথ্যের পাশাপাশি অন্যান্য তথ্যাদিও রাখা থাকবে। এই ইতিহাস সংরক্ষণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কিন্তু কোনও তরফেই কোনও উদ্যোগ এখনও নজরে আসেনি।’