ব্যবসা ও পেশায় ধনাগম ভাগ্য আজ অতি উত্তম। বেকারদের কর্ম লাভ হতে পারে। শরীর স্বাস্থ্য ... বিশদ
তারকেশ্বর থানার অন্তর্গত পূর্ব রামনগর পঞ্চায়েতের ট্যাগরা গ্রামের বাসিন্দা জগাই ও স্বপ্না দে। তাঁদের একমাত্র ছেলে সন্দীপ কলা বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর পুরশুড়ায় আইটিআই কলেজে ফিটার বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। ছবি আঁকায় পারদর্শী তিনি। বাবা আগে কাঠমিস্ত্রির কাজ করতেন। বর্তমানে টোটো চালান। মা গৃহবধূ।
হাসি খুশির এই সংসারে বিপদ নেমে আসে ২০২২ সালে। সেই বছর এপ্রিল মাসে আইটিআইয়ের ছাত্র সন্দীপ কলেজ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ভাত খাওয়ার পর হঠাৎ তাঁর বমি শুরু হয়। সাধারণ গ্যাস-অম্বলের সমস্যা মনে করে টুকটাক ওষুধ খেলেও তাতে সমস্যা না কমায় তাঁরা ডাক্তারের পরামর্শ নেন। পরীক্ষার পর ডাক্তার জানান, সন্দীপ কিডনির সমস্যায় ভুগছেন। চলতে থাকে চিকিৎসা। এরপর শুরু হয় ডায়ালিসিস। বর্তমানে সপ্তাহে তিনদিন ডায়ালিসিস করতে হয়। প্রথমে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করালেও সেখানে নিয়মিত ডায়ালিসিসের ডেট না মেলায় তাঁরা বাধ্য হয়েই ছেলেকে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। পরিস্থিতি এখন এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে যে, কিডনি প্রতিস্থাপন করা প্রয়োজন। মা কিংবা বাবা কিডনি দান করতে পারেন। মা যেহেতু সুগারের রোগী, তাই বাবাই ছেলেকে কিডনি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিডনি প্রতিস্থাপনের যাবতীয় পরীক্ষা নিরীক্ষায় দু’জন উত্তীর্ণ হওয়ার পর ঠিক হয়, দুর্গাপুজোর আগেই অপারেশন করা হবে। কিন্তু টাকার জোগাড় না হওয়ায় পিছতে থাকে দিন। শেষমেশ ঠিক হয়েছে, কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ১০ ডিসেম্বর কিডনি দান ও প্রতিস্থাপন পর্ব হবে। বাবা ও ছেলের অপারেশন বাবদ খরচ হবে আনুমানিক পৌঁনে ১১ লক্ষ টাকা। এরপর রয়েছে প্রতি মাসের ওষুধের খরচ। অপারেশনের পর কয়েক মাস অন্তত ৪০ হাজার টাকার ওষুধ লাগবে বলে জানা গিয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ টাকা জোগাড় করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন বাবা-মা। প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু এখনও সেই টাকা জোগাড় হয়নি।
জগাই দে বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি সন্দীপ ভালো ছবি আঁকে। ভেবেছিলাম ছেলে পড়াশোনা শিখে বড় হলে আমরা মাটির বাড়ি ছেড়ে পাকা বাড়িতে উঠব। ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে কাঠমিস্ত্রির কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখন ঋণ নিয়ে টোটো কিনে চালাচ্ছি। ওই আয়েই কোনওমতে চলছে সংসার। সকলের কাছে আর্জি, যদি কেউ আর্থিকভাবে সাহায্য করেন, তাহলে ছেলেকে হয়তো বাঁচাতে পারব আমরা। -নিজস্ব চিত্র