ব্যবসা ও পেশায় ধনাগম ভাগ্য আজ অতি উত্তম। বেকারদের কর্ম লাভ হতে পারে। শরীর স্বাস্থ্য ... বিশদ
নির্বিবাদী মানুষ হিসেবেই সৌমিত্রবাবুকে চিনতেন স্থানীয়রা। বালিতে দীর্ঘদিন স্ত্রী রিনাদেবী ও ছেলে অর্ককে নিয়ে ভাড়াবাড়িতে থাকতেন তিনি। বিহারের কাটিহার রামকৃষ্ণ মিশনে তবলার প্রশিক্ষক ছিলেন বৃদ্ধ। ২০১০ সালে পড়ে গিয়ে ডান হাতে চোট লাগে তাঁর। সঠিক চিকিৎসার অভাবে হাতের একাংশ পঙ্গু হয়ে যায়। তবুও তবলার তালিম দেওয়া ছাড়তে পারেননি কিংবদন্তি ওস্তাদ কেরামতুল্লার একসময়ের ছাত্র সৌমিত্রবাবু। বছর তিনেক আগে অবসরের পর কাটিহারেই পড়ুয়াদের ব্যক্তিগতভাবে তালিম দিতেন। তাতেই হতো রোজগার। সেই সূত্রে প্রতি মাসে বেশ কিছুদিন সেখানে গিয়ে থাকতেন তিনি। ১৪ নভেম্বর ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষার জন্য কাটিহারে গিয়েছিলেন। মঙ্গলবার রাতে কাটিহার-হাওড়া এক্সপ্রেসের প্রতিবন্ধী কামরায় ওঠার আগে স্ত্রীর সঙ্গে শেষবার কথা হয় সৌমিত্রবাবুর। স্ত্রী রিনাদেবী বলেন, ‘বুধবার সকাল সাড়ে সাতটায় হাওড়া পৌঁছনোর কথা ছিল। কিন্তু ফোন করে দেখি, তা বন্ধ। ছেলে জিআরপির সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারে, ট্রেনেই তাঁকে খুন করা হয়েছে। শেষকৃত্যের সময় দেখলাম, স্বামীর মুখে ও বুকে প্রচুর আঘাত রয়েছে। কোথায় ও কেন স্বামীর সঙ্গে এমনটা হল, কিছুই জানতে পারলাম না।’ এমনকী শেষকৃত্য মিটে গেলেও কাগজপত্রের ঝঞ্ঝাট মেটাতে জিআরপির অফিসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হচ্ছে ছেলেকে।
পরিবারের দাবি, একটি সাইড ব্যাগে কয়েকটা জামা কাপড় ও কাগজপত্র ছাড়া সৌমিত্রবাবুর সঙ্গে আর কিছুই ছিল না। সেই ব্যাগ ও মোবাইল ফোন খোয়া গিয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ভাড়া ঘরের সামনে বসেছিলেন মৃতের স্ত্রী রিনাদেবী। চোখের জল মুছে বললেন, ‘সঙ্গীত ছাড়া কিছুই বুঝতেন না উনি। তবলা শিখিয়ে যেটুকু রোজগার করতেন, তা দিয়েই ছেলেকে কলেজে পড়াচ্ছিলাম। এখন কীভাবে সংসারটা চলবে জানি না।’ তাঁর আক্ষেপ, রেলের গাফিলতিতে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী সদস্যের মৃত্যুর পরেও রেলের কর্তাব্যক্তিদের কেউ খোঁজটুকুও নিলেন না। এর দায় কার? আদৌ ক্ষতিপূরণ মিলবে কি না, তাও জানে না অসহায় পরিবার। -নিজস্ব চিত্র