প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ
উত্তর কলকাতার কেশবচন্দ্র স্ট্রিট, আমহার্স্ট স্ট্রিট, শ্যামপুকুর, ঠনঠনিয়া যেন কালীক্ষেত্র। ডান দিকে-বাম দিকে তাকালেই ছোট ছোট মণ্ডপ। ভেসে আসছে পান্নালাল, রামকুমারের শ্যামাসঙ্গীত, মিলেমিশে একাকার রবীন্দ্র-নজরুলও। কেশবচন্দ্র স্ট্রিটের বড় আকর্ষণ ফাটাকেষ্টর পুজো। দুপুরে খুব গরম। নতুন জামা গায়ে ঘামছে মানুষ। তবুও ঠাকুর দেখার আগ্রহে ক্লান্তি নেই। ফাটাকেষ্টর মণ্ডপের সামনের রাস্তায় গ্রাফিতি আঁকা। সেখানে কপালের ঘাম মুছে চলল ছবি তোলা। দক্ষিণে লেক কালীবাড়ি, কালীঘাট, করুণাময়ী কালীমন্দির বা চেতলায় একই চিত্র, মানুষের ঢল। দুপুর গড়াতে জ্বলল আলো। তা ঠিকরে পড়তেই রঙিন আলোর চাদরে ঢাকতে শুরু করল শহর। সেই আলো ব্যাকড্রপে রেখে ছবি তোলার হিড়িক। ‘ব্যাকগ্রাউন্ডে আলো কিন্তু ঝাপসা হওয়া চাই ডুড’-বন্ধু ক্যামেরাম্যানের কাছে আবদার রেখে রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে পড়লেন তরুণী। তিন-চারটে গাড়ি দাঁড়িয়ে গেল রাস্তায়। জ্যাম তৈরি হল।
ডানলপের সুদেষ্ণার বান্ধবী রূপা বললেন, ‘রাতে বাজি ফাটানোর ব্যাপার আছে। তাই সকাল সকাল ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে পড়েছি।’ উত্তর কলকাতা মানেই পুরনো বাড়ি। ফাটাকেষ্টর পুজোর গলিতে রয়েছে ঠিক সেরকম একটি পুরনো বাড়ির দরজা। সেই দরজায় দাঁড়িয়ে তরুণ-তরুণীরা। পোজ দিয়ে ছবি তোলা চলল পাল্লা দিয়ে। রাস্তার দু’পাশে প্রচুর দোকান। ফুচকা, আইসক্রিম, কচুরি, বিরিয়ানি চলল দেদার। কেনা হল বাজিও। ওই এলাকার স্থানীয় খুদেরা তখন খুব ব্যস্ত। বাড়ির সামনে ফুটপাতে রোদে সাধের বাজিগুলি শুকোতে দিয়েছে। চোখমুখ শক্ত করে রেখেছে যাতে লোকে ভয় পায় সেভাবে, বাজি পাহারা দিচ্ছে তারা। আচমকা গলির মুখে করালবদনী ডাকিনি-যোগিনীর মূর্তি। এখানে কী রয়েছে? গলির ভিতরে ছোট একটি মণ্ডপ। সেটি দেখে এগিয়ে গিয়ে ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি। সারা রাজ্য থেকে কালীভক্তরা এ সময় ঠনঠনিয়াতে আসেন। এবছরও থিকথিকে ভিড়।
দক্ষিণের তুলনায় উত্তরে পুজোর হাঁকডাক বেশি। লোকে তাই বলে। তা বলে কিন্তু দক্ষিণ যেতে ছাড়ে না। কালীঘাট, লেক কালীবাড়ি, করুণাময়ী কালীমন্দিরে পা রাখার জায়গা নেই। এদিন রীতি মেনে কুমারী পুজো হয় টালিগঞ্জের করুণাময়ী মন্দিরে। সেখানে ঠাসা ভক্ত। কালীঘাটেও সকাল থেকে পা ফেলার জায়গা নেই। চেতলায় হয় বিভিন্ন রূপের কালীর পুজো। সেখানেও তিলধারনের স্থান ছিল না মাঝরাত পর্যন্ত। সকাল থেকে রাত, আনন্দময়ী মা নিরানন্দ করেননি ভক্তকূলকে।