ব্যবসায়িক কাজকর্মের প্রসার, কেনাবেচা বৃদ্ধি ও অর্থকড়ি উপার্জন বৃদ্ধি। আঘাত ও রক্তপাতের সম্ভাবনা আছে। ... বিশদ
কেন আবেদনের পরও বর্ধিত পেনশন দেওয়ার হার এত কম? দপ্তরের কর্তারা বলছেন, গোড়া থেকেই যে নিয়ম করা হয়েছে, তাতে এই পেনশন পাওয়ার শর্তগুলি অত্যন্ত জটিল। প্রথমত, কর্মদাতা সংস্থার অনুমতি দরকার। বেশিরভাগ আবেদনকারীই সেই অনুমতি জোগাড় করতে পারেননি। যাঁরা সেই এনওসি (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) জোগাড় করতে পেরেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আবার টালবাহানা শুরু হয়েছে ফর্মের স্ক্রুটিনিতে। এবং মাসের পর মাস তাঁদের ফর্ম পড়ে থেকেছে। ক্যালেন্ডারের পাতা যত উল্টেছে, ততই শক্ত হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রশাসনিক ফাঁস। আর আটকে গিয়েছে লক্ষ লক্ষ আবেদনকারী প্রবীণ নাগরিকের পেনশন।
এবার আসা যাক যাঁদের আবেদন গৃহীত হয়েছে, তাঁদের ব্যাপারে। এই প্রবীণ মানুষদের সমস্যা দু’রকমের। আবেদনকারীদের একাংশের অভিযোগ, যাঁদের প্রশাসনিক কাজ অনেকটাই শেষের পথে, তাঁদের কাছে ডিমান্ড নোটিস গিয়েছে এবং সেই মতো টাকা চাওয়া হয়েছে। বর্ধিত হারে পেনশনের জন্য যাঁরা আবেদন করেছেন এবং কর্মজীবনে তাঁরা সেই অনুপাতে পেনশন ফান্ডে টাকা জমা করেননি, তাঁদের সেই টাকা জমা করার জন্য ডিমান্ড নোটিস পাঠানোর কথা দপ্তরের তরফে। দেখা যাচ্ছে, নোটিস অনুযায়ী টাকা মেটানোর পরও মাসের পর মাস কেটে যাচ্ছে। বর্ধিত হারে পেনশন কিন্তু তাঁরা পাচ্ছেন না। কেউ কেউ এমন আছেন, যাঁদের টাকা পাওয়ার কথা মে মাস থেকে। অথচ তাঁরা পেতে শুরু করেছেন অক্টোবরে। মাঝের পাঁচ মাস তাঁরা পুরনো হারেই পেনশন পেয়েছেন। অর্থাৎ, মাঝের এই কয়েক মাস মিলিয়ে বেশ কয়েক হাজার টাকা যে তাঁরা পেলেন না, তার কী হবে? সরকার নিমরাজি হয়ে এরিয়ার দিলেও সুদ কিন্তু দেবে না।
দ্বিতীয় সমস্যাটি হল, সব নথিপত্র ‘ক্লিয়ার’ হয়ে গেলেও, অর্থাৎ প্রশাসনিক কাজের শেষেও ডিমান্ড নোটিস পাঠাচ্ছে না পিএফ দপ্তর। সেই গাফিলতির জন্য আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে আবেদনকারীদের। কীভাবে? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পেনশনভোগীর কথায়, ‘আমার পেনশনের কাগজপত্র সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে মে মাসে। কর্মদাতা সংস্থা থেকে ছাড়পত্রও ওই মাসেই পৌঁছে গিয়েছে পিএফ দপ্তরে। অক্টোবর শেষ হতে চলল। এখনও আমি ডিমান্ড নোটিস পাইনি।’ ইপিএস-৯৫ স্কিমের আওতায় থাকা পেনশনভোগীদের সংগঠন ন্যাশনাল অ্যাজিটেশন কমিটির রাজ্য শাখার সভাপতি তপন দত্ত বলেন, ‘বহু আবেদনকারী অভিযোগ করছেন, মাসের পর মাস কেটে গেলেও, তাঁরা ডিমান্ড নোটিস পাচ্ছেন না। এটা হচ্ছে স্রেফ পিএফ দপ্তরের গাফিলতির জন্য। অথচ যে ক’মাস পর ওই নোটিস আসবে, সেই ক’মাসের সুদের বোঝা চাপবে আবেদনকারীরই ঘাড়ে।’ কীভাবে? ধরা যাক, কোনও আবেদনকারীকে ৩০ লক্ষ টাকা ডিমান্ড নোটিস বাবদ জমা করতে হবে। পাঁচ মাস পর সেই নোটিস এলে, মাস পিছু ১০ হাজার টাকা করে সুদ বাবদ ৫০ হাজার টাকা অতিরিক্ত দিতে হবে তাঁকে। এই ৫০ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণ কে দেবে? কেউ না। মোদি সরকার তো নয়ই। অথচ এখানে অবেদনকারীর কোনও দোষই নেই। ওই প্রবীণ নাগরিক যে টাকা পেনশন পাবেন, তার থেকে বেশি মাসে গচ্চা দিতে হবে তাঁকে। এরপর প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে, সরকার বর্ধিত হারে পেনশন দেওয়ার ক্ষেত্রে আদৌ আগ্রহী তো?