সংবাদদাতা, কল্যাণী: কথায় আছে– কারও পৌষ মাস, কারও সর্বনাশ। ডিভিসির ছাড়া জলে দক্ষিণবঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় এখন তৈরি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। গ্রামগঞ্জে ঢুকে গিয়েছে বন্যার জল। সমস্যায় পড়েছে অসংখ্য মানুষ। কিন্তু বন্যার সেই অতিরিক্ত জল পেয়ে সুবিধা হয়েছে পাটচাষিদের। তাঁরা রাস্তার ধারে বা খেলার মাঠে বন্যার জন্য জমে যাওয়া এক থেকে দেড় ফুট গভীর জলেই পাট পচানো বা জাগ দেওয়ার কাজ করছেন। এই প্রসঙ্গে কল্যাণী ব্লকের চশরহাটির এক পাটচাষি বলেন, ২০০০ সালের বন্যার পর এবার ফের আমাদের গ্রামে এইভাবে জল ঢুকেছে। সেই অতিরিক্ত জলে পাট জাগ দিতে সুবিধা হচ্ছে আমাদের। কল্যাণী ব্লকের বেশ কিছু গ্রাম ভাগীরথী নদীর তীরে। সেই সব গ্রামেই মূলত এবছর বন্যার জল ঢুকেছে। অন্যান্যবার বৃষ্টি কম হওয়ায় ওই এলাকার বিভিন্ন জলাশয়, খাড়ি, নদী, নালা, পুকুর শুকিয়ে থাকে। আশেপাশের খালগুলোও সংস্কারের অভাবে মজা অবস্থায়। আর কয়েকটি পুকুরে জল থাকলেও তা মাছচাষিদের দখলে থাকে। ফলে পাটের আঁশ ছাড়ানোর জন্য পাট পচানো বা জাগ দেওয়ার জলাশয় ঠিকমতো মেলে না এলাকায়। অনেকে বাধ্য হয়ে টাকা খরচ করে স্যালো মেশিনে জল এনে জলাশয় ভরাট করে পাট জাগ দেওয়ার কাজ করেন। এতে আবার খরচ অনেকটাই বেড়ে যায়। এভাবে প্রত্যেক বছর ক্ষতির আশঙ্কার মধ্যেই পাটচাষ করতে হয় তাঁদের।
এই বছর চিত্রটা খানিক পাল্টে গিয়েছে। বন্যার জল গ্রামে ঢুকেছে। ফলে গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় পাট জাগ দেওয়ার জল পেয়ে যাচ্ছেন চাষিরা। তাঁদের দাবি, পাটের বীজ বপন করার পর এবছর পর্যাপ্ত পাট চাষ হয়েছে। সেই পাট জাগ দেওয়ার জলও পর্যাপ্ত মিলেছে। পাট যত ভালোভাবে জাগ দেওয়া যাবে পাটের রঙও ততই উজ্জ্বল হবে। বাজারে ভালো দামও পাওয়া যাবে। এই বন্যাই এবার পাটচাষিদের পরিবারের মুখে হাসি ফোটাবে বলে আশা অনেকের। - নিজস্ব চিত্র