মাতৃসূত্রে বিপুল অঙ্কে বিত্তলাভ হতে পারে। কর্ম ও ব্যবসায় ক্রমোন্নতি। ঈশ্বর চিন্তায় মনে শান্তিলাভ। ... বিশদ
রবিবার সকাল থেকেই রেমাল-আতঙ্ক গ্রাস করে শহরকে। ছুটির দিনের সকালে বাজারহাট সাধারণত জমজমাট থাকে। কিন্তু এদিন বাজারে ভিড় ছিল তুলনামূলক কম। যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা পরপর কয়েকদিনের বাজার সেরে নিয়েছেন। বেলা গড়াতেই বদলাতে শুরু করে আবহাওয়া। বৃষ্টি আর দমকা হাওয়ার দাপট চলে। ধীরে ধীরে ফাঁকা হতে শুরু করে রাজপথ। বিকেলের দিকে শহরের অনেক ব্যস্ত মোড়ও শুনশান হয়ে যায়। বাস, ট্যাক্সির বালাই নেই। অ্যাপ ক্যাব গুটিকয়েক। সুযোগের সদ্ব্যবহার করে বেশি ভাড়া হেঁকেছে বিভিন্ন যানবাহন। দুর্যোগের কারণে এদিন বিকেলে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ব্যাহত হয় মেট্রো পরিষেবা। বিকেল ৫টা বন্ধ রাখতে হয় মহানায়ক উত্তমকুমার থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা।
পূর্বাভাস মতোই আবহাওয়া রূপ বদল করে এদিন। সাগর, কাকদ্বীপ, বকখালি সহ রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকার পাশাপাশি কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে দফায় দফায় বৃষ্টি শুরু হয় দুপুর থেকে। কোথাও মাঝারি, কোথাও ঝিরঝিরে। তবে ঝোড়ো হাওয়ার দাপট ছিল সকাল থেকেই। সন্ধ্যার দিকে বৃষ্টি কমলেও ততক্ষণে রাস্তাঘাট কার্যত জনশূন্য হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে রাস্তা থেকে গায়েব হয়ে যায় বেশিরভাগ গণপরিবহন। একাধিক ট্রেন বাতিল করতে হয়। উল্টোডাঙা, শিয়ালদহ, ধর্মতলায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেন বাড়িমুখী বহু মানুষ। লোকসভা ভোটের শেষ দফার প্রচার তুঙ্গে এখন। আজ, কাল ও পরশু শহরে একাধিক ‘হেভিওয়েট’ নেতানেত্রীর প্রচার কর্মসূচি রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কর্মসূচিও রয়েছে। রেমালের জেরে এসব কর্মসূচির ভবিষ্যৎ নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে।
এদিন সন্ধ্যায় মেট্রোর পরিষেবার একাংশ বন্ধ থাকায় ব্যাপক দুর্ভোগের শিকার হন হাজার হাজার মানুষ। বিকেল ৫টা থেকে ৭টা ২৬ মিনিট পর্যন্ত টালিগঞ্জ থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত পরিষেবা পাননি যাত্রীরা। এই অংশে মেট্রো গিয়েছে মাটির উপর দিয়ে। উল্লেখ্য, আদিগঙ্গার উপর পিলার বসিয়ে গীতাঞ্জলি থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত মেট্রো লাইন বসেছে। এই অংশে একাধিক পিলারে ত্রুটি ধরা পড়ার খবর গত বছর প্রকাশিত হয় ‘বর্তমান’-এ। তারপর নড়েচড়ে বসে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। ঘূর্ণিঝড় চলাকালীন এই অংশে মেট্রো চলাচল কতটা নিরাপদ, তা নিয়ে তখন উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন রেলকর্তারা। এদিন ঝড়ের আগেই যেভাবে মেট্রো পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তাতে এই অংশে কাজের গুণমান নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
গত ৬ মে কালবৈশাখীতে কবি নজরুল মেট্রো স্টেশনের ছাউনির একাংশ ভেঙে পড়ে। কিন্তু এখনও তা মেরামতি হয়নি বলে অভিযোগ। এর মধ্যে এদিন ছাউনির অন্য একটি অংশ বিপজ্জনকভাবে ঝুলতে দেখা যায়। এসব কারণে মেট্রো চললে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে বলে দাবি অপারেশন বিভাগের শীর্ষকর্তার। যাঁদের গাফিতলিতে তিন সপ্তাহেও ছাউনি ঠিক হল না, তাঁদের বিরুদ্ধে শান্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।