মাতৃসূত্রে বিপুল অঙ্কে বিত্তলাভ হতে পারে। কর্ম ও ব্যবসায় ক্রমোন্নতি। ঈশ্বর চিন্তায় মনে শান্তিলাভ। ... বিশদ
২০২০ সালের ২০ মে উম-পুনের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছিল গোটা দক্ষিণবঙ্গ। উপকূলবর্তী এলাকার পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল কলকাতা ও সংলগ্ন জেলাগুলিতে। হাওড়ার বোটানিক্যাল গার্ডেন সাক্ষী থেকেছিল সেই ধ্বংসলীলার। এবার ঘূর্ণিঝড় রেমাল আছড়ে পড়ার আগে এই ঐতিহাসিক উদ্যান নিয়ে চিন্তায় উদ্ভিদ-প্রেমীরা। বিশেষ করে তাঁদের চিন্তা বিখ্যাত বটগাছ নিয়ে। উম-পুনে প্রচুর ক্ষতি হয়েছিল গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে থাকা এই প্রাচীন গাছটির। ঝড়ের দাপটে ভেঙে পড়েছিল একাধিক শাখা-প্রশাখা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বেশ কয়েকটি ঝুরি। তা ঠিক করতে সময় লেগেছিল ছ’মাসের বেশি। সেই থেকেই পরবর্তী পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে শুরু হয় পদক্ষেপ নেওয়া। রেমাল আছড়ে পড়ার আগে যখন চিন্তায় উদ্ভিদপ্রেমীরা, তখন আশার বাণী শুনিয়েছে উদ্যান কর্তৃপক্ষ। জানা গিয়েছে, কয়েকশো মিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা কাণ্ডবিহীন বটগাছটির ভারসাম্য রক্ষা করে তার ঝুরিগুলি। এতদিন নতুন ঝুরি ইচ্ছামতো নেমে আসত মাটিতে। কিন্তু উম-পুনের পর শুরু হয় ‘নিউ রুট প্লেসমেন্ট’-এর কাজ। তাতেই ভারসাম্য বেড়েছে গাছের। ফলে ঝড়ের দাপটে ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই আটকানো যাবে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ।
‘নিউ রুট প্লেসমেন্ট’ আসলে কী? জানা গিয়েছে, উপর থেকে নেমে আসা নতুন ঝুরিগুলি নির্দিষ্ট দূরত্ব বরাবর মাটিতে নামানো হয়েছে বা ‘প্লেস’ করা হয়েছে। যাতে সেই ঝুরিগুলি অনেকটা ঠেসমূল হিসেবে কাজ করতে পারে। ফলে গাছের নিজস্ব ভার ধরে রাখতে পারবে তারা। ফলে ঝড়ের দাপট থাকলেও গাছের কোন অংশ ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম। এ নিয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনের বর্তমান সুপারিনটেনডেন্ট দেবেন্দ্র সিং বলেন, গত বছর আমাদের ১৫ জনের টিম টানা একমাস ধরে এ নিয়ে কাজ করেছে। প্রথমে সার্ভে করা হয়েছে। ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য নতুন ঝুরিগুলিকে নির্দিষ্ট দূরত্ব অন্তর মাটিতে রোপণ করা হয়েছে। এর আগে বেশ কয়েকবার ছোটখাট ঝড় হলেও তাতে ক্ষতি হয়নি, তা পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে। এই নতুন পদ্ধতি ‘দি গ্রেট ব্যানিয়ান ট্রি’-র ‘ব্যালান্স’ অনেকটাই বাড়ানো গিয়েছে। রেমাল আছড়ে পড়ার পর কী অবস্থা হয়, এখন সেটাই দেখার।
শুধুমাত্র বিখ্যাত বটগাছ নয়, গার্ডেনের অন্যান্য গাছকে বাঁচাতেও পদক্ষেপ করা হয়েছে। বিশেষ করে যেগুলির কাণ্ড দুর্বল বা একপাশে হেলে গিয়েছে, সেগুলিকে দড়ি দিয়ে বাঁধা হয়েছে, যাতে ঝড়ে সেগুলি উল্টে না পড়ে। প্রয়োজন অনুযায়ী গাছের ডাল ছাঁটা হয়েছে। এছাড়াও, বোটানিক্যাল গার্ডেনের চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ঝড়ে গাছের ক্ষতি হলে যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সেকারণে তাঁদের রাখা হচ্ছে। এছাড়াও গার্ডেনের বিভিন্ন জায়গায় শেড এবং ঘর বানানো হয়েছে। সেগুলিকেও ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে। নিজস্ব চিত্র