বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দেশ

সীতারাম ইয়েচুরি (১৯৫২-২০২৪)

নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: ১৯৭৭ সাল। ইন্দিরা গান্ধীর বাসভবন। দিল্লি পুলিস, পড়ুয়া, আন্দোলনকারীতে ছয়লাপ পুরো চত্বর। পাশাপাশি দাঁড়িয়ে দু’জন। ঝাঁকড়া চুলের যুবকের পরনে সাদা কুর্তা-পাজামা। যুবকের হাতে একটি কাগজ। কিছু পড়ছেন। পাশে দাঁড়িয়ে যিনি, তাঁর পরনে শাড়ি। হাত দু’টো বুকের কাছে জড়ো করা। মাথাটা ঈষৎ হেলানো। সিগনেচার স্টাইলের কাঁচা পাকা চুল। মন দিয়ে শুনছেন যুবকের বক্তব্য। ঝাঁকড়া চুলের ওই যুবকটির নাম সীতারাম ইয়েচুরি। জেএনইউ ছাত্র সংসদের শীর্ষ নেতা। পাশের জন ইন্দিরা গান্ধী। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। ভোটে হারলেও আঁকড়ে রয়েছেন আচার্যের পদ। ইয়েচুরির নেতৃত্বাধীন ছাত্র সংসদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের রদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে ইন্দিরা গান্ধীকে। চাপের মুখে ইন্দিরা ইস্তফাও দেন। 
এহেন হাল না ছাড়ার প্রসঙ্গটি আবার মনে পড়বে ২০১৬ সালে। পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের আবহ। বামেদের একক সংগঠন মুখ থুবড়ে। বাংলায় জোর হাওয়া উঠেছে কং-বাম সখ্যের পক্ষে। কারাতের নেতৃত্বে বেঁকে বসেছে কট্টরপন্থী দক্ষিণী লবি। যুক্তি, সিপিএমের পার্টি কংগ্রেসে গৃহীত দলীয় লাইনে বলা আছে, বিজেপি এবং কংগ্রসের সঙ্গে সমদূরত্বের লাইন নিতে হবে। কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং বসল দিল্লিতে। পরের পর যুক্তিবাণ ছুড়লেন ইয়েচুরি এবং দলের বঙ্গ ব্রিগেড। বলা হল, রাজ্যে রাজ্যে পরিস্থিতি আলাদা। তা মানতে হবে। বৈঠক গড়ালো প্রায় মাঝরাত পর্যন্ত। পরের দিন দল ঘোষণা করল, বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা করবে সিপিএম তথা বামেরা। সিপিএমের লিবারাল মুখ হলেন সীতারাম। তাই অনায়াসে তাঁকে দেখা যায় মোদি থেকে মমতা, সোনিয়া থেকে উদ্ধব— সকলের সঙ্গে সমান স্বচ্ছন্দ আলাপচারিতায়। 
১২ আগস্ট, ১৯৫২ সালে জন্ম। বাংলা বলতেন ঝরঝরে ভাষায়। তাঁর প্রথম স্ত্রী বাঙালি ছিলেন। এ ভাষায় চর্চা আরও খাঁটি হয়েছিল সাংসারিক জীবনে। অত্যন্ত ঘনিষ্ঠতা ছিল জ্যোতি বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যদের সঙ্গে। অল সেইন্টস হাইস্কুল থেকে বেরিয়ে ভর্তি হন সেন্ট স্টিফেন্স কলেজে। অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনাই লক্ষ্য। ১৯৭৪ সালে দিল্লির জেএনইউয়ে ছাত্র আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। তিনি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে প্রথম শ্রেণিতে পাস করেছিলেন। জরুরি অবস্থার সময় আন্দোলন করে জেলে যান। ফলে অর্থনীতিতে তাঁর পিএইচডি সম্পূর্ণ হয়নি।
বুদ্ধদেববাবু যেদিন মারা যান, সীতারাম ইয়েচুরি তখন দিল্লি এইমসে ভর্তি। হাসপাতাল থেকেই ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছিলেন। কলকাতায় থাকতে না পারার জন্য খেদোক্তি বারবার জানিয়েছিলেন। কাজকে প্রাধান্য দিয়েছেন সর্বাগ্রে। ২০২১ সালে ছেলে আশিসের অকাল মৃত্যুর পরেও তাই বেশিদিন পার্টি অফিস এড়িয়ে থাকতে পারেননি। ১৯৭৫ সালে সিপিএমে যোগদান করেন। দলের পলিটব্যুরো সদস্য হন ১৯৯২ সালে। ২০১৫ সালে তিনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি ওই পদেই ছিলেন। রাজ্যসভার সদস্য হন ২০০৫ সালে। ২০১৭ পর্যন্ত ছিলেন উচ্চকক্ষের সদস্য। তাঁকে আর তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যসভায় পাঠায়নি সিপিএম। 
প্রকাশ কারাতরা যুক্তি দিয়েছিলেন, এটাই সিপিএমের নিয়ম। দু’বারের বেশি কোনও দলীয় নেতা রাজ্যসভায় যান না। পরমাণু বিতর্কে ইউপিএর হাত যখন ছাড়ল সিপিএম-বাম, তখন দলের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাত। দলীয় স্তরে এহেন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছিলেন ইয়েচুরি। গ্রাহ্য হয়নি। পরে কং-সখ্যে কেন্দ্রীয় কমিটিকে রাজি করিয়ে ইয়েচুরি আবারও প্রমাণ করেছেন, তিনি সেইসময় ঠিক ছিলেন। 
সিপিএমের এক তৎকালীন তরুণ তুর্কি নেতা তখন সদ্য যোগ দিয়েছেন রাজ্যসভায়। ইয়েচুরির সঙ্গে দেখা সংসদের করিডরে অথবা তৃতীয় তলায় যাওয়ার লিফটে। ওই তরুণ তুর্কি নেতা আর্জি জানালেন, তিনি সংসদীয় রাজনীতির কিছুই বোঝেন না। সিনিয়র হিসেবে কমরেড ইয়েচুরি যেন তাঁকে গাইড করেন। ইয়েচুরি বলেছিলেন, তুমি ১০০টি ভুল করলেও আমি শুধরে দেব। কিন্তু আমায় কথা দিতে হবে, তুমি কোনও ভুল একবারের জন্যও রিপিট করবে না। আমৃত্যু সীতারাম ইয়েচুরির যাপনে জড়িয়েছিল এই ‘মোটো’ই।
‘এক্স’ হ্যান্ডেলে এই ছবি পোস্ট করেছেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ।
4Months ago
কলকাতা
রাজ্য
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি প্রচেষ্টায় সাফল্যের সম্ভাবনা। ন্যায্য অর্থ সঠিক সময়ে নাও পেতে পারেন।  অর্থপ্রাপ্তির যোগ...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৫.৮৩ টাকা৮৭.৫৭ টাকা
পাউন্ড১০৪.০৫ টাকা১০৭.৭৪ টাকা
ইউরো৮৭.৩০ টাকা৯০.৬৫ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা