সংবাদদাতা, সিউড়ি: জেলায় আগ্নেয়াস্ত্র প্রবেশ রুখতে নাকা চেকিং শুরু পুলিসের। মূলত ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে লিঙ্ক থাকা জাতীয় সড়কেই এই চেকিং করা হয়েছে। যদিও এই বিশেষ সারপ্রাইজ নাকা চেকিংয়ে কোনও অস্ত্র বা বিস্ফোরক উদ্ধার করতে পারেনি পুলিস। তবে পুলিসের এই নাকা চেকিংকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ। কারণ মালদহ, মুর্শিদাবাদে যে ধরনের শ্যুট আউটের ঘটনা ঘটেছে, এই জেলাতেও অতীতে এই ধরনের ঘটনার দৃষ্টান্ত রয়েছে। তাই যাতে আগামী দিনে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে, তার জন্য পুলিসের তৎপরতা বলে জানা গিয়েছে। পুলিসের এই ভূমিকায় দুষ্কৃতীরাও বেশ কিছুটা সতর্ক বা সাবধান হবে বলেই মনে করছে আম জনতা।
শুক্রবার রাত্রি দশটার পর জেলাজুড়ে ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কে নাকা চেকিং করে পুলিস। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত ঝাড়খণ্ডের লিঙ্ক থাকা এই জেলার রাজ্য সড়কের সঙ্গে জাতীয় সড়কের যোগসূত্র থাকা রাস্তাগুলিতেই এই ধরনের চেকিং হয়েছে। এদিন রাতে সিউড়িতে লম্বোদরপুরে জাতীয় সড়কের মোড়ে বিশেষ নাকা চেকিং হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিস সুপার আমনদীপ সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। প্রতিটি সরকারি, বেসরকারি গাড়ি, লরি, পণ্যবাহী গাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। কেন এই আচমকা তল্লাশি অভিযান, তাই নিয়ে পুলিসের দাবি, এটা সারপ্রাইজ হিসাবে করা হচ্ছে। তবে বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের মালদহ, মুর্শিদাবাদে এর আগে বেশকিছু শ্যুট আউটের ঘটনা ঘটেছিল। তারপর এই জেলাতেও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারেরও ঘটনা ঘটে। তাই এই জেলাতে আগ্নেয়াস্ত্র, বিভিন্ন ধরনের বিস্ফোরক যেমন ডিটোনেটর, জিলোটিন স্টিক, বোমা তৈরি মশলা সহ মাদক, গাঁজা, কার্ডামম ইত্যাদির প্রবেশ ও পাচার রুখতে পুলিসের এই বিশেষ নাকা অভিযান করা হয়। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেও রামপুরহাট মহকুমা এলাকার একটি খাদানের কাছে একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক বেআইনিভাবে মজুত থাকার সময় পুলিস সেগুলি উদ্ধার করে। পুলিসের অনুমান, এই সব বিস্ফোরক বাংলাদেশ থেকে ছাড়া পাওয়া জঙ্গিরাই কেনার চেষ্টা করছে। ঝড়খণ্ড থেকে এই বিস্ফোরক হাত বদল হয়ে এবং বীরভূমকে করিডর হিসাবে ব্যবহার করে মুর্শিদাবাদ হয়ে বাংলাদেশে যাচ্ছে বলে পুলিসের অনুমান। সেই ঘটনা আঁচ করেই এবার ঝাড়খণ্ড লিঙ্কের রাস্তায় নাকা করছে পুলিস। সেই কারণেই এদিন সিউড়ির লম্বোদরপুরে আচমকা নাকা চেকিং হয়। কারণ এই লম্বোদরপুর জাতীয় সড়কের মোড়ে ঝাড়খণ্ডের দুমকা, রানিশ্বর থেকে সীমানা পেরিয়ে একটি রাস্তা উঠছে জাতীয় সড়কে। তাছাড়াও জাতীয় সড়কটি দক্ষিণ ও উত্তরবঙ্গের সংযোগের একটি অন্যতম রাস্তা। সেই কারণেই প্রাইভেট চার চাকা গাড়ি, লরি, ছোট পণ্য বোঝাই গাড়ি— সব কিছুতেই তল্লাশি চালায় পুলিস। শুধু তাই নয় চিকিৎসক, পুলিস, সাংবাদিক সহ যেকোনও লোগো লাগানো গাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। এছাড়াও রামপুরহাট মহকুমার একাধিক জায়গায় জাতীয় সড়কে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিস। এই প্রসঙ্গে জেলা পুলিস সুপার আমনদীপ বলেন, এই নাকা চেকিং গোটা জেলাতেই বিভিন্ন রাস্তায় করা হয়েছে। যদিও একদিনের এই চেকিংয়ে কিছু পাওয়া যায়নি। আমরা যেকোনও সময় এই ধরনের নাকা করব।