সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: বাজারের কোথাও হোটেলে ভাজা হচ্ছে পরোটা, চলছে ভাতের হোটেল, কোথাও লুচি,ডালপুরি, কোথাও তৈরি হচ্ছে রুটি বা চা। এরই মধ্যে ঝুলছে জট পাকিয়ে থাকা বিদ্যুতের তার। নবদ্বীপ রাজার বাজারে গেলে এমনই দৃশ্য চোখে পড়বে। বাজারে প্লাস্টিকের থালা, গ্লাস, কৌটো, রেডিমেড কাপড় সহ নানান দাহ্য জিনিস বিক্রি হচ্ছে। দেখেশুনে অনেকেই বলছেন,জতুগৃহ রাজার বাজার।চিন্তায় স্থানীয় বাসিন্দা থেকে ব্যবসায়ীরা। অনেকেই মনে করছেন, উনুনের আগুন আর প্লাস্টিকের দোকান,পাশাপাশি থাকায় যে কোনও মুহূর্তে হতে পারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। এই আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে রাজার বাজার থেকে গোঁসাই বাজারে। এমনকী বিপন্ন হতে পারে পোড়ামাতলাও। সবকিছু জেনেও উদাসীন ব্যবসায়ী সমিতি, দমকল থেকে পুলিস ও প্রশাসন।
নবদ্বীপ রাজার বাজার, গোঁসাই বাজারে ঘিঞ্জি এলাকায়কোথাও প্লাস্টিকের থালা, গ্লাস, বাটি বিভিন্ন জিনিসের দোকান। কোথাও আতশবাজি,দশকর্মা থেকে মুদিখানা, রেডিমেড সহ বিভিন্ন দাহ্য পদার্থের দোকান। অধিকাংশ দোকানেই ছাদে প্লাস্টিকের ত্রিপল। প্লাস্টিকের পাশেই আগুন জ্বালিয়ে চলছে পরোটা, চায়ের দোকান,ভাতের হোটেল। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা মনে করছেন, কোনও কারণে আগুন লাগলে নিমেষের শেষ হয়ে যাবে সব। কেননা প্রাচীন এই শহরের রাস্তাঘাট খুবই সংকীর্ণ। দমকল কেন্দ্র থাকলেও সংকীর্ণ রাস্তা দিয়ে দমকলের গাড়ি দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারবে না। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, রাজার বাজারের রাস্তা দিয়ে অনেক সময় যাতায়াত করতেও সমস্যায় পড়তে হয়। বাজারের ভেতরে আগুন জ্বালিয়ে দোকান চালানো তো ভয়ঙ্কর।
নবদ্বীপ ব্যবসায়ী সমিতির এক কর্তা বলেন, রাজার বাজারে৭০ থেকে ৮০টি দোকান আছে। সেই বাজার তো এখনজতুগৃহ। এখানে অনেক ছোট ছোট গোডাউনও রয়েছে। সেগুলি নানারকম দাহ্য পদার্থে ভর্তি। যদি কোনওদুর্ঘটনা ঘটে যায়, কিচ্ছু রক্ষা করা যাবে না।এব্যাপারে কোনও চিন্তা ভাবনা, আলোচনা হয় না। কোনও উৎসবের আগে প্রশাসনিক মিটিংয়ে শুধু আলোচনা হয়। সেই সময়ে কিছু প্রশাসনিক নির্দেশিকা দেওয়া ছাড়া আর কিছুই হয়না।
প্রাচীন এই শহরের রাস্তাঘাট তেমন প্রশস্ত নয়। দমকলের গাড়ি যাওয়ার মতো পরিসর নেই অধিকাংশ রাস্তাতেই।
নবদ্বীপ দমকল বিভাগের অফিসার ইনচার্জ তন্ময় কর্মকার বলেন, এব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলেঅভিযুক্তদের সচেতন করা হবে। এর আগেও যেখান থেকে অভিযোগ পেয়েছি তাদেরসচেতন করেছি। নবদ্বীপ পুরসভার চেয়ারম্যান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, বাজারের ভেতর যাঁরা এধরনের কাজ করছেন তাদের বিরুদ্ধে ইমিডিয়েট ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু বাজারেই নয়, এই শহরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার পাশে অনেক ব্যবসায়ী উনুন বা গ্যাস জ্বালিয়ে লুচি, সিঙ্গারা, মিষ্টি তৈরি করছেন। পুরসভার পক্ষ থেকে সত্ত্বর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। -নিজস্ব চিত্র