নিকটজনের স্বাস্থ্য সমস্যায় মানসিক অস্থিরতা। মুদ্রণ বা সংবাদপত্রের ব্যবসা,বৃত্তি শিক্ষাকেন্দ্রের পরিচালনায় সাফল্য। ... বিশদ
ইন্দোর, ৭ জানুয়ারি: জয়ের ধ্বজা উড়িয়ে নতুন বছর শুরু হল ‘টিম ইন্ডিয়া’র। মঙ্গলবার, হোলকার স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টি-২০ ম্যাচে প্রতিপক্ষকে ৭ উইকেটে চূর্ণ করল বিরাট ব্রিগেড। গুয়াহাটিতে প্রথম ম্যাচ ভেস্তে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। তাই এই জয় তৃতীয় তথা অন্তিম ম্যাচে ভারতকে বাড়তি অক্সিজেন জোগাবে।
টস জেতার পর ক্যাপ্টেন কোহলি শ্রীলঙ্কাকে ব্যাট করার আহ্বান জানান। তিনি জানতেন, এই পিচে রান তাড়া করতে সুবিধা হবে। কোহলির পরিকল্পনাই সফল হয়েছে। প্রত্যাশা মতোই ভারতীয় দল মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের নবনির্মিত এই স্টেডিয়ামে অপরাজিত তকমা ধরে রাখতে সফল হয়েছে। পেস ও স্পিনের যুগলবন্দিতে শ্রীলঙ্কাকে ১৪২ রানে আটকে রেখে ব্যাটসম্যানদের কাজটা অনেক সহজ করে দিয়েছিলেন সাইনি, শার্দুল, কুলদীপরা। তার উপর জয়ের মিনার গড়েন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা।
ভারতের দুই ওপেনার লোকেশ রাহুল ও শিখর ধাওয়ান দুর্দান্ত সূচনা করেন। ওপেনিং জুটিতে তাঁরা তোলেন ৭১ রান। জয়ের অর্ধেক পথ তাঁরা অতিক্রম করে ফেলেছিলেন। ঠিক তখনই লোকেশ রাহুল ৪৫ রানে হাসারাঙ্গার গুগলিতে পরাস্ত হয়ে বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন। ছ’টি বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন লোকেশ। তবে এই ম্যাচে বাড়তি নজর ছিল শিখরের উপর। চোটের কারণে বারবার তাঁকে দলের বাইরে যেতে হয়েছে। রহিত শর্মা না খেলায় তিনি ওপেন করার সুযোগ পেয়েছেন। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে শুরু করেও শিখর কিন্তু ৩২ রানে লেগ বিফোর হয়ে যান। আম্পায়ার আউট না দেওয়ায় শ্রীলঙ্কা রিভিউ নিয়ে সাফল্য পায়। শিখর যদি পরের ম্যাচে বড় রান না করতে পারেন তাহলে টি-২০ বিশ্বকাপ দলে তাঁর জায়গা পাওয়া কঠিন হবে।
ব্যাটিং অর্ডারে ফের পরীক্ষা চালাল ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। সাধারণত তিনে ব্যাট করেন ক্যাপ্টেন কোহলি। কিন্তু এদিন শ্রেয়াস আয়ারকে তাঁর জায়গায় পাঠানো হয়। তবে সিদ্ধান্তটা কাজেও দিয়েছে। শ্রেয়াস ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ২৪ বলে ৩৪ রান তোলেন। রহিত না থাকায় পুরো আলোটাই শুষে নিয়েছেন কিং কোহলি। ব্যাট হাতে তিনি নামতেই গর্জে ওঠে গ্যালারি। দর্শকদের হতাশ করেননি ভিকে। তৃতীয় উইকেটে শ্রেয়াসের সঙ্গে ৫১ রান যোগ করেন বিরাট। ১৭ বলে একটি বাউন্ডারি ও দু’টি ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে তিনি ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন। ছক্কা হাঁকিয়ে বিরাট জয়ের কড়ি জোগাড় করে নেন ১৫ বল বাকি থাকতেই। সেই সঙ্গে তিনি টি-২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রহিতকে টপকে ফের সর্বাধিক রানের মালিক হয়ে গেলেন। ৯৬টি ইনিংসে রহিতের রান ২৬৩৩। ৭১টি ইনিংসে কোহলি পৌঁছে গেলেন ২৬৬৩ রানে। চোট সারিয়ে দীর্ঘদিন পর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন স্পিডস্টার যশপ্রীত বুমরাহ। তবে ফর্মে ফিরতে তাঁর আরও কিছুটা সময় লাগবে। একটি উইকেট পেলেও ৪ ওভারে ৩২ রান দিয়েছেন বুমরাহ। তবে তাঁকে এদিন ছাপিয়ে গিয়েছেন ভারতের আরও দুই পেসার শার্দুল ঠাকুর ও নবদীপ সাইনি। দু’জনে মিলে তুলে নিয়েছেন পাঁচটি উইকেট। ১৯তম ওভারে শ্রীলঙ্কার তিন ব্যাটসম্যানকে ফেরান শার্দুল। তবে তরুণ পেসার নবদীপ সাইনি গতিতে পরাস্থ করেন দ্বীপরাষ্ট্রের ব্যাটসম্যানদের। ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে সাইনি তুলে নেন দু’টি মূল্যবান উইকেট।
তবে ভারতকে প্রথম সাফল্যটি এনে দেন স্পিনার ওয়াশিংটন সুন্দর। তাঁর বলে ২২ রানে আউট হন অভিষ্কা ফার্নান্দো। শুরুটা দেখে অবশ্য মনে হয়নি শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং আচমকা এভাবে ভেঙে পড়বে। দানুষ্কা গুণতিলকাকে (২০) কার্যত দাঁড় করিয়ে বোল্ড করেন সাইনি। অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে বড় রান করার চেষ্টা করেন কুশল পেরেরা। তবে দলের বাকি ব্যাটসম্যানদের থেকে তিনি সেভাবে কোনও সাহায্য পাননি। চায়নাম্যান কুলদীপ যাদব শ্রীলঙ্কার মিডল অর্ডারে আঘাত হানেন ওশাদা ফার্নান্দো (১০) ও কুশল পেরেরাকে (৩৪) পর পর আউট করে।
ভারতীয় পেসারদের দাপটে শ্রীলঙ্কার লোয়ার মিডল অর্ডার মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। কামব্যাক ম্যাচে বুমরাহর প্রথম শিকার দাসুন শানাকা (৭)। তার আগেই অবশ্যই রাজাপাক্ষেকে সাজঘরে ফেরান সাইনি। নিয়মিত উইকেট পড়ায় শ্রীলঙ্কার রান রেটও দ্রুত কমতে থাকে। ডেথ ওভারে তারা কোনও ফায়দাই তুলতে পারেনি। শেষ পাঁচ ওভারে দ্বীপরাষ্ট্রটি ৩৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়েছে। তার মধ্যে ১৯তম ওভারে শার্দুল দ্বিতীয় বলে আউট করেন ধনঞ্জয় ডি’সিলভাকে (১৭)। শেষ দু’টি বলে তিনি তুলেল নেন উদানা (১) ও মালিঙ্গার (০) উইকেট।