বিমা, শেয়ার প্রভৃতি ক্ষেত্র থেকে ধনাগমের যোগ। স্বামী, সন্তান ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্র এক প্রকার শুভ ... বিশদ
এবার ইস্ট বেঙ্গলে ভারতীয় রিক্রুট যে অতি সাদামাটা হয়েছে তা বুঝতে ‘অভিজ্ঞ’ আলেজান্দ্রো ছ’মাস কাটিয়ে ফেললেন! প্রশ্ন উঠছে, তবে তিনি কীরকম কোচ? লাল-হলুদের স্বদেশি ব্রিগেড যে অচল তা তো কলকাতা লিগের মাঝপথেই বোঝা গিয়েছিল। গত ১৫ মাস আলেজান্দ্রো ইস্ট বেঙ্গলের কোচ। দু’টি ডার্বি জেতা ছাড়া তাঁর কোনও সাফল্য নেই। ট্রফির ভাঁড়ার শূন্য। আটজন ফুটবলার তিনিই এনেছেন। ফুটবলার চয়নের ব্যাপারে কারও পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি। আসলে কোয়েসের অধিকাংশ লোকজনের ভারতীয় ফুটবল নিয়ে সম্যক ধারণা নেই। আর সেই সুযোগটি কাজে লাগিয়েছেন বুদ্ধিমান আলেজান্দ্রো। তাঁর আনা আট ফুটবলারের মধ্যে বোরহা গোমেজ আর মেক্সিকোর স্ট্রাইকার এনরিকে ভালো মানের।
চলতি মরশুমে দেখা গেল, নিজের আনা বোরহাকে চোট পাওয়ার পর তিনি পাঁচ মাস বয়ে বেড়ালেন? অথচ গত মরশুমে দলে সেট হওয়া আল আমনা চোটের জন্য এক মাস মাঠের বাইরে যেতেই তাঁকে ছেঁটে ফেলেছিলেন আলেজান্দ্রো। সেপ্টেম্বরের গোড়ায় লিগের একটি ম্যাচে বোরহা লিগামেন্টে চোট পান। কলকাতায় তিন সপ্তাহ রাখার পর অক্টোবরের গোড়ায় বোরহাকে স্পেনে আর্থোস্কোপি করতে পাঠিয়ে দেন। স্পেনের চিকিৎসা পদ্ধতি যতই আধুনিক হোক না কেন, অক্টোবরে আর্থোস্কোপির পর তাঁর চলতি মরশুমে মাঠে ফেরা যে সম্ভব নয় তা বুঝতে আলেজান্দ্রোর লেগে গেল পাঁচ মাস! কার স্বার্থে? এই প্রশ্নের কোনও উত্তর নেই।
মঙ্গলবার কোয়েসের পক্ষ থেকে জানানো হয় চার বছরের ছেলের গুরুতর অসুস্থতার খবর পেয়ে আচমকা দেশে ফিরে গিয়েছেন স্প্যানিশ স্টপার বোরহা গোমেজ। ইস্ট বেঙ্গলের পক্ষ বোরহার ছেলের দ্রুত আরোগ্য প্রার্থনা করা হচ্ছে।’ শোনা যাচ্ছে, বোরহার ছেলের মাথায় ম্যালিগন্যান্ট টিউমার হয়েছে। অবস্থা খুবই উদ্বেগজনক। বোরহা কবে ফিরবেন তা কোয়েস কর্তারা জানাননি। অন্দরমহলের খবর, বোরহা চলতি মরশুমে আর ইস্ট বেঙ্গলে ফিরছেন না। তাঁকে পরে রিলিজ দেওয়া হবে। মঙ্গলবার প্র্যাকটিসের পর আলোচনার সময়ে আলেজান্দ্রো ক্লাবের শীর্ষ কর্তাদের তা জানিয়ে দেন। ইস্ট বেঙ্গলের ফুটবল সচিব বলেন,‘বোরহার জায়গায় আমরা একজন বিদেশি স্ট্রাইকারকে নিতে বলেছি। উনি তা নিজেই খুঁজে নেবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। যার অর্থ, বিদেশি আনার ব্যাপারটি সুকৌশলে নিজের হাতেই রেখে দিলেন আলেজান্দ্রো।
ভারতীয় স্ট্রাইকার হিসেবে এটিকে’র বলবন্ত সিংয়ের নাম প্রবলভাবে উঠে আসছে। কারণ এটিকে’তে এই পাঞ্জাব-তনয় সুযোগ পাচ্ছে না। কোয়েস কর্তারা বলছেন, ‘বলবন্তকে একবার বাজিয়ে দেখা হবে। তবে আই লিগে ও খেলতে রাজি হলে। বিশেষ করে ইস্ট বেঙ্গলে এলে ম্যাচ প্র্যাকটিস পাবে।’ স্বয়ং বলবন্তের মন্তব্য, ‘আমার কাছে ইস্ট বেঙ্গলের কোনও প্রস্তাব এখনও নেই।’ আসলে বলবন্তের এজেন্ট তাঁকে আই লিগে ফিরতে দিতে চান না। তাঁর ধারণা, ইস্ট বেঙ্গলে ফিরলে আগামী মরশুমে বলবন্তের দর কমবে। ওড়িশা এফসি আইএসএলের শেষ চারের যাওয়ার লড়াইয়ে আছে। তারাও বলবন্তকে অফার দিয়েছে। কিন্তু ডেভিড উইলিয়ামস চোট পাওয়ায় এটিকে বলবন্তকে ছাড়তে চাইছে না। সব মিলিয়ে ইস্ট বেঙ্গল কর্তারা সক্রিয় হলেও বলবন্ত সিংকে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। এদিকে, কোয়েসের কো-অর্ডিনেটরের প্রশ্ন,‘ বিদেশি বা স্বদেশি, যে ফুটবলারই হোক না কেন, তিনি যে দলের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিতে পারবেন তার কী গ্যারান্টি রয়েছে? বিশেষ করে এখন সবার চোখ ১৯ জানুয়ারি ডার্বির দিকে। ডার্বির আগে বিরাট অর্থ দিয়ে প্লেয়ার নিয়ে খেলিয়ে দেওয়া ঝুঁকি হয়ে যাবে।’ আসলে খেলোয়াড় পরিবর্তন হলেও কোয়েস বেশি অর্থ খরচ করতে চাইছে না। কোয়েস ইস্ট বেঙ্গল নিয়ে তেমন ভাবার সময় নেই টিমের সিইও’র। আই লিগের পরেই লাল-হলুদের সঙ্গে কোয়েসের সম্পর্ক শেষ হয়ে যাচ্ছে। তবে কোচ আলেজান্দ্রো ক্রমশই ইস্ট বেঙ্গল কর্তাদের সঙ্গে দূরত্ব কমিয়ে নিচ্ছেন। ফলশ্রুতি এই প্রথম মঙ্গলবার তিনি কর্তাদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করলেন। কারণ নতুন মরশুম যে আসন্ন।
এদিকে, বোরহা দেশে চলে যাওয়ায় রক্ষণ নিয়ে প্রবল সমস্যায় ইস্ট বেঙ্গল। এরমধ্যে কাসিম আইদারা ও মার্তি ক্রেসপি তিনটি করে হলুদ কার্ড দেখে ফেলেছেন। ১৫ জানুয়ারি কল্যাণীতে গোকুলাম ম্যাচে কার্ড দেখলেই ডার্বিতে তাঁরা খেলতে পারবেন না। তা নিয়ে চিন্তায় ম্যানেজমেন্ট। তবে চিকেন পক্স সারিয়ে গোকুলাম ম্যাচে দলে ফিরবেন উইং হাফ পিন্টু মাহাতা।