কাজকর্ম ও উচ্চশিক্ষায় দিনটি শুভ। ব্যবসার উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ। আয় বাড়বে। ... বিশদ
ঘড়ির কাঁটা ১২টা ছুঁই ছুঁই। মেঘলা আকাশ আর ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে এদিন গরমের তেজ তেমন ছিল না। উত্তর রানিচক গ্রামে রাস্তার পাশে তৃণমূলের কর্মী, সমর্থক, সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঠায় দাঁড়িয়ে পঁচাশি বছরের বৃদ্ধ মুরারীমোহন দাস। হাতে রজনীগন্ধার গোড়ে মালা। প্রার্থী দেবাংশুকে নিজের হাতে মালা পরিয়ে আবেগে টেনে নিলেন বুকে। তার কিছুক্ষণ আগেই বরদা গ্রামে আশি ছুঁই ছুঁই সাবেরা বিবি, তিরাশি বছরের গোবিন্দপুরের বাণীতোষ দিন্দা প্রাণভরে আশীর্বাদ করলেন তৃণমূলের তরুণ প্রার্থীকে। এদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত টোটো চড়ে গ্রাম পরিক্রমা, বৈঠকী সভা, সাংগঠনিক মিটিং চলে একের পর এক। বরদার পঞ্চাননতলায় মন্দিরে পুজো দিয়ে এদিন প্রচার শুরু করেন দেবাংশু। সঙ্গে ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অশোক মিশ্র, ব্লক সভাপতি পার্থ বটব্যাল প্রমুখ। বরদা, আকুবপুর, কালীনগর, ভূপতিনগর, উত্তর রানিচক, চৈতন্যপুর, কেশবপুর, গোবিন্দপুর সহ ১৭-১৮টি বুথ এলাকায় টোটো চেপে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ভোট প্রচার করেন তৃণমূল প্রার্থী। বিকেলে আশদতলিয়া অঞ্চলে জনসংযোগ সেরে সন্ধেয় কুঁকড়াহাটির গাজিপুরে পথসভা করেন তিনি।
এদিন দেবাংশু মূলত সুতাহাটায় বিজেপির গড়ে দিনভর প্রচার চালিয়েছেন। চৈতন্যপুর বিজেপির দখলে রয়েছে। কুঁকড়াহাটি এলাকায় বিজেপি পঞ্চায়েতে শক্তি সঞ্চয় করলেও তৃণমূল শেষমেশ দখল নিয়েছে পঞ্চায়েতের। তবে তিনটি অঞ্চলেই দেবাংশুর প্রচারে ব্যাপক সাড়া লক্ষ্য করা গিয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অশোক মিশ্রর নিজের গ্রাম এলাকা চৈতন্যপুরে তৃণমূল পঞ্চায়েত ভোটে পিছিয়ে। সেজন্য লোকসভা ভোটে ওই এলাকায় লিড দিতে মরিয়া প্রচার চালাচ্ছেন তিনি। অশোক বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচিতে বিজেপির দখলে থাকা চৈতন্যপুর গ্রাম পঞ্চায়েতেই সবচেয়ে বেশি ৩৭ লক্ষ টাকার রাস্তা তৈরি হয়েছে। উন্নয়নের কাজ দেখেই মানুষের এমন স্বতঃস্ফূর্ত আবেগ। দেবাংশু গ্রামে ঢুকতেই মহিলারা ছুটে এসেছেন ফুল নিয়ে, কেউ শাঁখ বাজাচ্ছেন আনন্দে।
রাজনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ, তৃণমূল বা সিপিএমের ভোট প্রচারে যে আবেগ মানুষের মধ্যে দেখা যাচ্ছে, বিজেপির ক্ষেত্রে সেটা অনুপস্থিত। প্রধান, পঞ্চায়েত সদস্যদের সঙ্গে সংগঠনের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। পুরনো নেতা কর্মীদের এবারও মাঠে নামাতে পারছে না বিজেপি। ফলে পঞ্চায়েতে এগিয়ে থাকার সুবিধে লোকসভায় কতটা নিতে পারবে, তা নিয়ে বিজেপি রীতিমতো ধন্দে। বিজেপির জেলা নেতা সোমনাথ ভুঁইয়া বলেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার একটা ফ্যাক্টর ঠিকই, তবে মোদিজির গ্যারান্টি হলদিয়ার যুব সমাজে দারুণ প্রভাব ফেলেছে।-নিজস্ব চিত্র