বিমা, শেয়ার প্রভৃতি ক্ষেত্র থেকে ধনাগমের যোগ। স্বামী, সন্তান ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্র এক প্রকার শুভ ... বিশদ
তদন্তকারীদের দাবি, ভল্টা ঠিকমতো হাঁটাচলা করতে না পারলেও তার হাত অনেকটাই লম্বা। সেকারণে সে বহু বছর ধরেই এই কারবার চালিয়ে আসছে। বাংলাদেশেও তার নেটওয়ার্ক যথেষ্টই মজবুত। সেখানেও আশ্রয় পেতে তার অসুবিধা হয় না।
পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ভল্টার গ্যাংয়ে বেশ কিছু সক্রিয় সদস্য রয়েছে। কার কাছে কীভাবে টাকা পৌঁছবে তা তারা ঠিক করে। তাছাড়া পুলিসের চোখে ধুলো দিতে তারা নতুন নতুন ক্যারিয়ার নিয়োগ করে। নাবালক এবং মহিলাদেরও তারা কমিশনের বিনিময়ে এই কাজে নামাচ্ছে। এক আধিকারিক বলেন, ভল্টাকে গ্রেপ্তার করতে পারলেই এই কারবারে অনেকটাই পর্দা ফাঁস করা যাবে। তবে এই কারবারে তার মতো আরও কয়েকজন মাস্টারমাইন্ড রয়েছে। পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে মূলত দু’হাজার টাকার জালনোট বেশি আসে। সম্প্রতি মুর্শিদাবাদ জেলায় দু’হাজার টাকার জালনোট উদ্ধার হয়েছে। রবিবার রাতে ফরাক্কার আঁকুড়া সেতুর কাছে দু’হাজার টাকার ১৭৫টি জালনোট সহ পুলিস এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। তার বাড়ি মালদহের বৈষ্ণবনগর থানা এলাকায়। জঙ্গিপুরের পুলিস সুপার ওয়াই রঘুবংশী সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশ কয়েকজনের নাম মিলেছে। তাদের খোঁজেও তল্লাশি চলছে। পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় ৪ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকার জালনোট উদ্ধার হয়েছিল। এছাড়া নভেম্বর মাসে সূতির সাজুরমোড় থেকে উদ্ধার হয় দু’লক্ষ ১০ হাজার টাকা। সেগুলিও সবই দু’হাজার টাকার জালনোট ছিল।
পুলিসের দাবি, আগে আরও বেশি জালনোট জেলায় আসত। এখন সেই কারবারে অনেকটাই ভাটা পড়েছে। চক্রের মূল কারবারিরা এই কারবারে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়। তারা ১ লক্ষের জালনোট বাংলাদেশ থেকে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা কিনে এনে তা প্রায় দ্বিগুণ আবার কখনও তিনগুণ দামে বিক্রি করে। বৈষ্ণবনগর বা গোপালগঞ্জ বাংলাদেশ সীমান্তের খুব কাছে থাকায় সহজেই সেদেশ থেকে এ রাজ্যে জালনোট আনা হয়। সীমান্ত পার হওয়ার পর জালনোটের ব্যাগ ভল্টার ডেরায় আসে। সেখান থেকে তার লোকজন নোট ভাগ করে বিভিন্ন জায়গায় পাঠায়। আরেক আধিকারিক বলেন, বৈষ্ণবনগর বা গোপালগঞ্জের মতো এলাকায় একাধিক সংস্থার নজর রয়েছে। তারপরও তাদের নজর এড়িয়ে কীভাবে জালনোট ঢুকছে, সেটাই রহস্যের। সীমান্ত পার হয়ে ফরাক্কা বা সূতিতে আসার পর অনেক সময় জালনোট ধরা পড়ে। এই এলাকায় পুলিসের নজরদারি বাড়ায় এখন ফরাক্কা থেকে বিহার হয়ে কারবারিরা জালনোট ঢোকানোর চেষ্টা করছে। কলকাতায় তা আসার পর বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। দু’হাজার এবং ৫০০ টাকার জালনোট তৈরি করতে একই খরচ হয়। সেকারণে কারবারিরা দু’হাজার টাকার নোটই বেশি ছাপায়। বাংলাদেশে তা ছাপানো হলেও এই চক্রের জাল আরও বেশ কিছু দেশে বিস্তৃত রয়েছে বলে আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন। জালনোট তৈরির কারিগরদের উদ্দেশ্য হল ভারতীয় অর্থনীতিতে ধাক্কা দেওয়া। তবে এখনও পর্যন্ত নতুন নোট তারা রাজ্যে সেভাবে ছড়াতে পারেনি। যদিও তারা লাগাতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারমধ্যে বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থা ভল্টার মতো কারবারিদের শ্রীঘরে পাঠিয়ে কারবারে রাশ টানার টার্গেট নিয়েছে।