নিকটজনের স্বাস্থ্য সমস্যায় মানসিক অস্থিরতা। মুদ্রণ বা সংবাদপত্রের ব্যবসা,বৃত্তি শিক্ষাকেন্দ্রের পরিচালনায় সাফল্য। ... বিশদ
অন্যদিকে, বিনপুরের মালাবতির জঙ্গলের পর বেলপাহাড়ির সিন্দুরিয়া জঙ্গল ও দোমহানি পুকুর পাড়ে মিলল বাঘের পায়ের একাধিক ছাপ। এমনকী মঙ্গলবার মুখ্য বনপাল(দক্ষিণবঙ্গ) শক্তিশঙ্কর দে বেলপাহাড়ি সিন্দুরিয়া জঙ্গল ও দোমহানি পুকুর পাড় পরিদর্শন করার পর নিশ্চিত করেন পায়ের ছাপ বাঘেরই। এদিন মালাবতী জঙ্গল লাগোয়া কংসাবতী ক্যানেল থেকে খাঁচা তুলে নেওয়া হয়েছে। সেই খাঁচা বেলপাহাড়ির সিন্দুরিয়া জঙ্গলের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাঘের ট্র্যাক রুট দেখে বেলপাহাড়ির জঙ্গলে বাঘের খাঁচা পাতা হবে বলে ঝাড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ হেলোইচ্চি জানিয়েছেন।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার বাঁকুড়ার বারিকুলের খেজুরখেন্যা ও বারিকুলে প্রথম বাঘের পায়ের ছাপ দেখা যায়। পরবর্তী সময়ে ফুলকুশমা রেঞ্জের সাতখুলিয়াতে বাঘের পায়ের ছাপ মেলে। প্রতিটি জায়গাতেই পায়ের যে ছাপ পাওয়া গিয়েছে, সেগুলি বিনপুরের দিকে যাওয়ার। বাঁকুড়ার দিকে রিভার্স বা ফিরে আসার পায়ের কোনও ছাপ পাওয়া যায়নি। তাই বনদপ্তরের আধিকারিকদের অনুমান, বারিকুল ও খেজুরখেন্যা থেকে হাতকাটার জঙ্গল দিয়ে সাতখুলিয়া, লাগদার জঙ্গল হয়ে তারাফেনি নদী পেরিয়ে বাঘটি বিনপুরে গিয়েছে। সেখানে গত দু’দিনে বেশ কয়েকটি জায়গায় বাঘের পায়ের ছাপ মিলেছে। তাই বনদপ্তরের আধিকারিকদের অনুমান, বিনপুর বা সংলগ্ন এলাকার জঙ্গলে বাঘটি এখন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্য থেকে দুই জায়গায় পাওয়া পায়ের ছাপ মিলিয়ে তা একটি বাঘের বলেই জানতে পেরেছে বনদপ্তর। তবে বাঘটি পুরুষ না স্ত্রী, তা নিশ্চিত হতে পারেননি বনদপ্তরের আধিকারিকরা। তাই নিশ্চিত হওয়ার জন্য বনদপ্তরের তরফে দুই জায়গা থেকে আটটি করে প্লাস্টার অব প্যারিসের মাধ্যমে বাঘের পায়ের ছাপ তুলে তা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে। এই পরীক্ষার পরেই সেটি বাঘ না বাঘিনী এবং কোন প্রজাতির তা পরিষ্কার করে জানা যাবে।
বাঁকুড়ার দক্ষিণ বনবিভাগের ডিএফও দেবাশিস মহিমাপ্রসাদ প্রধান বলেন, বারিকুলে পাওয়া পায়ের ছাপগুলি বাঘের বলে নিশ্চিত হওয়ার পরেই আমরা রানিবাঁধ, ঝিলিমিলি, ফুলকুশমা ও মটগোদা চারটি রেঞ্জে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছি। ২৪ঘণ্টা নজরদারির জন্য প্রতিটি রেঞ্জে দুটি করে টিম তৈরি করে টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা নজর রাখছি।
অন্যদিকে, বাঘের খবর চাউর হওয়ার পরেই বারিকুল ও খেজুরখেন্যা সহ আশেপাশের গ্রামগুলিতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। গ্রামের অধিকাংশ পরিবার জঙ্গল থেকে পাতা তুলে এনে জীবনযাপন করলেও বাঘের ভয়ে সবাই জঙ্গলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। সন্ধ্যার পর আতঙ্কে বাড়ি থেকে বেরতে সাহস পাচ্ছেন না। খেজুরখেন্যা গ্রামের বাসিন্দা আল্লাদি সোরেন বলেন, জঙ্গল থেকে পাতা তুলে এনে শালপাতার থালা তৈরি করেই আমাদের সংসার চলে। কিন্তু এখন গ্রামের কেউ জঙ্গলে যাওয়ার সাহস পাচ্ছে না। বারিকুল গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা সহদেব হেমব্রম বলেন, আমার বয়স ৮০বছর হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এর আগে কখনও আমাদের এলাকায় বাঘ আসতে দেখিনি বা শুনিনি।
অন্যদিকে, সোমবার বিকেলে বেলপাহাড়ির সিন্দুরিয়া জঙ্গলে বাঘটিকে ঘোরাফেরা দেখেছেন বলে দাবি করেছেন একটি বাসের যাত্রীরা। ওই বাসের যাত্রী তথা পচাপানি বোর্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ভানু পৈড়য়া বলেন, ওইদিন ৪টে ৪০মিনিট বেলপাহাড়ি থেকে বাস ধরে বাঁশপাহাড়ির দিকে আসছিলাম। তখন বাসের ডানদিকে সিন্দুরিয়ার জঙ্গলে রাস্তা থেকে ৩০ থেকে ৪০ফুট দূরে বাঘটি ঘোরাফেরা করছিল। এদিন সকালে বেলপাহাড়ির সিন্দুরিয়া জঙ্গল এলাকা পরিদর্শন করেন রাজ্যের মুখ্য বনপাল(দক্ষিণবঙ্গ) শক্তিশঙ্কর দে। শক্তিশঙ্করবাবু বলেন, আমরা এখানে পায়ের ছাপ দেখতে পেয়েছি।