নিকটজনের স্বাস্থ্য সমস্যায় মানসিক অস্থিরতা। মুদ্রণ বা সংবাদপত্রের ব্যবসা,বৃত্তি শিক্ষাকেন্দ্রের পরিচালনায় সাফল্য। ... বিশদ
এতদিন বাসিন্দারা গ্রাম পঞ্চায়েত বা পুরসভায় গিয়ে খাদ্যদপ্তরের সুপারভাইজারদের কাছ থেকে রেশন কার্ড সংগ্রহ করতেন। এবার ডাকযোগে ওই কার্ড পাঠানোর নয়া ব্যবস্থা চালু হওয়ায় রেশন উপভোক্তাদের আর নতুন রেশন কার্ড পেতে কোথাও ছুটতে হবে না। এই পরিষেবাকে স্বাগত জানিয়েছেন বাসিন্দারা। ডাকযোগে রেশন কার্ড পাঠানোর পরিষেবা চালু হওয়ায় জেলার রেশন ডিলারাও খুশি। খাদ্যদপ্তরের কর্তাদের বক্তব্য, মালদহে এই ব্যবস্থা তো প্রথম বটেই, সেইসঙ্গে গোটা রাজ্যেই এই ব্যবস্থা প্রথম চালু হচ্ছে। কয়েকদিনের মধ্যেই ডাকযোগে গ্রাহকরা রেশন কার্ড পেতে শুরু করবেন। অল্পদিনের মধ্যেই নতুন আবেদনকারী সব গ্রাহকরা এই সুবিধা পাবেন।
এবিষয়ে জেলার খাদ্য নিয়ামক পার্থ সাহা বলেন, ডাকযোগে রেশন কার্ড এবার বাড়ি বাড়ি যাবে। আবেদনকারীরা বাড়িতে বসেই রেশন কার্ড পাবেন। সেই ব্যবস্থা এবার মালদহে নতুন চালু হয়েছে। যে সমস্ত আবেদনকারী নতুন রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করেছিলেন, তাঁদের কার্ড অ্যাপ্রুভ হয়ে ছাপা হয়ে গিয়েছে। খুব অল্প দিনের মধ্যেই সে সমস্ত রেশন কার্ড বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাবে। রেশন কার্ড নিয়ে গ্রাহকদের হয়রানি রুখতে এধরণের ব্যবস্থাপনা চালু হয়েছে। তাতে অনেকেই উপকৃত হবেন।
এবিষয়ে পুরাতন মালদহের দক্ষিণ ভাটরার বাসিন্দা রবিন মুর্মু বলেন, আমি পরিবারের সকলের জন্য নতুন রেশন কার্ড করার আবেদন করেছিলাম। এখনও কার্ড হাতে পাইনি। নতুন রেশন কার্ড পোস্ট অফিসের মাধ্যমে হাতে পেলে আমাদের হয়রানি কমবে।
মালদহের এম আর ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অসিতকুমার সাহা বলেন, রেশন কার্ড যাতে বাড়ি বাড়ি ডাকযোগে পৌঁছে যায়, সেই দাবি আমরাই প্রথমে তুলেছিলাম। আমাদের সম্মিলিত প্রয়াসে এই নতুন ব্যবস্থা চালু করেছে রাজ্য সরকার। তাতে আমরা খুবই খুশি। উপভোক্তারা ডাকযোগে নতুন রেশন কার্ড পেয়ে আমাদের কাছে আসলে আমরা তালিকা তৈরি করে রেশন বরাদ্দের জন্য আবেদন করব।
খাদ্যদপ্তরের পুরাতন মালদহ ব্লকের ইন্সপেক্টর রাজীব সিংহ রায় বলেন, রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনা-১’র অধীনে যে কার্ড রয়েছে সেটি আসতে শুরু করেছে। বাকি কার্ডগুলিও আসবে। কার্ডের গুণগত মান ভালো। আগে বাসিন্দারা দপ্তর থেকে কার্ড সংগ্রহ করতেন। এখন ঘরে বসে বাসিন্দারা নতুন কার্ড পাবেন।
জেলা খাদ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে এবং নভেম্বরে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে যে রেশন কার্ডের জন্য আবেদন সংগ্রহ করা হয়েছিল, সেগুলির মধ্যে প্রথম পর্যায়ের এনকোয়ারি শেষ হয়ে গিয়েছে। খাদ্যদপ্তরের কর্তারা জানান, প্রথম ধাপে প্রায় ৬ লক্ষ ২৬ হাজার গ্রাহক রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করেছিলেন। সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে সংশোধন, নতুন নাম নথিভুক্তকরণ থেকে শুরু করে সবকিছুই রয়েছে। পরে দ্বিতীয় ধাপে আরও ৯০ হাজার আবেদন জমা পড়ে খাদ্যদপ্তরে। দ্বিতীয় ধাপে আবেদনকারীদের এনকোয়ারি খুব দ্রুত শুরু হয়ে যাবে বলে আধিকারিকরা জানিয়েছেন।
জেলা খাদ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, নয়া ব্যবস্থায় আবেদনকারীকে হন্যে হয়ে আর দপ্তরে দপ্তরে ছুটতে হবে না। এতদিন রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করেও অনেকেই কার্ড হাতে পেতেন না। নানা গণ্ডগোলের ফলে এক হাত থেকে আরও এক হাত চলে যেত সেই কার্ড। তাই বাসিন্দারা অন্য সব কাজ ফেলে দিয়ে রেশন কার্ডের পিছনেই সময় দিতেন। সুষ্ঠু নাগরিক পরিষেবা দেওয়ার স্বার্থে এবার ডাকযোগে রেশন কার্ড বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হলে সময় ও হয়রানি বাঁচবে।