বিমা, শেয়ার প্রভৃতি ক্ষেত্র থেকে ধনাগমের যোগ। স্বামী, সন্তান ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্র এক প্রকার শুভ ... বিশদ
গত দু’মাসে রায়গঞ্জ পুলিস জেলায় একটি গণধর্ষণ ও দু’টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। নারী নির্যাতনের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় রাতে মহিলারা রাস্তায় বা বাজারে বেরোতেও ভয় পাচ্ছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা মহিলা ইটাহারের গ্রামের বাসিন্দা হলেও বেশ কিছুদিন ধরে লক্ষ্মনীয়াতে তিনি বাপের বাড়িতেই থাকতেন। নির্যাতিতার স্বামী ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। গত রবিবার রাতে মহিলা বাপের বাড়ির পেছনের ফাঁকা মাঠে শৌচকর্ম সারতে গেলে ওই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গ্রামের রাস্তা ও মাঠঘাট তখন শুনসান ছিল। কিছুটা দুরে একটি জমিতে সেচের কাজ করছিল রাজু নাগবংশী। ওই সময় প্রতিবেশি ওই যুবক নির্যাতিতার কাছাকাছি চলে আসে। প্রথমে নির্যাতিতার সন্দেহ হয়নি। কিন্তু আচমকাই জোর করে মহিলার মুখ চেপে ধরে তাঁকে ভুট্টা খেতের ভেতরে নিয়ে যায় ওই যুবক। মহিলা বাধা দেওয়ায় শাড়ি দিয়ে মহিলার হাত বেঁধে ধৃত ব্যক্তি নির্যাতন চালায়। নির্যাতনের ঘটনার পর অবশ্য অভিযুক্তই নির্যাতিতাকে বাঁধনমুক্ত করে দিয়েছে। ঘটনার কথা কাউকে না বলার জন্যও সে শাসিয়ে দেয়। কাউকে কিছু বললে পরিণাম ভালো হবে না বলে শাসায় বলে নির্যাতিতার অভিযোগ।
ঘটনার পর নির্যাতিতা আতঙ্কিত হয়ে মুষড়ে পড়েন। দীর্ঘক্ষণ পর তিনি এলোমেলো বিষন্ন অবস্থায় ঘরে ফেরায় পরিবারের লোকেদের সন্দেহ হয়। নির্যাতিতা রাতেই ঘটনার কথা বাপের বাড়ির লোকদের জানান। সোমবার সকাল হতে বিষয়টি প্রতিবেশীদের মধ্যেও জানাজানি হয়। ঘটনা জানাজানি হতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন বাসিন্দারা। সোমবার সকালে ধৃত যুবক পালানোর সুযোগ পায়নি। গ্রামবাসীরা তাকে ডেকে রাতের নির্যাতনের ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলে, সে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে থাকে। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে বাসিন্দাদের কাছে অপকর্মের কথা স্বীকার করে। এরপরই বাসিন্দারা ধৃতকে বেধড়ক পেটাতে শুরু করে। গণপিটুনিতে প্রাণ যেতে পারে আশঙ্কা করে বাসিন্দারাই আবার রায়গঞ্জ থানায় খবর পাঠায়। পরে বিশাল পুলিস বাহিনী গিয়ে অভিযুক্তকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিস ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের বুঝিয়ে পরে ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে নিতে সক্ষম হয়।
গণপিটুনিতে ধৃত যুবকের মাথা ফেটে যাওয়ায় কয়েকটি সেলাই পড়েছে। পুলিস হেফাজতে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অভিযুক্তের চিকিৎসা চলছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যুবক তার অপকর্মের কথা পুলিসের জেরায় স্বীকার করেছে। নির্যাতিতা মহিলা সোমবার রায়গঞ্জ মহিলা থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিস মহিলার মেডিক্যাল টেষ্ট করিয়েছে। ধর্ষণের ওই ঘটনার পর লক্ষ্মনীয়া গ্রামে চাপা একটা উত্তেজনা রয়েছে।
গত দুই মাসে রায়গঞ্জ পুলিস জেলা এলাকায় পরপর তিনটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। গত ১ ডিসেম্বর ভাটোল হাটের কুলিয়ারা কামাত গ্রামে এক সাত বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। যদিও ওই ঘটনায় অভিযুক্ত এখনও অধরা রয়েছে। নির্যাতিতার পরিবার সোমবার পুলিস সুপারের দপ্তরে গিয়ে অভিযুক্তের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে। এবছর বর্ষবরণের রাতে কালিয়াগঞ্জের ধনকৈল হাট এলাকার বাসিন্দা এক মহিলাকে গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করা হয়। ওই ঘটনায় তিন অভিযুক্তকে পুলিস ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে। একের পর এক ধর্ষণের ঘটনায় উদ্বিগ্ন রায়গঞ্জের বাসিন্দারা। পুলিস জানিয়েছে, লক্ষ্মনীয়ায় নির্যাতনের ঘটনায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করা হয়েছে।