উন্নাও: সেটা ২০১৭ সাল। এক দলিত তরুণীর গণধর্ষণের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় দেশ। কাঠগড়ায় বিজেপি বিধায়ক। কুলদীপ সিং সেঙ্গার। প্রবল জনরোষের চাপে সেঙ্গারকে শেষ পর্যন্ত জেলে যেতে হয়। আর স্থানীয় বিজেপি নেতারা বলছেন, উন্নাও কাণ্ড এখন আর কোনও ইস্যু নয়। কেন? তাঁদের ব্যাখ্যা, ঘটনার দু’বছর পর ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে উন্নাও থেকে ড্যাংড্যাং করে জিতেছিলেন সাক্ষী মহারাজ। সমাজবাদী পার্টির প্রার্থীকে তিনি হারিয়েছিলেন প্রায় ৪ লক্ষ ভোটের ব্যবধানে। ফলে সাত বছর পর ২০২৪ সালে স্বাভাবিকভাবেই গণধর্ষণের সেই ঘটনা ‘নন-ইস্যু’। যদিও স্থানীয় বিরোধী নেতাদের দাবি, সত্যিই যদি ‘নন-ইস্যু’ হয়, তাহলে আজও কেন নির্যাতিতার বাড়ি যাওয়ায় ‘আঘোষিত’ নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেছে যোগী প্রশাসন?
উন্নাও কাণ্ড কি সত্যিই স্মৃতির অতলে চলে গিয়েছে? বিজেপি প্রার্থীর হাবভাব কিন্তু তেমনই। এই আসন থেকে এবারও গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী সাক্ষী মহারাজ। উন্নাও থেকে তাঁর হ্যাটট্রিকের লড়াই। আর সেই লড়াইয়ে তাঁর যাবতীয় আশা ভরসা প্রভু রাম। অযোধ্যায় মন্দির নির্মাণের হাওয়াকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে চাইছেন তিনি। বলছেন, দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালন কীভাবে করতে হয়, প্রভু রাম সেটাই শিখিয়ে গিয়েছেন। বিরোধীরা অপপ্রচার করেও কোনও সুবিধা করতে পারবে না। ডাবল ইঞ্জিন সরকারের সার্বিক উন্নয়ন সমাজবাদী পার্টি-কংগ্রেস জোটকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেবে।
বিজেপি প্রমিলা শাখার নেত্রী ঊর্মিলা বহেনের দাবি, উন্নাওয়ে মহিলারা আর আগের মতো আতঙ্কে দিন কাটান না। দিন পাল্টে গিয়েছে। ডাবল ইঞ্জিন সরকারের আমলে মহিলারা এখন নিরাপদ। তবে কিছুদিন আগেই ৩৫ বছরের এক মহিলার গলা কাটা দেহ উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে বিজেপি নেতৃত্ব মুখে কুলুপ এঁটেছে। ওই মহিলা স্থানীয় একটি মন্দিরে কাজ করতেন বলে খবর। এই অবস্থায় সাক্ষী মহারাজের হ্যাটট্রিক ঠেকাতে জোট প্রার্থী হিসেবে সমাজবাদী পার্টি টিকিট দিয়েছে এক মহিলাকে। তিনি অন্নু ট্যান্ডন। আগে ছিলেন কংগ্রেসে। ২০০৯ সালে উন্নাও থেকে জিতে সাংসদও হয়েছিলেন। ২০২০ সালে কংগ্রেসের হাত ছেড়ে সপায় যোগ দেন। ফলে ৬৬ বছরের অন্নু এলাকায় পরিচিত মুখ। পোড় খাওয়া নেত্রী। চাকরি-বাকরির অভাব, মুদ্রাস্ফীতির পাশাপাশি মহিলাদের নিরাপত্তার ইস্যুটিও তুলছেন তিনি। মহল্লায় মহল্লায় ঘুরছেন। সাড়াও পাচ্ছেন। ফলে জোটের সৌজন্যে সাক্ষী মহারাজের হ্যাটট্রিকের স্বপ্ন মোটেও সহজ হবে না বলেই দাবি বিরোধী শিবিরের।