নিকটজনের স্বাস্থ্য সমস্যায় মানসিক অস্থিরতা। মুদ্রণ বা সংবাদপত্রের ব্যবসা,বৃত্তি শিক্ষাকেন্দ্রের পরিচালনায় সাফল্য। ... বিশদ
পরপর ঘটনাগুলিও জিদের, প্রতিজ্ঞার। জামতলা বিডিও অফিসে গিয়ে বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য কার্ড করায় জেসমিনা। ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন ধরে গত অক্টোবরে একাই পাড়ি দেয় এনআরএসে। ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের প্রেসক্রিপশন হাতে প্রায় হন্যে হয়েও খোঁজ পায়নি হাসপাতালের ভিতরে থাকা আঞ্চলিক কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপন কেন্দ্রের। চূড়ান্ত হতাশ হয়ে ফেরত যাওয়ার সময় প্রায় ভগবানস্বরূপ হাজির হন বছর পঁয়তাল্লিশের এক সহৃদয় ব্যক্তি। নাম সাহাদ। তিনি পেশায় এক বেসরকারি সংস্থার কর্মী। এই মাঝবয়সি নিজেই অভিভাবকের মতো তাকে সঙ্গে নিয়ে এই কেন্দ্রে নাম রেজিষ্ট্রেশন করান জেসমিনার। শারীরিক মূল্যায়নের পর নেওয়া হয় অঙ্গের অবয়বের মাপ ও কৃত্রিম অংশের টেকনিক্যাল নকশা। মাঝেমধ্যে নিজেই হাসপাতালে এসে কৃত্রিম অঙ্গর তৈরির খবরাখবর নিতেন সাহাদ। জেসমিনাকে টেলিফোনে জানাতেন। জেসমিনার ওই অঙ্গ ফিট করার দিনও সঙ্গে ছিলেন সাহাদ। কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপন কেন্দ্র সূত্রের খবর, ২১ অক্টোবর মেয়েটি তাদের কাছে আসে। তারপর অ্যাসেসমেন্ট ও ইভ্যালুয়েশন, ট্রেসিং অ্যান্ড কাস্টিং, গেট ট্রেনিং ইত্যাদি পদ্ধতিতে সপ্তাহখানেকের মধ্যে বানানো হয় কৃত্রিম পায়ের অংশটি। বৃহস্পতিবার খালি পায়ে কলকাতায় এলেও, জুতো পরে কৃত্রিম পায়ে বাড়ির দিকে রওনা দেয় জেসমিনা। কী দিয়ে বানানো হয়েছে এই কৃত্রিম পা? কেন্দ্রের ইনচার্জ আবীর মিত্র বলেন, ইপোক্সি রেসিন, গ্লাস ফাইবার, মাইক্রো সেলুলার পলিমার, ভ্যালকানাইজড রাবার ইত্যাদি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই কৃত্রিম অঙ্গ। টেকনোলজিস্ট ছিলেন প্রদ্যোৎকুমার দাস। আবীরবাবুর আক্ষেপ, এইসব ক্ষেত্রে মেডিক্যাল গ্রেড সিলিকন দিয়ে তৈরি কৃত্রিম পা দেখে বোঝাই যায় না, আসল কী নকল! আমাদের এখানে এখনও তা চালু হয়নি। হলে রাজ্যবাসী আরও লাভবান হবেন। বিশেষভাবে সক্ষমদের প্রতি সামাজিক অবজ্ঞা, ঘৃণাও কমবে। বিষয়টি জেনে উচ্ছ্বসিত রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, আমার প্রচুর শুভেচ্ছা জেসমিনাকে। ও বড় হোক।