নিকটজনের স্বাস্থ্য সমস্যায় মানসিক অস্থিরতা। মুদ্রণ বা সংবাদপত্রের ব্যবসা,বৃত্তি শিক্ষাকেন্দ্রের পরিচালনায় সাফল্য। ... বিশদ
ধর্মঘটীদের এই হুঁশিয়ারির মূল লক্ষ্য অবশ্য ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এদিন কলকাতা সহ বিভিন্ন জেলায় ধর্মঘটের সমর্থনে তাঁরা যে শেষ প্রচার চালান, সেখানে সর্বত্র এই হুঁশিয়ারিকে প্রাধান্য দেন তাঁরা। শেষ পর্বের প্রচারে তাঁদের সঙ্গে অধিকাংশ জায়গায় ঝান্ডা নিয়ে কংগ্রেসের সমর্থকরাও শামিল হন। বামপন্থী দলগুলির অন্যতম দুই নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র-বিমান বসু এবং প্রদেশ কংগ্রেস তথা বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান এক সুরে জানিয়েছেন, কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের আর্থিক ও শ্রমনীতির পাশাপাশি এনআরসি-সিএএ ইস্যুতে এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। কিন্তু মুখে ইস্যুগুলি সমর্থনের কথা বললেও সরকারি স্তরে কড়া সার্কুলার বের করে প্রশাসনিকভাবে ধর্মঘট ভাঙার ষড়যন্ত্র করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর মাধ্যমে তিনি আরও একবার তৃণমূলকে বিজেপি’র বি টিম হিসেবে বাংলার মানুষের কাছে তুলে ধরলেন। নানা ইস্যুতে বিপাকে পড়া নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহদের বাঁচাতে এভাবেই ঢাল হিসেবে অতীতেও দাঁড়িয়েছেন তিনি। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটল না। এটা দ্বিচারিতা ছাড়া আর কিছু নয়। তবে মানুষ এবার এই চালাকি বুঝতে পেরেছে। তাই বুধবার তারা তার জবাব রাস্তায় নেমেই দেবে।
প্রসঙ্গত, ধর্মঘটের মূল উদ্যোক্তা শ্রমিক সংগঠনগুলির তরফে জানানো হয়েছে, বুধবার সকাল থেকেই তারা কলকাতার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় মিছিল করবে। জেলাতেও একই কর্মসূচি নিতে নির্দেশ দিয়েছে নেতৃত্ব। উদ্যোক্তারা নামে শ্রমিক বা কৃষক সংগঠন হলেও, আদতে বাম ও কংগ্রেসের গোটা দলীয় সংগঠনকে ময়দানে নামিয়েছে নেতৃত্ব। সেই কারণে সূর্যকান্তবাবু-বিমানবাবুরাও আজ পথে নামবেন মিছিলে অংশ নিতে। থাকবেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রও। ধর্মঘট সফল করতে রাস্তা ও রেল অবরোধের হুমকিও দিয়ে রেখেছেন উদ্যোক্তারা। তাঁরা জানিয়েছেন, ধর্মঘট করতে তাঁরা কোথাও জোর করবেন না। কিন্তু শাসকদল ও প্রশাসন যদি ধর্মঘট ভাঙার জন্য সক্রিয় হয়, তাহলে সেই পথেই তাঁরা তার বিরোধিতা করবেন। সেজন্যই দিনভর রাস্তায় থাকার নিদান দেওয়া হয়েছে নেতৃত্বের তরফে।
ধর্মঘটের সমর্থনে শেষ লগ্নে উদ্যোক্তাদের কাছে সুসংবাদ পৌঁছে দিয়েছে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠন ডব্লুএফটিইউ বা ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব ট্রেড ইউনিয়নস। ১৩০টি দেশের বহু শ্রমিক সংগঠনের এই যৌথ মঞ্চের সম্পাদকমণ্ডলী মঙ্গলবার গ্রিসের রাজধানী এথেন্স-এ অবস্থিত সদর দপ্তর থেকে এই ধর্মঘটের সাফল্য কামনা করে বার্তা পাঠিয়েছে। শ্রমজীবী মানুষের দাবিদাওয়ার পাশাপাশি নাগরিকত্ব ইস্যু নিয়ে এই ধর্মঘট ডাকায় তারা এই সহমর্মিতা জানিয়েছে। অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবার কারণে উদ্যোক্তারা এই ধর্মঘটের আওতা থেকে সংবাদমাধ্যমকে ছাড় দিলেও ওগেস্ট বেঙ্গল নিউজপেপার্স এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হারাধন ভট্টাচার্য এক বিবৃতিতে এই কর্মসূচিকে পূর্ণ সমর্থন ও সংহতি জানিয়েছেন।