নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: ভোট করানোর মেশিনারি নেই। তাই প্রচারের শেষ লগ্নে বর্ধমানে ভাসিয়ে দেওয়া হল, ‘দিলীপ ঘোষ জিতলেই মন্ত্রী হচ্ছেন।’ বিজেপি প্রার্থীর অনুগামীদের একাংশ কর্মীদের চাঙ্গা করতে সুকৌশলে এমনই বার্তা ছড়িয়ে দেন। অনেকে তা বিশ্বাস করতে রাজি নয়। তাঁদের মতে, দিলীপবাবু কোণঠাসা হয়ে রয়েছেন। সেই কারণে তাঁর নিজের জায়গা মেদিনীপুর ছেড়ে তাঁকে বর্ধমানে আসতে হয়েছে। নেতৃত্ব জানে, বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে লড়াই কঠিন। তারপরও তাঁকে এখানে পরিকল্পনা করে পাঠানো হয়েছে। যদিও দিলীপবাবু বলেন, সব পিচেই খেলতে অভ্যস্ত। যেখানে দাঁড়াব সেখানে জিতব। বিজেপির অন্য অংশ মনে করছে, জিতলে দিলীপবাবুর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়া নিশ্চিত। কারণ দলের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে তিনি বর্ধমানে এসেছেন। কঠিন লড়াই জিতলে তিনি পুরস্কার পাবেন। যদিও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হাটগোবিন্দপুরে প্রচারে এসে বলেন, উনি মেদিনীপুরে পাঁচ বছর কাজ করেননি। সেই কারণেই তাঁকে এখানে পাঠানো হয়েছে। বিজেপির পরাজয় নিশ্চিত। উনি মহিলাদের সম্মান দেন না। দিল্লির কাছে নম্বর বাড়ানোর জন্য শুধুই হুঙ্কার দেন। প্রচারের শেষ দিনে দিলীপবাবু বর্ধমানে রোড শো করেন। রাজবাটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট থেকে বীরহাটা ঘড়ির মোড় পর্যন্ত তিনি রোড-শো করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। কয়েক দিন আগে দিলীপবাবু রাজ্য সভাপতির সঙ্গে জলভাত খাওয়ার ছবি পোস্ট করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক মধুর। এমনটা বোঝাতেই তিনি রোড-শো করলেন বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। যদিও অতীত সেকথা বলছে না। প্রচারের শেষ দিনেও দিলীপবাবুর রোড-শো ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। ঢলদিঘি পেট্রল পাম্পের কাছে তাঁকে ঘিরে গো-ব্যাক স্লোগান দেওয়া হয়। বিজেপি কর্মীরা তাদের ধাওয়া করে। দিলীপবাবু এদিনও তৃণমূলকে হুমকি দিতে ছাড়েননি। তিনি বলেন, ওদেরকে ওদের ভাষাতেই জবাব দিতে হবে। ভোট লুট করতে এলে জনগণ শিক্ষা দেবে। কেজরিওয়ালের মতো অনেককে জেল খাটতে হবে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, কেজরিওয়াল ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছে। বিজেপি আবার ক্ষমতায় আসছে। কেউ আটকাতে পারবে না।
বর্ধমান-দুর্গাপুরে দিলীপবাবু তাঁর নিজের টিমকে ময়দানে নামিয়েছেন। কিন্তু জেলার কর্মীদের একাংশ নিষ্ক্রিয় হয়ে রয়েছেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়ে তাঁদের অনেকেই ময়দানে নামেননি। সেই কারণেই প্রচারে শেষ লগ্নে দিলীপবাবুর মন্ত্রী হবেন, এমন ভবিষ্যৎবাণী বর্ধমান, দুর্গাপুরে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।