সংবাদদাতা, পুরুলিয়া: দলের জেলা নেতৃত্বের প্রতি একগুচ্ছ অভিযোগ তুলে নির্বাচনী কমিটি থেকে পদত্যাগ করলেন প্রয়াত তৃণমূল বিধায়ক কেপি সিংদেও-এর ছেলে দিব্যজ্যোতিপ্রসাদ সিংদেও। দলের জেলা সভাপতিকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানোর পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়াতেও তিনি একথা জানান। তিনি পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূলের নির্বাচনী কোর কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন। ভোটের আগে গোটা বিষয়টিতে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।  প্রসঙ্গত, দিব্যজ্যোতিপ্রসাদ সিংদেও প্রয়াত তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক কেপি সিংদেও এর ছেলে। ২০১৬ সালের পুরুলিয়া বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে তিনি লড়াই করে হেরে যান। তাঁকে পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূলের নির্বাচনী কোর কমিটিতে রাখা হয়েছিল। তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেসের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়াকে নিজের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন দিব্যজ্যোতিবাবু। ওই চিঠিতে নির্বাচনী কোর কমিটি থেকে পদত্যাগের কারণ স্পষ্ট করে লিখিতভাবে তিনি জানিয়েছেন। এদিন দিব্যজ্যোতিবাবু বলেন, নির্বাচনী কোর কমিটিতে জায়গা দেওয়ায় অনেক খুশি হয়েছিলাম। সেই সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকেও ডাক পেয়েছিলাম। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ওই বৈঠকে সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। দলের পক্ষ থেকে আমাকে পুরুলিয়া শহর এবং পুরুলিয়া-২ ব্লক এলাকার প্রচারের কাজকর্ম দেখার দায়িত্বও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, ওই এলাকায় প্রার্থীর প্রচার বা দলের রণকৌশল ঠিক করার ক্ষেত্রে কোনও বৈঠকে ডাকা হচ্ছে না। এমনকী অনেক বৈঠকের খবর পরে জানতে পারছি। জেলা সভাপতি ব্লক সভাপতিদের সঙ্গে আলোচনা করেই কাজ করছেন। পুরনো সব তৃণমূল কর্মীদের বিভিন্নস্তরে বসিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত শুরু হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দিদি এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাও জেলা নেতৃত্বে মেনে চলছে না। ২০১৭ সালে বাবার মৃত্যুর পর থেকে পুরুলিয়া জেলায় পরপর নির্বাচনগুলিতে দলের খারাপ ফলাফল হয়ে আসছে। তবে এবার ভালো ফলাফল হওয়ার আশা রয়েছে। কিন্তু, দলের মধ্যে থেকেই কেউ কেউ চাইছেন, পুরুলিয়ায় দলের ভালো ফলাফল না হোক। একটা চক্রান্ত চলছে। প্রচার বা যে কোনও বিষয়ে আসলে কেউ নিজের ঘাড়ে দায়িত্ব নিতে চাইছে না। জেলা সভাপতিকে বললে প্রার্থীর কথা বলছেন। প্রার্থীকে বললে জেলা সভাপতিকে জানাতে বলছেন। কমিটিতে রাখা হলেও কোনও গুরুত্ব নেই। তাই কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছি। সাধারণ কর্মী হিসেবে দল যেটুকু বলবে সেইটুকু কাজ করব। দল ছেড়ে অন্য দলে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী শান্তিরাম মাহাত বলেন, গুরুত্ব না দেওয়ার কথা ঠিক নয়। দলে সবাইকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়। কোনও সমস্যা হওয়ায় উনি হয়তো এরকম কথা বলেছেন। আগেও তাঁর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ভবিষ্যতেও ফের আলোচনা করা হবে। সমস্যা কিছু থাকবে না।