সংবাদদাতা, কৃষ্ণনগর: ভোট যত এগিয়ে আসছে ততই উচ্ছ্বাসে, আবেগে ভাসতে শুরু করেছেন কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের বাসিন্দারা। কারণ, এই প্রথম এই ব্লকের কোনও বাসিন্দা লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। প্রার্থীর নাম মুকুটমণি অধিকারী। তিনি রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী। স্বভাবতই সাধারণ মানুষের এই আবেগের ফায়দা তোলার আশায় রয়েছে তৃণমূল। প্রায় ৭০ শতাংশ মতুয়া সম্প্রদায়ের বসবাস রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে। রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যেই রয়েছে কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা। গত লোকসভা ভোটে রানাঘাট কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস পরাজিত হয়। বিধানসভা ভোটেও বিজেপির জয় হয়। তবে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের নির্বাচনে কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকে তৃণমূলে কংগ্রেসের ভোট বেড়েছে। জেলা পরিষদে মোটের উপর ২ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। হাঁসখালি ও কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের মোট ১৫টি পঞ্চায়েত নিয়ে কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র। গত বিধানসভা ভোটে কৃষ্ণগঞ্জ কেন্দ্রে বিজেপি ২১ হাজারের বেশি ভোটে তৃণমূলকে হারিয়েছিল। এর মধ্যে কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকে ৬ হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এবার দলের পুরনো কর্মীদের ভোট ময়দানে নামাতে পেরেছে তৃণমূল। তৃণমূলের সংগঠন মজবুত হয়েছে। অন্য দলে চলে যাওয়া কর্মী নেতাদের ফিরিয়ে আনতে পেরেছে। দল তাই অনেকটাই চাঙ্গা হয়েছে। ইতিমধ্যে রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে মুকুটমণিকে জেতাতে ছাত্র ও যুব সংগঠনের সদস্যরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে ফেলেছে। কৃষি প্রধান কৃষ্ণগঞ্জ ব্লক ও এই বিধানসভা এলাকায় ৬০ শতাংশের বেশি কৃষক রয়েছে। এই ব্লকে এ রাজ্যের বৃহত্তম আমের বাজার আছে। এখান থেকে একাধিক সব্জি, ফসল বাইরে যায়। কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকে কৃষকবন্ধু প্রকল্পের উপভোক্তা প্রায় ২৬ হাজার। স্বাভাবিক ভাবেই কৃষ্ণগঞ্জ ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব কৃষকবন্ধু প্রকল্পকে তুলে ধরে প্রচারও চালাচ্ছে। কৃষকরাও পাশে থাকছেন। কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকে প্রায় ৩৫ হাজার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের উপভোক্তা আছেন। অন্যদিকে, কেন্দ্রের এনআরজি প্রকল্পের কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের শ্রমিকদের বকেয়া ১২ কোটি টাকা দেওয়া নিয়ে তৃণমূল ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছে। প্রচার চালাচ্ছে বাংলা আবাস যোজনা নিয়েও। বুধবার মাজদিয়ার অভিনেতা দেবের রোড শোয়ে জনপ্লাবন ঘটে।
কৃষ্ণগঞ্জ ব্লক থেকে মুকুটমণি প্রার্থী হওয়ায় তৃণমূল কর্মী সমর্থক শুধু নয়, সাধারণ মানুষও স্থানীয় আবেগের বশে ময়দানে নেমেছে। এখানে পঞ্চায়েত সমিতিও তৃণমূল কংগ্রেসের। ঠিক এই অবস্থায় সাংসদ না থাকার জন্য কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় অনেক উন্নয়নের কাজ আটকে রয়েছে। এটা তৃণমূলের নিচুস্তর উপরের নেতৃত্ব সকলেই বুঝেছে। তাই এবার রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্র থেকে মুকুটমণিকে জয়ী করতেই সকলেই ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। বিজেপির বিধায়ক আশীষ বিশ্বাস বলেন, কৃষ্ণগঞ্জ ব্লক থেকে মুকুটমণি প্রার্থী হওয়ায় মানুষ ভোট দেওয়া নিয়ে দ্বিধায় পড়ছে তা ঠিক। কিন্তু আমরা জগন্নাথ সরকারকে পূর্ণ সহায়তা করছি। তাই কোনও অসুবিধা হবে না। তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমণি বলেন, সর্বত্র মানুষের যে উচ্ছ্বাস দেখছি তাতে মানুষ খুশি তা বুঝতে পারছি। দেবদা আসার দিনও এই ব্যাপক উদ্দীপনা দেখেছি মানুষের মধ্যে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন, সব মিলিয়ে আমি জিতছি।