গৃহে বা বাইরে পড়ে গিয়ে দেহে আঘাত বা অস্থিভঙ্গ হতে পারে। কাজকর্মে মনোযোগের অভাব। ... বিশদ
পুলিস সূত্রে খবর, সুস্মিতা পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার বাসিন্দা। গত দু’বছর ধরেই তাঁর কলকাতায় যাতায়াত। ছোট থেকেই অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন। অভিনয় শেখার পাশাপাশি কয়েকটি জায়গায় মডেলিং ও ফোটোশ্যুটও করতেন তিনি। সেই সূত্রেই বছর দেড়েক আগে সিরিয়াল জগতে কর্মরত এক অভিনয় প্রশিক্ষকের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। তাঁর নাম সঞ্জয় নস্কর। ওই প্রশিক্ষকের বাড়ি কুঁদঘাট এলাকায়। সেখানেই থাকেন সঞ্জয়ের পরিবারের সদস্যরা। হরিদেবপুর থানার অন্তর্গত বেহালার বনমালী ব্যানার্জি রোডে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন তিনি। অভিনয় প্রশিক্ষণ ও সিরিয়ালে অভিনয়ের স্বার্থে বেশিরভাগ সময়েই কলকাতায় থাকতে হতো সুস্মিতাকে। তার জেরে হরিদেবপুরের এই ফ্ল্যাটে প্রায়ই যাতায়াত শুরু হয় তাঁর।
পুলিস সূত্রের খবর, ধীরে ধীরে প্রশিক্ষকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সুস্মিতা। তারপরই তাঁরা লিভ-ইন করতে শুরু করেন। হাতে কাজ না থাকলে হলদিয়ার বাড়ি ফেরাও কমিয়ে দিয়েছিলেন অভিনেত্রী। গত মাসে বাড়ি গিয়েছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকালেই হলদিয়ার বাড়ি থেকে শহরে আসেন সুস্মিতা। তখন ফ্ল্যাটেই ছিলেন সঞ্জয়। এরপরেই নিজের কাজে বের হন প্রশিক্ষক। রাত ন’টা নাগাদ তিনি ফেরেন। বেল বাজালেও কেউ দরজা খোলেননি। তাঁর কাছে ফ্ল্যাটের চাবি ছিল। ভিতরে ঢুকেই সঞ্জয় দেখেন ঘরের সিলিং ফ্যান থেকে গামছার সাহায্যে ঝুলছেন সুস্মিতা। তিনি নিজেই সুস্মিতাকে নামিয়ে আনেন। আশপাশের বাসিন্দাদের খবর দেন তিনি। এরপরেই ঘটনাস্থলে যায় হরিদেবপুর থানার পুলিস। তরুণীকে উদ্ধার করে এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
পুলিস সূত্রে খবর, ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। তাতে লেখা রয়েছে, ‘ওকে আমি ভগবান মেনেছিলাম। ধীরে ধীরে আমি মানসিকভাবে ওর সঙ্গে জড়িয়ে পড়ি। পরে দেখলাম ও অনেকেরই ভগবান’। ধৃত অভিনয় প্রশিক্ষকের সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে পুলিস জানতে পেরেছে, একাধিক তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে প্রৌঢ়ের।
পুলিস জানিয়েছে, মৃত্যুর খবর সকালেই মৃতার পরিবারকে পাঠানো হয়েছে। মৃতের বাবা দুলাল দাস জানিয়েছেন, ‘সিরিয়ালে সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সঞ্জয়। কিন্তু আদতে তা হয়নি, সেজন্যই মেয়ে এমনটা করল। বাড়ি ফিরে কিছুটা চুপচাপ ছিল মেয়ে। তবে স্পষ্ট করে কিছু বলেনি।’ পুলিসের সন্দেহ, লিভ ইন পার্টনার ওই প্রশিক্ষকের সঙ্গে কোনও অশান্তি হয়ে থাকতে পারে। হরিদেবপুর থানায় সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন সুস্মিতার দাদা। আজ অভিযুক্তকে আলিপুর আদালতে পেশ করা হবে। উল্লেখ্য, শুক্রবারে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে।