প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ
সিএএ কি আপনাদের জন্য ব্যুমেরাং হবে? প্রশ্নটা শুনে অম্বিকাবাবু কিছুটা থম মেরে গেলেন। তারপর বললেন, ‘ব্যুমেরাং হবে না। তবে, টাইমিংটা ঠিক হয়নি। ছ’মাস আগে এই আইনটা হলে ভালো হতো। সকলে বুঝতে পারত, আবেদন করলেই নাগরিকত্ব পাওয়া যাবে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে হওয়ায় বিরোধীরা মানুষকে ভুল বোঝানোর সুযোগ পেয়েছে। তাতে বিভ্রান্তি কিছুটা আছে। কিন্তু ওদের লাভ খুব একটা হবে না।’ অম্বিকাবাবু যাই দাবি করুন, অনেকে বলছেন সিএএ-র ফাঁসেই আটকে যাবে শান্তনু ঠাকুরের বিজয়রথ।
বিজেপি অফিস থেকে ঢিল ছোড়া দূরে জয় মা তারা লটারির দোকান। চা-ও বিক্রি হয়। যাকে বলে, টু ইন ওয়ান। ভোটের হাওয়া বোঝার মোক্ষম জায়গা। পাল্লা ভারী কোন দিকে? উত্তর দেওয়ার চেয়ে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টাই বেশি। একজন বললেন, ‘এলাকায় অশান্তি নেই। মানুষ ভালোই আছে। তারপর কে জিতবে, বলা কঠিন।’ পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক মধ্যবয়স্ক বললেন, ‘এখানে জিতবে দিদির দল।’
ভোটের হাওয়ার সরাসরি দিক নির্দেশ করায় জানতে চাই, তৃণমূল করেন? উত্তরে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তাপস বিশ্বাস বললেন, ‘গাড়ি চালিয়ে খাই। পার্টি করার সময় কোথায়?’ তারপর বুকটা দেখিয়ে বললেন, ‘এখানে পেসমেকার বসানো আছে। সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৪ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা। আমার একটা পয়সাও লাগেনি। এরপর দিদিকে ভোট না দিলে বেইমানি করা হবে। আমরা গরিব মানুষ। সেটা করতে পারব না।’
গয়েশপুরের কুলিয়াপাট ঠাকুরবাড়ি তেঁতুলতলায় তাসের জমাটি আড্ডা। হাওয়া কোনদিকে? একজন বললেন, সবাইয়ের সামনে জানতে চাইলে কেউ সত্যি বলবে না। তারপর একপাশে ডেকে নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি সিপিএম করি। কিন্তু ভোট দেব এবার বিজেপিকে।’ বোঝা গেল, বনগাঁ আসনটি সিপিএম কংগ্রেসকে দেওয়ায় লাভ পাবে বিজেপি।
অনেকে বলছেন, বনগাঁ উত্তর, বনগাঁ দক্ষিণ আর গাইঘাটায় তৃণমূলের যে ঘাটতি হবে, তা একাই পুষিয়ে দেবে স্বরূপনগর। এবারের ভোটে নাকি ডিসাইডিং ফ্যাক্টর বাগদা। এখানে মতুয়া দল আছে প্রায় চারশো। একুশের ভোটে এই আসনেই জয়ী হয়েছিলেন বিজেপির বিশ্বজিৎ দাস। দল পাল্টে তিনিই তৃণমূলের বনগাঁ আসনের প্রার্থী। ভোটে বোঝা যাবে, বিশ্বজিৎকে যোগদান করিয়ে তৃণমূলের লাভ হয়েছে কি না।
বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি অমৃতলাল বিশ্বাসের দাবি, বিশ্বজিৎ দাস তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় বিজেপির কোনও ক্ষতি হয়নি। উল্টে বাগদার মানুষ তাঁকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেবে। ভোটের ফলেই বুঝতে পারবে।
বনগাঁয় সাংগঠনিক বৈঠক সেরে বেরচ্ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি নারায়ণ গোস্বামী। তাঁর দাবি, ‘আগে বিজেপির যে হাওয়া ছিল, তার ছিটেফোঁটাও নেই। সিএএ যে বিজেপির সবচেয়ে বড় ধাপ্পা, সেটা মতুয়ারা বুঝে গিয়েছেন। তাছাড়া আমাদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী তো আছেই।’ তাই উচিত শিক্ষাটা বিশ্বজিৎ দাস পাবে নাকি শান্তনু ঠাকুর, সেটা বিজেপি টের পাবে ৪ জুন।