সৎসঙ্গ ও আধ্যাত্মিক ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠে মানসিক তৃপ্তি। কাজকর্মের ক্ষেত্রে নতুন কোনও যোগাযোগ থেকে উপকৃত ... বিশদ
স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজের মহড়ার জন্য রেড রোড বন্ধ থাকায় মজিদ অবশ্য মহমেডান তাঁবুতে পৌঁছান বেলা এগারোটা নাগাদ। রেড রোডে সাধারণ মানুষের চলাচলের উপর কিছুটা বিধিনিষেধ থাকায় খুব বেশি সমর্থক মজিদকে দেখতে তাঁবুতে উপস্থিত ছিলেন না। কিন্তু মজিদের চোখে সমকালীন সেরা ডিফেন্ডার সুব্রত ভট্টাচার্য মহমেডানের কোচ হওয়ায় আধ ঘণ্টার এই অনুষ্ঠানটি আলাদা মাত্রা পেয়ে যায়। আশির দশকের প্রথম পাঁচ-ছয় বছর মজিদ-সুব্রতর ‘ডুয়েল’ নিয়ে অনেক গল্পই প্রচলিত আছে। সেটা মঙ্গলবার দুজনেই খোলাখুলিভাবে স্বীকারও করলেন।
দীর্ঘ তিন দশক পর দেখা হতেই সুব্রত জড়িয়ে ধরেন মজিদকে। সেই আলিঙ্গনের মধ্যে উষ্ণতা ছিল। মজিদের সামনে মোহন বাগান জনতার হৃদয়ের ছেলে বাবলু ছিলেন অকপট। ইরানি তারকাটির সামনেই সুব্রত বলেন, ‘১৯৮০ সালের ফেড কাপ ফাইনালে ফুটবল মাঠে প্রথমবার মজিদের মুখোমুখি হয়েছিলাম। একটি লুজ বলের জন্য দুইজনেই দৌড় শুরু করি। আমাকে টপকে চলন্ত বলে ফ্লিক করে হাবিবকে বল দিয়েছিল মজিদ। তখনই বুঝেছিলাম আমাকে রীতিমতো বেগ দিতে মজিদ এসেছে কলকাতায়। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে দেখলাম মজিদ আমাকে ‘ঝামেলাবাজ’ বলেছে। সঠিক কথাই বলেছে। ওর ব্যক্তিগত নৈপুণ্য এতটাই বেশি ছিল, আমাকে অনেক ম্যাচেই ওর বিরুদ্ধে শুধুই টাফ নয়, রাফ ফুটবল খেলতে হয়েছে। কিন্তু মজিদের মাথা এতটাই ঠান্ডা ছিল কখনও মাথা গরম করেনি। নিজের উপর এতটাই আত্মবিশ্বাস ছিল কার্ডও সেইভাবে দেখত না। ফুটবলের বেসিক ছিল দারুণ। আউট স্টেপে রিসিভিং ছিল দেখার মতো। অত্যন্ত ফ্যান্সি ফুটবলার। রাফ ট্যাকল করলে আমাকে বলত এটা কী হচ্ছে?’
পাশে বসা মজিদ বাসকরের মুখে তখন অমায়িক হাসি। সুব্রতকে ছোটভাই বলে সম্বোধন করে মজিদ বলেন,‘ঝামেলা করে আমাকে প্ররোচিত করতে চাইত। আমি কখনই সেই প্ররোচনায় পা দিইনি। মহমেডান স্পোর্টিং আমার কাছে সেকেন্ড হোম। এখানে এসে মনে হচ্ছে অনেক দিন পর বাড়িতে ফিরলাম। ১৯৮৭’তে আমি সেইভাবে খেলিনি। তবুও মেসে থাকতে দিয়েছিল এই ক্লাব। আমাদের সময়ে ক্লাবটি এত সাজানো- গোছানো ছিল না। তবে ইস্ট বেঙ্গলের ড্রেসিংরুম প্রশস্ত হলেও মহমেডান ড্রেসিংরুম সেই ছোটই থেকে গিয়েছে।’ মজিদের হাতে স্মারক,শাল তুলে দেন মহমেডান সচিব ও ফুটবল টিমের ম্যানেজার। এক ভক্ত তাঁর হাতে তুলে দিয়েছেন নিজের হাতে আঁকা একটি ছবি। তবে মজিদের এত প্রশংসা করলেও সুব্রত তাঁকে ভারতে খেলা সেরা বিদেশি বলতে নারাজ। এই প্রশ্নে একটু অন্যভাবে তিনি বলেন, ‘খেলার সৌন্দর্যে মজিদই সেরা। তবে সার্বিক কার্যকারিতায় এগিয়ে এমেকা। আর ধারাবাহিকতায় অবশ্যই এগিয়ে ব্যারেটো।’