সংবাদদাতা, তুফানগঞ্জ: উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন বাবার মৃত্যু হয়। সেই শোকের মধ্যেও পরীক্ষায় বসে নজরকাড়া ফল করেছেন চিলাখানা হাইস্কুলের কলা বিভাগের ছাত্র প্রসেনজিৎ বর্মন। তিনি প্রায় ৯২ শতাংশ অর্থাৎ ৪৫৯ নম্বর পেয়েছেন। তাঁর এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে শুরু করে পরিবার ও প্রতিবেশীরা। আগামী দিনে তিনি ভূগোল নিয়ে পড়ে শিক্ষক হতে চান। প্রসেনজিৎ বাংলায় ৯০, ভূগোলে ৮৫, দর্শনে ৯৩, সংস্কৃতে ৯৪, শারীরবিদ্যায় ৯৭ নম্বর পেয়েছেন। 
তুফানগঞ্জ-১ ব্লকের চিলাখানা ১ পঞ্চায়েতের জায়গীর চিলাখানা এলাকার বাসিন্দা প্রসেনজিৎ। মা ও বোনকে নিয়ে অভাবের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর জোগাড়। বাবার মৃত্যুর পর মায়ের সঙ্গে অন্যের জমিতে চাষ করে সামান্য মজুরির টাকায় কোনওরকমে সংসার চলে। প্রসেনজিতের জীবনের লক্ষ্য, শিক্ষক হওয়া। একচিলতে টিনের ছাউনি দেওয়া ঘরে মা ও বোনকে নিয়ে জীবন সংগ্রাম চালাচ্ছেন তিনি। প্রসেনজিৎ বলেন, বাংলা পরীক্ষা দেওয়ার পরই বাবার মৃত্যু হয়। বাবা চেয়েছিলেন জীবনে প্রতিষ্ঠিত হই। ছোট থেকে অভাবকে খুব কাছ থেকে দেখে আসছি। তাই আগামী দিনে শিক্ষক হয়ে সংসারেরর হাল ধরতে চাই। প্রসেনজিতের মা ময়না বর্মন বলেন, চরম দারিদ্রের মধ্যে কী করে ওর উচ্চশিক্ষা হবে, সেটাই আমাকে ভাবাচ্ছে। কোনও সহৃদয় ব্যক্তি বা সংস্থা এগিয়ে এলে ছেলে লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে। 
চিলাখানা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক হারাধন সরকার বলেন, অদম্য ইচ্ছেশক্তি থাকলে যে কোনও কিছুই জয় করা সম্ভব, তা প্রসেনজিৎ করে দেখিয়েছে। স্কুলের প্রত্যেকে ওকে নিয়ে গর্বিত।  ও ছাত্রছাত্রীদের কাছে অনুপ্রেরণা। ওর পড়াশোনার ক্ষেত্রে অর্থ কোনও বাধা হবে না। আমারা প্রত্যেকেই প্রসেনজিতের পাশে রয়েছি।  নিজস্ব চিত্র