পড়ে গিয়ে বা পথ দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্তির যোগ থাকায় সতর্ক হন। কর্মে উন্নতি ও সাফল্যের যোগ। ... বিশদ
সোমবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। মঙ্গলবার, গণনা শুরু হতেই বর্তমান বিদেশ সচিব জেরিমি ক্রমেই পিছিয়ে পড়তে থাকেন। জনসনের ঝুলিতে এসেছে ৯২ হাজার ১৫৩টি ভোট। অন্যদিকে, জেরিমি পেয়েছেন ৪৬ হাজার ৬৫৬টি ভোট। মোট ১ লক্ষ ৫৯ হাজার ৩২০ জন সদস্য তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছিলেন। শতাংশের হিসেব যা প্রায় ৮৭.৪%। গণনার সময় ৫০৯টি ব্যালট বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়। ফলাফল ঘোষণা হতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন প্রাক্তন বিদেশ সচিব এবং লন্ডনের প্রাক্তন মেয়র বরিস। দলীয় সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কোনও এক ব্যক্তি বা দলের একাধিপত্য চলতে পারে না। সময় এবং মানুষ আমাদের (কনজারভেটিভ পার্টিকে) আবার সুযোগ দিয়েছে।
এদিকে, ব্রেক্সিট ইস্যুতে লেজে-গোবরে হয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন টেরিজা মে। তারপর প্রায় একমাস ধরে ভোটাভুটির প্রক্রিয়া চলে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার বিষয়ে দলের মধ্যেই মতানৈক্য হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বেক্সিট সমস্যা সমাধানে বরিস কী পদক্ষেপ নেন, সেদিকেই তাকিয়ে গোটা দেশ। এদিন, ফলাফল প্রকাশের পর নয়া প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইতিহাসের এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আমার বিশ্বাস, আমরা এই সমস্যা থেকে অবশ্যই বেড়িয়ে আসব। সুষ্টুভাবে ব্রেক্সিট সম্পন্ন করা, দেশকে একজোট করা এবং লেবার পার্টির জেরেমি করবিয়ানকে পরাস্ত করাই এখন মূল লক্ষ্য।
নেতা নির্বাচনের প্রথম দফা থেকে এগিয়ে ছিলেন বরিস। চূড়ান্ত ভোটাভুটির আগেও একাধিক সমীক্ষায় তাঁকেই এগিয়ে রাখা হয়েছিল। হবু প্রধানমন্ত্রীকে ঘিরে তৈরি হওয়া একাধিক বিতর্কও ফলাফলে বিশেষ প্রভাব ফেলতে পারেনি। প্রাপ্ত ভোটেই যা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসার পর একাধিক বাউন্সার সামলাতে হবে বরিসকে। যার মধ্যে সবচেয়ে কঠিন হতে চলেছে বেক্সিট ইস্যু। ৩১ অক্টোবরের আগে তিনি কোন জাদু-বলে সমাধানসূত্র বের করেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়েছে। দলীয় কোন্দল সামলানোও তাঁর কাছে কড়া চ্যালেঞ্জ। বরিসের প্রধানমন্ত্রী পদে বসা নিশ্চিত হতেই একাধিক মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। চ্যান্সেলর ফিলিপ হ্যামন্ড, আইন সচিব ডেভিড গৌকে, বিদেশ মন্ত্রকের অ্যালান ডানকানের মতো গুরুত্বপূর্ণ নাম রয়েছে এই তালিকায়।
বুধবারই বাকিংহ্যাম প্যালেসে গিয়ে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র তুলে দেবেন টেরিজা। এরপর, রানি নব-নির্বাচিত নেতাকে ডেকে সরকার গড়ার জন্য আহ্বান জানাবেন। সরকার গঠনের ক্ষেত্রেও বেশ কিছু চমক দিতে পারেন নব নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রীতি প্যাটেল, ঋষি সুনাক সহ বেশ কিছু মুখ গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে চলেছেন বলে খবর। বরিসের বিপুল জয়ের পর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে প্রীতি জানান, কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ও নতুন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশের ভবিষ্যতের জন্য নতুন দিক উন্মোচিত হবে। পাশাপাশি, ভারতের মতো বন্ধু দেশগুলির সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে বলেও আশাপ্রকাশ করেছেন তিনি।
নির্বাচনী প্রচারে ভারতের সঙ্গে ‘নতুন ও সংশোধিত’ বাণিজ্যিক চুক্তির ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বরিস। এই লক্ষ্য ছুঁতে একদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তাঁর ভালো সম্পর্ককে কাজে লাগাতে চাইছেন তিনি। চলতি মাসের শুরুতে একটি চিঠিতে সেকথা স্পষ্ট করে উল্লেখ করেছিলেন হবু প্রধানমন্ত্রী। অন্যদিকে, নিজেকে ‘ভারতের জামাই’ পরিচয় দিয়ে বন্ধু দেশের মন পেতে চেষ্টার কোনও কসুর করেননি তিনি। প্রসঙ্গত, বরিসের প্রাক্তন স্ত্রী মারিনা হুইলারের মা ভারতীয়। সেই সম্পর্কও টেনে আনছেন তিনি। নয়াদিল্লির সঙ্গে নয়া বাণিজ্যনীতি প্রসঙ্গে টোরি সাংসদ প্রীতি প্যাটেল বলেন, এই ব্যাপারে বরিস প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাঁর নেতৃত্বে দুই দেশের সম্পর্ক অন্য মাত্রায় পৌঁছে যাবে।