প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ
ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েনের বাইরেও রয়েছে রাজনৈতিক হাত ছাড়াছাড়ি। সিপিএম বা বামেদের সঙ্গে এই কেন্দ্রে আইএসএফের ‘ভোটচুক্তি’ সফল হয়নি। ফলে নৌশাদ সিদ্দিকির দলের প্রার্থী শাহরিয়ার মল্লিকের (বাপি) সঙ্গে ভোট ভাগাভাগি করতে হবে দীপ্সিতাকে। তাই এই কেন্দ্রে ভোট কাটাকাটিতে নবীন ও প্রবীণ আইনজীবীর লড়াই, আবার সিপিএমের সঙ্গে আইএসএফের লড়াই জমে উঠেছে। তবে, অগোচরে যেটা থেকে যাচ্ছে, তা হল কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের গুরুত্ব প্রমাণের লড়াই। দলের একটি অংশ না চাইলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছাতেই ফের টিকিট পেয়েছেন তিনি। গত বছরের লাখখানেক ভোটের ব্যবধান এবার বাড়াতে না পারলেও সেটা ধরে রাখারই তাঁর কাছে চ্যালেঞ্জ।
মঙ্গলবার শ্রীরামপুরে পুরনো সৈনিক কল্যাণের জন্য প্রচারে এসেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। এতেই আত্মবিশ্বাস চড়চড় করে বেড়েছে কল্যাণের। সেখানে জেলা নেতৃত্ব, পুরসভার চেয়ারম্যানদের উপস্থিতি ও জনসমাগম দেখে তিনি বুঝেছেন, ওই সভা তাঁকে মাইলেজ দিতে বাধ্য। শ্রীরামপুরে গঙ্গাদর্শন আবাসনের ফ্ল্যাটে বসেই খোঁজখবর নিচ্ছিলেন জমায়েতের। সভায় যাওয়ার আগে বললেন, ‘শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভার মধ্যে ডোমজুড় তাঁকে সবচেয়ে বেশি লিড দেবে। আর চাপ রয়েছে চাঁপদানিতে। কারণ চাঁপদানিতে বিজেপি’র ভোট রয়েছে। উত্তরপাড়া বিধানসভা এলাকায় সিপিএমের ভোট থাকলেও, তা রয়েছে পকেট এলাকায়। তাই তেমন সমস্যা হবে না’। উত্তরপাড়ার কথা উঠতেই স্বাভাবিকভাবে চলে আসে বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকের প্রসঙ্গ। তাঁকে প্রচার গাড়ি থেকে কেন নেমে যেতে বলেছিলেন? এই প্রসঙ্গ উঠতেই ফের আক্রমণাত্মক তিনি। বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে দেখুন, কাঞ্চনকে নিয়ে গ্রামেগঞ্জে কী প্রতিক্রিয়া। আমি শিল্পীদের সম্মান করি। কেউ একাধিক বিয়ে করতেই পারেন। তবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর কার্যকলাপ নিয়ে মহিলাদের আপত্তি আছে। তাছাড়া, তিনি নিজের এলাকায় প্রচার করছেন না। শুধু প্রার্থীর সঙ্গে ঘুরছেন।’ তাঁর এই অবস্থানকে সমর্থন করেছেন দলে তাঁর পাল্টা শিবিরের নেতারাও। উত্তরপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান দিলীপ যাদব প্রচুর খাটছেন। তাই কাঞ্চন মল্লিকের অভাব পুষিয়ে যাবে বলে তাঁর মত। তবে কল্যাণ ঘনিষ্ঠদের অনেকেই মনে করছেন, কাঞ্চনের প্রতি তাঁর বিরূপ মনোভাবের পিছনে ব্যক্তিগত কারণও রয়েছে। কবিরের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তাঁর মেয়েকে সন্তান নিয়ে যে মনোকষ্টে ভুগতে হয়েছে, সেটা তাঁর মাথায় ছিল কাঞ্চনের ক্ষেত্রেও। তবে বিজেপি কবীরকে তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী করায় এনিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি কল্যাণ। জিতে এলে প্রাচীন শ্রীরামপুর কলেজকে প্রেসিডেন্সির মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করতে চান তিনি। নিজের কেন্দ্রে একটি মেডিক্যাল কলেজেরও স্বপ্ন রয়েছে তাঁর। কবীর অবশ্য বেশ আক্রমণাত্মক। তাঁর বক্তব্য, তিনি নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহদের প্রতিনিধি। তাই অন্য কেউ ফ্যাক্টর নয়। জগৎবল্লভপুরে প্রচারের ফাঁকে তিনি দাবি করেন, মোদির সৈনিক হয়েই দেড় লক্ষের বেশি ব্যবধানে জিতবেন। প্রাক্তন শ্বশুর সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, যিনি নিজের স্ত্রীকে সম্মান করেন না, তাঁর সম্পর্কে আর কীই বা বলব!
এদিকে, দীপ্সিতাও আত্মবিশ্বাসী। বাঁকড়ায় সভা শেষে ফোনে ধরা গিয়েছিল তাঁকে। বলেন, মাহেশে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়দের নিয়ে প্রচার সভার পরিকল্পনা চলছে। প্রশ্ন ছিল, উল্টোদিকে হেভিওয়েট প্রার্থী। চিন্তা হচ্ছে? দীপ্সিতার সাফ জবাব, প্রার্থী হেভিওয়েট হন কাজের নিরিখে। মানুষ যাঁকে চায় তিনিই হেভিওয়েট।