শরীর ও স্বাস্থ্য

তেল-ঝাল-মশলার কী কী গুণ?
ডাঃ সুবলকুমার মাইতি

ভারতীয় রান্নায় প্রায় একই উপাদান, কিন্তু হরেকরকম পদ্ধতিতে এবং তেল-ঝাল-মশলার কমবেশিতে নানা স্বাদের নানা রকমের পদ তৈরি হয়। এমনভাবে সারা বিশ্বের মানুষ কত রকমেরই না রান্না করে খান। সব রকমের খাদ্য সবাই কিন্তু খেতে পারেন না। তার কারণ সাত্ম্য আহার ও অসাত্ম্য আহার। এক-একটি অঞ্চলে বা রাজ্যে এক এক রকমের খাদ্য দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক ধারা অনুযায়ী খেয়ে আসছেন। সেই পরিবারের প্রায় সকলে সহজেই খেতে পারে এবং শরীর সহ্য করে নেয়। এই আহারটিকে বলা হয় সাত্ম্য আহার। এই ধরনের আহার দেশে, অঞ্চলে বেশি প্রসিদ্ধ। অন্য কোনও স্থানের আহার কারও ভালো লাগতে পারে, মাঝে মাঝে খেতেও পারি, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা বেশিদিন খেতে পারেন না। বহু মানুষকে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে হয় এবং জীবনের বেশিরভাগ সময়টা কাটাতে হয়, কেউ কেউ একেবারেই থেকে যান। এঁদেরকে এদেশে-ওদেশের খাদ্য মিশিয়ে রান্না করতে হয়, আর সেটাই ছেলেমেয়েদের কাছে সাত্ম্য আহার হয়ে ওঠে। এর বিপরীত ধর্মী আহারটিকে বলা হয় অসাত্ম্য আহার।
যে কোনও রান্নায় তেল-ঘি, ঝাল, মশলার কমবেশি প্রয়োজন হয়। প্রথমে তেলটিকে ধরা যাক। রান্নায় ব্যবহৃত তেলগুলির মধ্যে কোনও একটিকে স্বাস্থ্যসম্মত তেল বলা যায় না, এমনকী অলিভ অয়েলকেও নয়। একজন মানুষ প্রতিদিন ১৫-২০ গ্রাম তেল রান্নায় ব্যবহার করতে পারেন। এই সীমাবদ্ধতার কারণ হল, যে কোনও তেলের ক্ষতিকর প্রভাব থাকে। সেই ক্ষতিকর দিকগুলোর বিচার করে দেখা দরকার। এছাড়া তেলটিকে কীভাবে ব্যবহার করা দরকার, সেটাও জানতে হবে।
মোটামুটিভাবে যেসব ভোজ্য তেল ব্যবহার করি, সেগুলিকে মূলত ২ ভাগে ভাগ করা যায়। (১) সর্ষের তেল, (২) সাদা তেল।
সর্ষের তেলের মধ্যে পড়ে রেপসিড তেল/ ক্যানোলা তেল। সাদা তেলের মধ্যে পড়ছে রাইস ব্র্যান অয়েল (ধানের তুষের তেল), সূর্যমুখীর তেল, সয়াবিন তেল, অলিভ অয়েল, চীনা বাদামের তেল প্রভৃতি। এছাড়া তিল তেল ও নারকেল তেল রয়েছে।
তেলগুলিকে নিয়ে খুব গভীরে চিন্তাভাবনার কোনও অবকাশ এক্ষেত্রে নেই।
সর্ষের তেল, ক্যানোলা তেল, রেপসিড তেলগুলিতে ইরুসিক অ্যাসিডের কমবেশি উপস্থিতি থাকায় সামান্য মাত্রায় (১৫-২০ গ্রাম) ব্যবহার করা যেতে পারে। ইরুসিক অ্যাসিডের মাত্রা কমানোর জন্য ক্যানোলা তেলের সৃষ্টি হলেও রিফাইন করতে গিয়ে উচ্চমাত্রায় তাপের প্রয়োজন হয়, যার ফলে ক্ষতিকর ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরি হয়ে যায়। পচন নিবারক হিসেবে টিবিএইচ এবং স্বচ্ছ, বর্ণহীন ও গন্ধহীন করার জন্য মিশ্রিত রাসায়নিক যৌগগুলি স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর। একথাটি শুধু ক্যানোলো তেলের পক্ষে প্রযোজ্য নয়, যে কোনও রিফাইন তেলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। চুলচেরা বিশ্লেষণ করে তেল খাওয়া সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে সম্ভব নয়। তাই ১৫-২০ গ্রাম তেল একজন সারাদিনে ব্যবহার করতে পারেন। ১৫ গ্রামের মধ্যে রাখতে পারলে সবচেয়ে ভালো।
আদর্শ ভোজ্য তেল নির্বাচনের ক্ষেত্রে তেলের স্মোকিং পয়েন্ট সম্বন্ধে একটা ধারণা থাকা চাই। যে উত্তাপে ভোজ্য তেলের ফ্যাট ভেঙে গিয়ে বিষাক্ত পদার্থ তৈরি হয়, তাকেই স্মোকিং পয়েন্ট বলা হয়। ২০০ বা তার বেশি সেলসিয়াস স্মোকিং পয়েন্ট হলে তেলটি ভালোভাবে গরম করে রান্না করা যেতে পারে। অতিরিক্ত রিফাইন তেল ব্যবহার করা উচিত নয়, তার স্মোকিং পয়েন্ট বেশি হলেও।
আগেকার দিনে ৪:১ অনুপাতে সর্ষে ও তিল বা তিসি মিশিয়ে অর্থাৎ ৪ কিলো সর্ষের সঙ্গে ১ কিলো তিল বা তিসি মিশিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে ঘানিতে ভাঙানো হতো। ভাঙানোর পর বারবার ছেঁকে নেওয়া হতো। এই তেলটি টিনে বা জারে রেখে পরপর কয়েকটা দিন রোদে বসিয়ে ফেনামুক্ত করতে হয়। ফেনামুক্ত হলে খুব ধীরে ধীরে ছেঁকে নিতে হয়। এই তেল এক বছর পর্যন্ত থাকে। ছাঁকার পর পরিত্যক্ত মোটা তেল দিয়ে তখনকার দিনে প্রদীপ জ্বালানো হতো, কাচ্চি ঘানির তেল মোটামুটি ভালো বলা যেতে পারে। কিন্তু তাতে ঝাঁজ বা বর্ণ ঠিক রাখার জন্য কিছু কিছু রাসায়নিক মেশানো হয়। অতএব অতি অল্প মাত্রায় খাওয়া ভালো।
যে কোনও ভোজ্য তেল ব্যবহার করুন না কেন, লাল বা কালো করে ভেজে কোনও কিছুই খাবেন না। মাছে হলুদ না দিয়ে ভাজবেন। হলুদ দিয়ে ভাজলে হলুদটি পুড়ে গিয়ে তেলটিকে বিষাক্ত করে দেয়। অতএব মাছ ভাজার পর বাকি তেলটি ফেলে দিতে হবে। সেজন্য কেবল নুন মিশিয়ে মাছ ভাজবেন।
ভোজ্য তেল হিসেবে ১ নম্বর হল সর্ষে তেল। এবং তার মাত্রা হবে ১৫ গ্রাম, না পারলে ২০ গ্রাম রোজ মাথাপিছু। পোড়া তেল ব্যবহার করবেন না। রান্নার পর কাঁচা তেল কোনও ক্ষেত্রেই দেবেন না। নিমন্ত্রণ বাড়িতে যতই কম তেল ব্যবহার করুক না কেন, ৪০-৪৫ গ্রাম মাথাপিছু খরচ করে থাকে। এজন্য নিমন্ত্রণ বাড়িতে কম পরিমাণে সামান্য কিছু খাবেন। সর্ষে তেলের স্মোকিং পয়েন্ট হল ২৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। হলুদ ছাড়া মাছ ছাঁকা তেলে ভাজলে তারপরে বাকি তেলটিকে আর একবার ব্যবহার করতে পারেন।
সর্ষে বীজ থেকে রেপসিড বীজ, তা থেকে ক্যানোলা বীজ, জিনের পরিবর্তন ঘটিয়ে করা হয়েছে। তবে এই তিনটি তেলে কমবেশি ইরুসিক অ্যাসিড থাকে। সেজন্য ১৫-২০ গ্রামের মধ্যে ব্যবহার করলে বিশেষ ক্ষতি হয় না। ম্যানুয়াল রিফাইন করে নিতে পারলে খুব ভালো হয়। তবে তা সংগ্রহ করতে হবে কাচ্চি ঘানি থেকে ভার্জিন সর্ষে তেল। খরচ একটু বেশি পড়বে। পাঁচমেশালি যে কোনও তেল শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর।
২ নং ভোজ্য তেল হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন রাইস ব্র্যান তেল, এটির স্মোকিং পয়েন্ট ২৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একমাত্র এই তেলটিতেই ওরিজিনল যৌগটি থাকে, অন্য কোনও তেলে থাকে না। এর সঙ্গে টোকোফেরোল ও টোকোট্রানল থাকায় দেহ কোষের ক্ষয় কমায়, প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করে এবং হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে। কিন্তু ওমেগা ৩ এবং ৬- এর অনুপাত ১:২০ থাকায় সমস্যা দেখা দিতে পারে। ১৫-২০ গ্রাম মাত্রায় খেলে কোনও ক্ষতি নেই। গুণের দিক থেকে সর্ষে তেলের পর এটিকে ভোজ্য তেল হিসেবে রাখা যেতে পারে।
ভোজ্য তেল হিসেবে রেপসিড/ ক্যানোলা তেলটিকে ৩ নং হিসেবে রাখতে পারেন। এর মাত্রা সেই ১৫-২০ গ্রামের মধ্যে থাকা চাই। কারণ কমবেশি ইরুসিক অ্যাসিড এই দু’টিতে পাওয়া যায়।
৪ নং ভোজ্য তেল হিসেবে সয়াবিনকে রাখা যেতে পারে, তবে তা নিয়মিত খাবেন না। এটির স্মোকিং পয়েন্ট ২৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলেও মাঝেমধ্যে খাওয়া যেতে পারে।
চীনা বাদামের তেল, সূর্যমুখীর তেল আদর্শ ভোজ্য তেল নয়। চীনা বাদামের তেল ভোজ্য তেল হিসেবে ১০ মিলির বেশি খেতে নেই। আর সূর্যমুখী তেলের স্মোকিং পয়েন্ট মাত্র ১০৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস হওয়ায় সামান্য গরমে ভেঙে যায়। তার থেকে সূর্যমুখীর বীজ ভেজে খাওয়া যেতে পারে। অলিভ অয়েল সবদিক থেকে ভালো হলেও লাগাতার খাওয়া যায় না। দীর্ঘ ব্যবহারে অরুচি আসার সম্ভাবনা। তারপর অসম্ভব দাম। এছাড়া তিল, তিসি, নারকেল, পাম, কুসুম তেলও ভোজ্য তেল হিসেবে কমবেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আমার মতে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ মাসে সর্ষে তেল ২৫০ গ্রাম, রাইস ব্র্যান তেল ২০০ গ্রাম এবং ঘি ৫০ গ্রাম ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া মাঝে মাঝে সয়াবিন তেলে ভাজা লুচি বা অন্য কিছু অল্প মাত্রায় খেতে পারেন। পোড়া তেল খাবেন না। কোনও কিছু লাল-কালো করে ভেজে খাওয়া ঠিক নয়।
যে তেলই খান না কেন, পরিমাণ যত কম ব্যবহার করবেন, ততই ভালো থাকবেন।

তেলের পর এবার ঝাল নিয়ে বলা যাক: 
প্রাচীন ভারতে ঝাল বলতে গোলমরিচ বোঝাত, যা আহার্য ও ভেষজ হিসেবে সর্বজনবিদিত। লঙ্কার এদেশে আগমন শ’চারেক বছরের বেশি নয়। যে ১০টি মুখ্য মশলা আমাদের শরীরে চর্বি জমতে দেয় না, তার মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ হল মরিচ। শরীরকে টক্সিনমুক্ত করতে পারে এই সুগন্ধিত মশলাটি। আগেকার দিনে জিরে-মরিচবাটা দিয়ে রান্না করা হতো। এখনও হয়, তবে লঙ্কা এসে যাওয়ায় রান্নায় তার প্রচলন হয়েছে বেশি। যাঁরা যেভাবে ঝাল খেতে অভ্যস্ত, তাঁরা সেভাবেই খেয়ে থাকেন, কেউ কম কেউ বেশি। মরিচ একই রকমের। তা থেকে গুঁড়ো তৈরি করে রাখা হয়। প্রয়োজনমতো ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
কিন্তু লঙ্কা বহু প্রকারের। এক একটির ঝাল বেশি। কোনওটি ঘিয়ে স্বাদের। লঙ্কা ও মরিচ যদিও মশলার মধ্যে পড়ে, তবুও এ দু’টির রান্নায় বিশেষ গুরুত্ব থাকায় আলাদা করে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। লঙ্কা আর সর্ষে বাটার তরকারি বাঙালিরা খেতে ওস্তাদ। কিন্তু সর্ষে বাটা কম খাবেন। বাটার পর ছেঁকে জলটি নেবেন। ফোড়ন হিসেবে ব্যবহার করুন।
রান্নায় কাঁচা লঙ্কা অধিক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। প্রয়োজনমতো শুকনো লঙ্কা ব্যবহার করা হয়। ভেজেও খাওয়া যায়। শুকনো লঙ্কা ব্যবহারের আগে সেটিকে ভেঙে দেখে নেবেন, ভেতরে কোনও ছাতা অথবা ফাঙ্গাস হয়েছে কি না। যদি হয়ে থাকে, তাহলে সব লঙ্কাকে আগুনে পুড়িয়ে ফেলুন। ওর মধ্যে তখন মারাত্মক টক্সিন (আফলা টক্সিন) হয়ে গেছে, যা খেলে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এছাড়া লিভার, কিডনি প্রভৃতিরও ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। মিঠা লঙ্কা/ সাধারণ লঙ্কা বাজারে পাওয়া যায়। অন্য কোনও লঙ্কাকে শুকনো করলে এভাবে হয় না। তাছাড়া বাড়িতে তৈরি করা শুকনো লঙ্কা বহু রকমের হয়ে থাকে। সেগুলি বাজারে পাওয়া যায় না। মরিচের মতো লঙ্কারও বহু গুণ আছে। রান্নায় ব্যবহৃত হয় সুস্বাদু করার জন্য। 

এবার কয়েকটি মশলার কথা জানাই—
১) হলুদ: প্রায় প্রতিটি রান্নায় হলুদের প্রয়োজন হয়। আগে গোটা হলুদ শিলে পিষে বেটে রান্না করা হতো। এখন গুঁড়ো মশলার ব্যবহার। গুঁড়োটিকে জলে মিশিয়ে বাটার মতো তৈরি করে নেওয়া যেত, আমরা তাও করি না। যার ফলে স্বাদের তারতম্য হয়ে থাকে। বাজারে যত রকমের গুঁড়ো হলুদ পাওয়া যায়, একটার সঙ্গে আর একটার মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। হলুদ গুঁড়োয় নানা ধরনের দ্রব্য ভেজাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ভালো হলুদ খেতে গেলে গোটা হলুদ কিনে ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে টুকরো টুকরো করে মিক্সিতে গুঁড়ো করে নিতে পারেন। অথবা হলুদ পেষাই মেশিনে পিষিয়ে নিয়ে ৫-৬ মাসের তৈরি করে রেখে দিন। হলুদে কোলেস্টেরল নেই। কারকুমিন নামে যে শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট পাওয়া যায়, তা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ফুলকপির সঙ্গে হলুদ গুঁড়ো দিয়ে রান্না তরকারি প্রস্টেট ক্যান্সার এবং পেঁয়াজ রসুনের সঙ্গে হলুদের ব্যবহার কোলন ক্যান্সার প্রতিহত করে। কারকুমিনের বাহাদুরি হল—মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপকে প্রতিহত করে অবসাদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।
কারকুমিন হল তৈল সম্পৃক্ত যৌগ, তাই হালকা গরম তেলে হলুদবাটা দিয়ে সামান্য একটু নেড়েচেড়ে অন্যান্য দ্রব্য দ্রুত মিশিয়ে দিতে হয়, যাতে হলুদ তেলে পুড়ে না যায়। অথবা লঙ্কা-পেঁয়াজ-ফোড়ন তেলে হালকা ভেজে আনাজ দিয়ে দিন, একটু নাড়াচাড়া করলে গরম তেলটি আনাজে সমানভাবে মিশে যাবে, তারপর হলুদের গুঁড়ো বা বাটা ও লবণ দিয়ে সামান্য সময় ভালোভাবে নাড়ুন এবং জল দিয়ে ঢাকা দিন। এভাবে রান্না করলে হলুদের সঙ্গে তেলের মিলন ঘটে গিয়ে কারকুমিন তেলের মাধ্যমে সমস্ত তরকারিতে মিশে গেল। হলুদ ও নুন জলে ফুলকপি ভাপিয়ে জল ফেলে দিয়ে আদা-পেঁয়াজ অন্যান্য গরম মশলা দিয়ে রান্না করুন। হলুদের জলে দ্রবণীয় যৌগগুলি জলের মাধ্যমে পেয়ে যাই। হলুদ যদি তেলে পুড়ে যায়, তা ফেলে দিয়ে নতুন করে রান্না করুন।
হলুদের অনেক গুণ। কাঁচা হলুদ খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নিষেধ আছে। তবে পরিমাণমতো হলুদ রান্নায় ব্যবহার করাই যেতে পারে।
২) পেঁয়াজ ও রসুন: এ দু’টি কন্দ জাতীয় মশলা এবং ওষধিগুণ সম্পন্ন। রসুন সব তরকারিতে ব্যবহৃত না হলেও পেঁয়াজ প্রায় সব তরকারিতে ব্যবহার করা হয়। পেঁয়াজ ও রসুন একত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ দু’টির সঙ্গে আদা ব্যবহার করা উচিত নয়। মাছের রান্নায় রসুন নিষিদ্ধ, সেখানে পেঁয়াজ ও আদা ব্যবহার করতে পারেন। মাংসের রান্নায় আদা ও পেঁয়াজ শুধু, রসুন বা পেঁয়াজ-রসুন এবং গরম মশলা ব্যবহার করতে পারেন।
পেঁয়াজ এবং রসুনের ওষধিগুণ প্রচুর। রসুন খুব সাবধানে ব্যবহার করতে হয়। ২-৪ কোয়া প্রত্যহ খাওয়া যায়। মাংস ও ডিমের রান্নায় রসুন ব্যবহার করুন, আদা দেবেন না। কাঁচা দুধের সঙ্গে রসুন খাবেন না। গরম করা দুধ-সহ খেতে পারেন।
পেঁয়াজ স্বাভাবিক অবস্থাতে থেকে যেতে পারে। কিন্তু রসুনকে শুকনো ও অন্ধকার জায়গায় রাখতে হবে, যেখানে বাতাসের চলাচল ভালো থাকে। মাটি থেকে রসুন তোলার পর খোলা জায়গায় রাখতে নেই, যেখানে রোদের তাপ লাগে বা কখনও কখনও বৃষ্টিতে ভিজে যেতে পারে। কেনার সময় একটা কোয়া ছাড়িয়ে মুখে দেবেন, ঝাঁঝ ও তাপ বেশি হলে কিনবেন। শুকনো ও নেতিয়ে পড়া রসুন নেবেন না। রসুন রক্তকে পাতলা রেখে বহু রোগ সরায়, তাই যাঁরা হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত, তাঁরা সাবধানে ব্যবহার করবেন।
বাতাসের চলাফেরা ঠিক থাকলে এবং ঠান্ডা ও শুকনো জায়গায় পেঁয়াজ ভালো থাকে। পেঁয়াজ ও রসুন সংরক্ষণের দোষে তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়।
যে কোনও ভাজাভাজিতে, বিশেষ করে মাছ ভাজার পর তার উপর পেঁয়াজের বাটা পুরু করে লাগিয়ে পুনরায় ভেজে নেওয়া হয়। ঠিকমতো ভাজা না হলে বিকট গন্ধে খাওয়া যায় না। আবার বেশি ভাজলে কালো হয়ে যায়, তখন সেটিও খাওয়ার অযোগ্য হয়ে পড়ে। কোনও ভাজাভুজিতে পেঁয়াজের বাটা না ব্যবহার করলেই ভালো।
৩) আদা: আদা এবং আদাকে শুকিয়ে রাখলে যে শুঁঠ তৈরি হয়, তা খাদ্যে যেমন ব্যবহার করা হয়, তেমনই ওষুধেও ব্যবহার হয়ে থাকে। আদা ও শুঁঠের গুণ অপরিসীম। নানা প্রকার রান্নায় আদা ও শুঁঠের ব্যবহার দেখা যায়। আদা হজমকারক, রুচিকর, কফ কাশি নাশক হওয়ায় কাঁচাই খাওয়া যায়।
আদা বেটে মশলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে আদার সঙ্গে রসুন একত্রে ব্যবহার করবেন না। কাঁচা কলার তরকারিতে আদা ব্যবহার না করার জন্য আদা-কাঁচকলা সম্পর্ক কথাটির সৃষ্টি হয়েছে। তরকারি বা ঝোল রান্নার পর শুঁঠ চূর্ণ প্রয়োজনমতো মিশিয়ে দিলে তরকারিটি সুগন্ধিত ও সুস্বাদু হয়। 
৪) ফোড়ন: রান্না সুস্বাদু করার জন্য আমরা তেল বা ঘিয়ে কিছু মশলা ভেজে সেটির সঙ্গে মিশিয়ে দিই। একেই বলে ফোড়ন। ফোড়নের মশলার গুণ ও সুবাস তখন রান্নার দ্রব্যের মধ্যে সঞ্চারিত হয়ে যায়, ভোজন সুস্বাদু ও তৃপ্তিদায়ক হয়ে ওঠে। এই ভেজে নেওয়াকে বলা হয় সন্তলন। সন্তলন বা সম্বরার মশলা অনেক—সরষে, লঙ্কা, তেজপাতা, কারিপাতা, ছোট এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ, জিরা, কালোজিরা, মৌরি, মেথি, রাঁধুনি, মরিচ প্রভৃতি।
এগুলি বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হলেও পাঁচফোড়নটি প্রায় সব রান্নায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ৫টি দ্রব্য হল—জিরা, কালোজিরা, মৌরি, মেথি, রাঁধুনি (সম্বরা) এগুলিকে একসঙ্গে তেলে সম্বরা দেওয়া হয় বলেই এটিকে পাঁচফোড়ন বলে। এগুলি একসঙ্গে যেমন ব্যবহৃত হয়, তেমনই পছন্দমতো এক বা একাধিক দ্রব্য নিয়ে ফোড়ন দেওয়া যায়।
পাঁচফোড়নের ৫টি দ্রব্য ফোড়ন হিসেবে ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো। গুঁড়ো করে, বেটে বা ভেজে গুঁড়ো করে খাওয়া কোনও কোনও ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু ফোড়নে কোনও সমস্যা নেই।
আর একটা কথা—রান্নাঘর স্যাঁতসেঁতে ও পোকামাকড় মুক্ত হওয়া চাই। ভালোভাবে আলোবাতাস খেলতে পারলে আরও ভালো।
যে কোনও মশলা রান্নাঘরের গরম আবহাওয়ায় নষ্ট হতে পারে। আবার স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে ছাতা পড়ে ফাঙ্গাসের উপদ্রব বাড়তে পারে। এসবই ক্ষতিকর। ছাতাপড়া মশলা ফেলে দিয়ে পাত্রটি গরম জলে ধুয়ে শুকিয়ে রাখুন। কাচের শিশিতে মশলা রাখা সবচেয়ে নিরাপদ।
এক্ষেত্রে একটি কাজ করা যেতে পারে। তা হল—প্রত্যেকটি মশলা কেনার পর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে, কোনও কোনওটি জলে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে মাঝারি ধরনের কাচের জারে রাখুন। মশলাগুলি একটি বা দুটি ট্রেতে রেখে শোওয়ার ঘরের খাটের তলায় রাখুন। যে জায়গাটিকে ঠান্ডা ও শুকনো এবং অন্ধকার মনে হবে, সেখানে রাখুন। রোজ সকালে প্রয়োজনমতো বের করে নেবেন। রান্নাঘরে তেল, নুন, হলুদ, লঙ্কা, আদা, পেঁয়াজ, রসুন প্রভৃতি রাখতে পারেন। রান্নাঘর সর্বদা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা দরকার। জিরা, কালোজিরা, মৌরি, মেথি, রাঁধুনি, ধনে, জোয়ান, বড় এলাচ, ছোট এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ, মরিচ, জায়ফল, জয়ত্রী, তেজপাতা, জাফরান, সর্ষে প্রভৃতি কাচের জারে বা শিশিতে রাখতে হবে। কারণ এই দ্রব্যগুলিতে একপ্রকার উদ্বায়ী তেল থাকে, যা ৩০° সেলসিয়াসের বেশি তাপে উড়ে গিয়ে নষ্ট হয়ে যায়।
রান্নাঘরের সমস্ত দ্রব্যই কাচের বা স্টিলের হওয়া দরকার। প্লাস্টিকের দ্রব্যাদি একদিনে তো ফেলে দেওয়া সম্ভব নয়। ধীরে ধীরে বাতিল করুন। তা না হলে প্লাস্টিকের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম কণা আমাদের শরীরে ঢুকে ভয়ঙ্কর ক্ষতি করতে পারে। এমনকী মেয়েদের গর্ভাশয়েও এটির উপস্থিতি ধরা পড়েছে। অতএব এই মাইক্রোপ্লাসিটিকের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে পরবর্তী প্রজন্মের জন্ম হবে। নানা রোগে আক্রান্ত হবে। জলের বোতল কাচের, স্টিলের বা তামার করুন। কোনওপ্রকার প্লাস্টিকের বা কাগজের তৈরি পাত্রে খাবার বা পানীয় খাবেন না। চা বাইরে খেলে মাটির বা কাচের পাত্রে খান। কলাপাতা সবচেয়ে ভালো। তা না হলে শালপাতা শ্রেয়। ভালো ভালো রান্না খাওয়ার দোষে শরীর অসুস্থ হয়ে পড়বে, এটা ঠিক নয়। গরমের দিনে মাটির পাত্রে জল রেখে খান। তা না হলে প্লাস্টিক বোতলে জল ভরে ফ্রিজে ঠান্ডা করে খাওয়ার যে পদ্ধতি চলছে, তা একদিন না একদিন বন্ধ করতে হবে। কাচের পাত্রে ফ্রিজে জল রাখুন।
৫) জিরে: জিরা-মরিচ শিলে বেটে চারা পোনার হালকা ঝোল খাওয়ার সেসব দিন আর নেই। এটি খাদ্যকে জীর্ণ করে নিজেই জীর্ণ হয়ে যায় বলে এর নাম জীরক বা জিরা।
জিরা ফোড়ন হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বেটেও ব্যবহার হয়ে থাকে। আবার জিরা ভেজে গুঁড়ো করে বিশেষ বিশেষ রান্নার পদে ব্যবহৃত হয়।
৬) কালোজিরা: কেবল কালোজিরা ফোড়ন দিয়ে সুস্বাদু রান্না করা যায়। আবার পাঁচফোড়নের সঙ্গে থাকা কালোজিরাও ব্যবহার করা যায়। বাজারে যেসব কালোজিরা পাওয়া যায়, তাতে বহু ক্ষেত্রে রং মেশানো থাকে। অপুষ্ট কালোজিরার সঙ্গে ভালো কালোজিরা মিশিয়ে তাতে রং ও তেল জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে কখনও কখনও বাজারে আসে। কালোজিরা কেনার পর আধ ঘণ্টা জলে ভিজিয়ে রেখে ভালোভাবে চটকে ধুয়ে নেবেন। রং থাকলে কালোমতো জল হবে। তখন আর একবার ধুয়ে রোদে শুকিয়ে রাখবেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় জানা গেছে কালোজিরার অফুরন্ত শক্তির পরিচয়। এটি ওষুধ হিসেবে ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকে। রান্নায় তো ব্যবহার হয়ই। গর্ভাবস্থায়, গর্ভধারণের ইচ্ছা থাকলে রান্নায় ছাড়া, বেশি কালোজিরা ওষুধ হিসেবে ব্যবহার না করাই ভালো।
৭) মৌরি: মৌরি একটি সুস্বাদু মশলা। এককভাবে যেমন ব্যবহার করা যায়, তেমনই পাঁচফোড়নের সঙ্গেও ব্যবহার করা হয়। এটির ওষুধিগুণ অসাধারণ। মৌরি ভিজানো জল (রাতে ভিজিয়ে সকালে ছেঁকে) অনেকেই খেয়ে থাকেন। এটি হজমকারক, অরুচি-পেটফাঁপা-বদহজম-কোষ্ঠবদ্ধতা প্রভৃতি নাশক। মুখশুদ্ধি হিসেবে ধনে-মৌরি হালকা করে ভেজে রেখে দু’বেলা ভাত খাওয়ার পর খেতে পারেন।
৮) মেথি: মেথির দানা এককভাবে এবং পাঁচফোড়নের সঙ্গে রান্নায় ব্যবহৃত হয়। মেথিশাকও উপাদেয় খাদ্য। নানাবিধ রোগে মেথির দানা ও গাছ ওষধি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সাধারণ মানুষ জানেন মেথি ভেজানো জল ডায়াবেটিস রোগে ব্যবহার করা হয়। মেথির গুঁড়ো খাবেন না। গুঁড়ো করে খেতে চাইলে শোধন করে খেতে হবে। মেথি ও মেথিশাক শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দিতে পারে।
গর্ভাবস্থায় মেথি ভিজানো জল খাবেন না। রান্নায় ব্যবহৃত সামান্য মেথি খাওয়া যেতে পারে। মেথির গুঁড়ো অনেক আচার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। সরাসরি গুঁড়ো করবেন না। মেথি শোধন করার পর শুকিয়ে গুঁড়ো করে ব্যবহার করুন।
৯) রাঁধুনি: কেবলমাত্র রাঁধুনি ফোড়ন দিয়ে সুস্বাদু রান্না করা যায়। যেহেতু এটি তেলে সম্বরা হিসাবে ব্যবহৃত হয়, সেজন্য মেদিনীপুর ও ২৪ পরগণা অঞ্চলে এটিকে সোমরা/ সমরা, সম্বরা প্রভৃতি নামে পরিচিত। বাজারে বনজোয়ান নামে একটি ধূসর রঙের দানা আসে, সেটিও রাঁধুনি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আসল রাঁধুনি কালো লম্বাটে, হাতে ডলে নিলে সুগন্ধ ছড়ায়। এই গাছের পাতা ধনে পাতার মতো ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন প্রকার শাকের ভাজায় রাঁধুনি পাতার ব্যবহার রান্নাটিকে খুবই সুস্বাদু করে তোলে।
১০) ধনে: ধনে ফোড়ন হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। বহুগুণের অধিকারী ধনের দানা (ধনে) এবং ধনেপাতা। রান্নায় ও স্যালাডে ব্যবহৃত হয় ধনেপাতা। ধনেবাটা ঝোল ফোটার সময় উপর থেকে ছেড়ে দিতে হবে। তাতে রান্নাটি সুগন্ধিত ও রুচিকর হয়ে ওঠে। এটি হজমকারক, রুচিকর ও বায়ুনাশক হওয়ায় রান্নায় এভাবে ব্যবহার করতে পারেন। রাতে ধনে (৫-১০ গ্রাম) এক গ্লাস জলে ভিজিয়ে সকালে ছেঁকে জলটিকে খালিপেটে খাবেন। ধনের দানাগুঁড়ো ভেজে রাখবেন, মুখশুদ্ধি হিসেবে খাবেন। ধনের অনেক গুণ, অনেক রোগের উপশম করে থাকে। সেজন্য ধনে ও ধনেপাতা পরিমাণমতো রান্নায় নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন।
১১) তেজপাতা/ কারিপাতা: এই দুটি পাতা ভারতীয় হলেও তেজপাতাটি উত্তর ভারতে এবং কারিপাতাটি দক্ষিণ ভারতে অধিক ব্যবহৃত হয়ে থাকে। দু’টি পাতার ওষধিগুণ বিপুল পরিমাণের। সারা ভারতের লোকে চানাচুর খেয়ে থাকেন। চানাচুরকে মুখরোচক, সুস্বাদু ও হজমকারক করার জন্য কারিপাতা ভেজে মেশানো হয়। দক্ষিণ ভারতে কারিপাতার ব্যাপক ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। আর আমাদের বাংলায় প্রায় তরকারিতে তেজপাতা ব্যবহার করা হয়। এই দু’টি পাতা বিনা দ্বিধায় রান্নায় ব্যবহার করুন। সুস্থ থাকবেন।
১২) এলাচ: এলাচ ২ রকমের। বড় ও ছোট। ছোট এলাচের দাম বেশি। বড় এলাচের দাম তার প্রায় অর্ধেক হলেও গুণগতমান বেশি। মাছ-মাংস-ডিমের ঝোলে এবং অনেক রকম নিরামিষ রান্নায় ছোট এলাচের ব্যবহার রান্নাটিকে সুগন্ধিত ও সুস্বাদু করে তোলে।
শুধু তাই নয় রোগ নিরাময়ে এ দু’টির কার্যকারিতা অপরিসীম। আগেই বলা হয়েছে মশলা কীভাবে রাখা উচিত।
১৩) দারচিনি: একটি উত্তম মশলা। প্রায় বেশিরভাগ রান্নায় ব্যবহার করা যেতে পারে। এককভাবে যেমন ব্যবহার করা যায়, তেমনই গরম মশলার সঙ্গে মিশিয়ে একসঙ্গে ব্যবহৃত হয়। ভেজাল দারচিনিতে ভরে গেছে বাজার। চীন থেকে সেটি আসে। তার ছাল মোটা ও রক্তবর্ণ। কেনার সময় অতি পাতলা ও বাদামি রঙের কাঠ কিনবেন।
১৪) লবঙ্গ: ব্যঞ্জন সুস্বাদু করতে এর জুড়ি মেলা ভার। লবঙ্গে ১৬-১৮ শতাংশ তেল পাওয়া যায়। এই তেল খুবই উপকারী। বাজারে যেসব লবঙ্গ পাই, তার বেশিরভাগ থেকে তেল বের করে নেওয়া হয়। মুখশুদ্ধি হিসেবে প্রতিবারে ১টি করে লবঙ্গ খেলে দাঁতের সমস্যা সহজে হয় না।
১৫) গরম মশলা: ছোট এলাচ, দারচিনি ও লবঙ্গকে বোঝায়। রান্নার বিভিন্ন অবস্থায় বিভিন্নভাবে এগুলির ব্যবহার রাঁধুনির জাত চিনিয়ে দেয়। গরম মশলা ফুলকপি ও বাঁধাকপির তরকারিকে সুস্বাদু করে তোলে। মাংসের রান্নায় গরম মশলার সঙ্গে জায়ফল ও জয়ত্রী মিশিয়ে দেওয়া হয়। বিরিয়ানিতে তো বটেই। দামি রান্নায় জাফরান বা কুমকুম মেশানো হয়ে থাকে। জাফরান সবচেয়ে দামি মশলা। 
লেখক: ভারত সরকারের আয়ুর্বেদ গবেষণা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসা বিজ্ঞানী, বনৌষধি গবেষক আয়ুর্বেদ চিকিৎসক।
10d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

কর্মের প্রসার ও উপার্জন বৃদ্ধির যোগ। গৃহ পরিবেশে চাপা উত্তেজনা। পেশার প্রসার।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.০৭ টাকা৮৪.৮১ টাকা
পাউন্ড১০৮.৬৫ টাকা১১২.২০ টাকা
ইউরো৯১.৫৭ টাকা৯৪.৭৬ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
17th     September,   2024
দিন পঞ্জিকা